মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদেশি কমলায় সম্ভাবনা

ফরিদপুরে সমতলেই বাম্পার ফলন

ফরিদপুর প্রতিনিধি

বিদেশি কমলায় সম্ভাবনা

পাহাড়ি এলাকার কমলা সমতলে চাষ করে বাজিমাত করেছেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাঁপুর ইউনিয়নের টুংরাকান্দি গ্রামের এক কৃষক। বর্তমানে ওই কৃষকের বাগানে শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় হলদে রঙের কমলা। কমলা বাগান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। জেলায় এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে বৃহৎ আকারে কমলা বাগান করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইলিয়াস কাজী। ইলিয়াস কাজী জানান, তিনি ও তার বন্ধু উজ্জ্বল কাজী ইউটিউব দেখে উদ্যোগ নেন কমলা বাগান করার। উজ্জ্বল কাজীর সহযোগিতায় তিন বছর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি নার্সারি থেকে আনা হয় ১০০টি কমলার চারা। সেগুলো ৫৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। নানা জনের পরামর্শ ও ইউটিউব দেখে গাছের পরিচর্যা করতে থাকেন। গত বছর বেশ কয়েকটি কমলা গাছে ফল হলেও তা থাকেনি। ফলে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন ইলিয়াস। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি তিনি। স্ত্রীকে নিয়ে কমলা গাছের পরিচর্যায় মন দেন। এ বছর গাছগুলোতে ব্যাপক হারে কমলার দেখা মেলে।

সরেজমিন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক গাছে প্রচুর পরিমাণে কমলা ধরেছে। নুয়ে পড়েছে অনেক গাছ। অনেকেই ছুটে আসছেন বাগানে। কেউ কিনে নিচ্ছেন কেউ বা কমলা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। ফরিদপুর শহর থেকে ছুটে আসা টুটুল, আজিজুল হকসহ বেশ কয়েকজন জানান, তারা কোনোদিন কমলা বাগান দেখেননি। টুংরাকান্দি গ্রামে কমলার বাগানটির কথা শুনে তারা এসেছেন। ফরিদপুরে কমলার চাষ হয় এবং এত পরিমাণ কমলা গাছে ধরে তাদের যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না।

টুংরাকান্দি গ্রামের শিক্ষিক যুবক আলিফ আল হেলাল বলেন, কমলা বাগান দেখে তিনি নিজেই এ বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, অনেকেই কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নিজেও এ বাগান থেকে কমলা কিনে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন।

ইলিয়াস কাজী জানান, এ বছর বাগান থেকে ৫০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। আরও ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন। আগামী বছর ২ থেকে ৩ লাখ টাকার কমলা বিক্রির আশা করছেন। তিনি জানান, তার বাগানে চায়না ও দার্জিলিং জাতের কমলা রয়েছে। ফরিদপুর, মাগুরা, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসেন বাগানে। এখান থেকে অনেকেই কমলা কিনে নিয়ে তা বাজারে বিক্রি করেন। বাগান থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কমলা বিক্রি করেন তিনি।

স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে বেশ কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছিলেন বলে জানান ইলিয়াস। নিজের পৈতৃক অল্পকিছু সম্পত্তি থাকলেও পরের জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করেই সংসার চলত। বর্তমানে বন্ধু উজ্জ্বল কাজীর সহযোগিতায় তিনি এখন কিছুটা হলেও স্বাবলম্বী। আগামী বছর অধিক জমিতে কমলার বাগান করার আগ্রহ দেখান ইলিয়াস। সরকারের সহযোগিতা পেলে বৃহৎ আকারে কমলা বাগান করবেন বলে জানান।

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর