সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

রিকশায় ঘুরলেন কেনেডি পরিবারের সদস্যরা

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে এডওয়ার্ড কেনেডির স্মৃতিচারণা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

রিকশায় ঘুরলেন কেনেডি পরিবারের সদস্যরা

বাংলাদেশ সফরের প্রথম দিনেই সপরিবারে রিকশায় করে পুরান ঢাকা ঘুরেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা এডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র। কেনেডি জুনিয়রের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তার স্ত্রী  ড. ক্যাথরিন কিকি কেনেডি, মেয়ে ড. কাইলি কেনেডি এবং ছেলে টেডি কেনেডি। পরে কেনেডি জুনিয়র এবং তার পরিবারের তিন সদস্য গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেনেডি সিনিয়রকে ‘বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু বলে অভিহিত করেন। তিনি নিক্সন প্রশাসন পাকিস্তানের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সমর্থনে প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির অসামান্য অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনা টেড কেনেডি জুনিয়র, তার ছেলে, মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেনেডি সিনিয়রের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যাডওয়ার্ড মুর কেনেডিও ১৯৭১ সালে ভারতের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি প্রয়াত সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড মুর কেনেডির ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর মার্কিন সিনেটে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশিদের ওপর গণহত্যার বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থানের কথা স্মরণ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সিনেটর এম কেনেডি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রে তার কণ্ঠস্বর তুলে ধরেন এবং জনমত গড়ে তোলেন। সাক্ষাতে টেড কেনেডি জুনিয়র বলেন, তার পরিবার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার ও সমতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ঢাকায় প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করে এমন সংগঠনগুলোর সঙ্গে দেখা করবেন এবং রাজশাহী ও বগুড়া সফর করবেন বলেও জানান।

 

অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মাদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সকালে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়র ও তার পরিবারকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে বলা হয়, সফরের প্রথম দিনেই তারা রিকশায় করে পুরান ঢাকার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি প্রত্যক্ষ করেন এবং ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লায় যাত্রাবিরতি নেন। দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, কেনেডি পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে পুরান ঢাকা ও ঐতিহাসিক স্থাপনার বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং ছবি তোলেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আট দিনের সফরে গত শনিবার কেনেডি পরিবারের সদস্যরা ঢাকা আসেন। এ সফরে তারা দেশের বেশ কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করবেন। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস জানায়, ২৯ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর কেনেডি পরিবারের সদস্যরা ঢাকা সফর করবেন। তারা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মার্কিন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা বিনিময় কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পিকারস প্রোগ্রামের পৃষ্ঠপোষকতায় জুনিয়র অ্যাডওয়ার্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বক্তৃতা দেবেন। সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের একজন সমর্থক হিসেবে তার পিতার ভূমিকার কথা তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ সাবেক সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডির রোপণ করা বটগাছটিও পরিদর্শন করবেন তিনি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা এ আইনজীবী ঢাকার অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড দ্য আর্টসে প্রতিবন্ধী অধিকারের ওপরও একটি বক্তৃতা দেবেন। তারা বগুড়া ও রাজশাহী সফর করবেন। বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন কেনেডি পরিবারের সদস্যরা।

সর্বশেষ খবর