মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫

প্রতিদিন ডেস্ক

বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া কুমিল্লার সুমাইয়া আক্তার সুইটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাহিদুল হোসেন খান মিরাজ জিপিএ-৫ পেয়েছে।

কুমিল্লা : বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল কুমিল্লার সুমাইয়া আক্তার সুইটি। গতকাল প্রকাশিত ফলাফলে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সুমাইয়া কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। বাংলা দ্বিতীয় পরীক্ষার আগের রাতে সুমাইয়ার বাবা আবুল কাশেম মারা যান। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সুমাইয়া সবার বড়। আবুল কাশেম ছিলেন গাড়িচালক। কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘সুমাইয়া খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী। সে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেটেরও প্রতিনিধি ছিল। ভালো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সে একজন ভালো সংগঠকও।’ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিস ঘোষ বলেন, ‘ওইদিন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। জানতে পারি মেয়েটির বাবা মারা গেছেন। তখন হলের শিক্ষকদের বলেছিলাম মেয়েটি যেন নার্ভাস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে। সুমাইয়ার ফলাফলে আমি খুবই আনন্দিত।’ সুমাইয়া বলে, ‘বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন শিক্ষক হই। আমি বাবার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা চালাব।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আখাউড়ায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যাওয়া মাহিদুল হোসেন খান মিরাজ জিপিএ-৫ পেয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর মিরাজের বাবা মোতাহার হোসেন খান মারা যান। এ সময় এসএসসি পরীক্ষা চলছিল। বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই গণিত পরীক্ষায় অংশ নেয় মিরাজ। পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পর বাবার লাশ দাফন করা হয়। মিরাজের বাবা মোতাহার হোসেন খান আখাউড়া উপজেলার গ্রিন ভ্যালি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। তাদের বাড়ি আখাউড়া পৌর এলাকার দেবগ্রামে। মিরাজের মামা আরিফুল ইসলাম জানান, মিরাজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলী মামার বাড়ি থেকে অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। মিরাজের মা তাসলিমা বেগম ছেলের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘ওর বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।’

সর্বশেষ খবর