নড়াইলের বড়কুলা গ্রামে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বউমেলা জমেছিল গতকাল। মূল মেলার (মাঘী পূর্ণিমা মেলা) পরদিন অনুষ্ঠিত হয়েছে এ বউমেলা। পুরুষবিহীন বউ মেলায় বিভিন্ন বয়সী নারী ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করেছেন।
নারীদের জন্য এমন মেলা হয়ে আসছে নড়াইল সদর উপজেলার ঐতিহাসিক টেংরাখালী প্রাঙ্গণে। এলাকার বউসহ নারী-শিশু দলে দলে আসেন এ মেলায়। দোকানি ছাড়া কোনো পুরুষ মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হয় না মেলা চত্বরে। এ কারণে সাচ্ছন্দ্যে নিজের পছন্দ মতো জিনিস কিনতে পারেন নারীরা। মেলা উপলক্ষে এলাকায় চলে নানা আনন্দ উৎসব। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিবছরের মতো এবারও টেংরাখালী ডোবের প্রায় ২৫ বিঘা পতিত জমিতে মাঘী পূর্ণিমা উৎসবে বিশাল মেলা বসে। এ মেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে শেষদিনে গতকাল সকাল থেকে বউমেলা শুরু হয়। দুই দিনব্যাপী মেলার প্রথম দিনে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশ নেন। দ্বিতীয় দিনের সকাল থেকে ‘বউমেলা’ শুরু হয়। মেলা উপলক্ষে আশপাশের গ্রামগুলোর বাড়ি বাড়ি শুরু হয় উৎসব। মেলাকে কেন্দ্র করে জামাইদের দাওয়াত করে আনা হয় শ্বশুরবাড়িতে। প্রতিটি বাড়িতে বউ-জামাই বেড়াতে আসেন। মেলা উপলক্ষে এলাকায় চলে নানান আনন্দ উৎসব। সে অনুযায়ী এবারও চিত্রা নদীর উপশাখা তীরে টেংরাখালী ডোবে (বিল) অনুষ্ঠিত এ মেলায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি অশি^নী কুমার মল্লিক জানান, শত বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী মাঘী পূর্ণিমা মেলার পাশাপাশি বউমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এলাকার নারীদের সম্মান রক্ষা এবং নির্বিঘ্নে কেনা কাটার সুবিধার কথা চিন্তা করে এ মেলার আয়োজন করা হয়। প্রথম দিনে দিনভর সর্বসাধারণের মেলা চলার পর শেষদিনে ‘বউমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনের এ মেলায় প্রায় কোটি টাকার বেচাকেনা হয়েছে।