মিছিলে না যাওয়ায় রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের ৩০ জন সাধারণ ছাত্রকে পিটিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এরপর তাদের নির্যাতনও করা হয়। বুধবার রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের ই ও বি ব্লকে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির দুই সদস্যও আহত হয়েছেন। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাসিক দত্তের নেতৃত্বে মারধরের এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন আহত ছাত্ররা।
নির্যাতনের শিকার কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব ও শরীফুল ইসলাম। তারা রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির (আরসিআরইউ) সদস্য। হামলাকারীরা হলেন- শাহরুখ, রাফি, ইমন, তরিকুল, রাজু, হাসান, আহসান। তারা রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্তের অনুসারী। জানা গেছে, ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মিছিল-মিটিং ও দলীয় কর্মসূচিতে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। যেতে না চাইলে মারধরসহ হয়রানির শিকার হতে হয়। নির্যাতন করা হয় টর্চার সেলে। অসুস্থ থাকলেও ছাড় পান না। মারধরের শিকার নাজমুস সাকিব বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন সময় তাদের দলীয় প্রোগ্রামে জোর করে নিয়ে যান। বুধবার বিকালে ছাত্রলীগের একটা প্রোগ্রামে যেতে হয়। সেখান থেকে ছাত্রলীগ নেতা রাফিকে মেডিকেলে যাওয়ার কথা বললে হোস্টেল ছেড়ে দিতে বলেন। তাকে মানিয়ে আমি মেডিকেলে যাই এবং সন্ধ্যা ৬টায় হোস্টেলে ফিরলে ছাত্রলীগের শাহরুখ, রাজু, রাফি, হাসানসহ আট-দশ জন আমার রুমে ঢুকে মারধর করতে থাকেন। মোবাইল ফোনসহ দামি জিনিসপত্র কেড়ে নেন।
একপর্যায়ে সব শিক্ষার্থীকে ব্লকে আটকে রেখে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন, অনেককে মারধরও করেন। যদি কারও কাছে কিছু বলি তাহলে আরও ভয়ানক কিছু করবেন। আরেক ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যায় রুমে ঢুকে নিউজ লিখছিলাম। এ সময় রাশিক দত্তের কর্মী শাহরুখ রুমে ঢুকে অতর্কিত মারতে থাকেন। সাংবাদিক পরিচয় দিলে আরও মারতে থাকেন। তার সঙ্গে আরও ছেলেরা এসে মেরে রুম থেকে বের করে দেন ও ধাক্কাতে ধাক্কাতে অন্য ব্লকে নিয়ে যান। সেখানে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে দেখি, যাদের আটকে রেখেছেন। পরে সবাইকে জোর করে নিয়ে যান প্রোগ্রামে। রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমার ছেলেরা এ ঘটনা করেছে। তবে আর এমন হবে না, তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে নিয়েছি। নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ঘটনা শুনে আমি বিব্রত। এর আগে আমরাও ছিলাম, এ রকম ঘটনা কখনো ঘটেনি।