সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বগুড়ায় সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শেরপুরে আদিবাসীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর ২০ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন- আম্বইল গ্রামের নুরুন্নবী সরকার, একই গ্রামের আবু সাঈদ, ফজলুল হক, জুয়েল সরকার, নুর হোসেন, আবদুল বারিক, জসিম উদ্দিন সরকার, হায়দার আলী, মিলন সরকার, ফারুক হোসেন, আসফদৌল্লা খান, টুটুল মিয়া, নাদু সিং, প্রদীপ সিং, জাম্পু মেম্বার, জিরেন সিং, শান্ত সিং, রফিক মেম্বার, সন্তোষ সিং, গজেন সিং, নয়ন সিং, অর্জন সিং, কৃষ্ণ সিং, পরী সিং, সুকুমার সিং, সোহানা সিং ও দিলীপ সিং। এ ছাড়া অন্যান্য আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ায় তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল মৌজায় শত বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় আদিবাসী ও চার গ্রামবাসীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এসব জমির দখলকে কেন্দ্র করে আদালতে একাধিক মামলাও বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে বিবদমান ৪ বিঘা জমিতে সোলায়মান আলী মাস্টার নিজের মালিকানা দাবি করে বসেন। গতকাল সকালে তিনি লোকজন নিয়ে ওই জমিতে বোরো ধানের চারা লাগাতে শুরু করেন। এ খবর পেয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের বাধা দেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় ভয়াবহ সংঘর্ষ চলে। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

ঘটনাটি সম্পর্কে সোলায়মান আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আদিবাসী নামে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খলদের অত্যাচারে আম্বইলসহ আশপাশের চার গ্রামের সাধারণ নিরীহ মানুষ অতিষ্ঠ। এসব এলাকার ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি সরকারি খাস সম্পত্তি বলে তারা নিজেরা জবরদখল করেছেন। আমারও ১৫ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছিলেন তারা। এ জমিতে বোরো চারা লাগাতে গেলে কমল সিং ও সন্তোশ সিং তাদের লোকজন নিয়ে তীর-ধনুকসহ দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সর্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। সেই সঙ্গে তারা বেধড়ক পিটিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তিকে গুরুতর আহত করেছেন। অন্যদিকে আদিবাসী পরিষদের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ সিং বলেন, ‘তিন-চার দিন ধরে আমাদের মালিকানাধীন জমি হাফিজুর রহমান, সোলায়মান আলী ও স্বপন মিয়া শতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে জোরপূর্বক দখলে নিতে শুরু করেন। জমিতে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ এবং চারা লাগানো শুরু করেন। এতে বাধা দিলে তারা আমাদের ২০ থেকে ৩০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় বাজারে আদিবাসীদের দোকানঘরগুলোও ভাঙচুর করেছেন। এমনকি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসার সময়ও হামলা চালানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। আইনের আশ্রয় নিতে থানায়ও যাওয়া যাচ্ছে না।’ শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর