সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

২২ বছর পর ফেনীতে বাবার পরিবারের খোঁজ পেলেন পাকিস্তানি তরুণী

ফেনী প্রতিনিধি

২২ বছর পর ফেনীতে বাবার পরিবারের খোঁজ পেলেন পাকিস্তানি তরুণী

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি তরুণী তাহরিম রিদা (২২)। মা ও ভাইবোনসহ বসবাস করেন পাকিস্তানে। তার সঙ্গে থাকেন না তার বাবা মুহাম্মদ কাসিম আজাদ। বাবাকে ছাড়া নিদারুণ কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছিল জীবন। প্রতিটি মুহূর্তে তার শূন্যতা উপলব্ধি করত পুরো পরিবার। তিনি জানতেন না কে তার বাবা, কী তার পরিচয় ও কোথায় তার বাড়ি। দীর্ঘ ২২ বছর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে তিনি খোঁজ পেলেন বাবা ও বাবার পরিবারের।

জানা যায়, তাহরিম রিদা তার ব্যক্তিগত আইডি রিদা গ্রুপে গত বৃহস্পতিবার একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন ‘আসসালামু আলাইকুম, আমি এখানে আমার বাবার পরিবার খুঁজতে এসেছি।’

তারপর লিখেন, আমার বাবা ২০০৪ সালে পাকিস্তান এসে আমার মাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের ফেনী থেকে এসেছিলেন, তার নাম মুহাম্মদ কাসিম আজাদ, দাদার নাম তফাজ্জল হক। যেখানে সম্ভবত আমার বাবার শৈশব অতিবাহিত হয়েছিল। আমি আমার বাবার পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি জানি না। গ্রুপে চাচার একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেন, ‘আবু সাদিক আমার বাবার বড় ভাই। যদি কেউ এই পরিবারকে চেনেন তাহলে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়। সৌভাগ্যবশত স্ট্যাটাস দেওয়ার ২৩ মিনিটের মধ্যে বাবার পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয় রিদার। জানা যায়, রিদার বাবার বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞার ফাজিলের ঘাটে। পরিচয়ের পর তার সঙ্গে কথা হয় ফুফু ও ফুফাত বোনের ছেলের সঙ্গেও। তাহরিম জানান, কলেজে বা বাইরে গেলে সবাই তার বাবার পরিচয় জানতে চায়। যা নিয়ে তাকে অনেকেই বিরক্ত করে। পিতৃপরিচয় না থাকায় তাকে ২২ বছর অবহেলিত হতে হয়েছে। মানুষের বিভিন্ন কথা শুনতে হয়েছে। তিনি জানান, তার বাবা পাকিস্তান থাকাকালীন তার মাকে (মেহবুবা) বিয়ে করেন। পাকিস্তানে তার মাকে রেখে দেশে আসার পর অসুস্থ হয়ে মারা যান। এরপর তার পরিবারের সঙ্গে তার দাদার পরিবারের কোনো সম্পর্ক থাকেনি। হয়নি  পরিচয়পর্বও। তাহরিম রিদা জানান, তার বাবা বাংলাদেশ থেকে তার মাকে চিঠি পাঠাতেন। চিঠিতে উল্লিখিত ঠিকানা সংগ্রহ করে তাহরিম ফেনী নামক শব্দটি পান। পরে গুগলে সার্চ দিয়ে জানতে পারেন ফেনী একটি জেলা। পরবর্তীতে ফেনী সার্চ করে একটি এফবি গ্রুপের সন্ধান পান। এরপর যাবতীয় বিবরণ ফেসবুকে ইংরেজিতে পোস্ট করেন। সেটি অনুবাদ করে বাংলায় পোস্ট দেন গ্রুপটির অ্যাডমিন। এরপর দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ, স্থানীয় জন-প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটসদের মাধ্যমে তাহরিমের বাবার পরিবারের কাছে পৌঁছে যায় বার্তা। উভয় পরিবার একে অপরের সঙ্গে দীর্ঘ ২২ বছর বছর পর পরিচিত হতে পেরে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

সর্বশেষ খবর