সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পদ্মায় ট্রেনে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

♦ কাজ শেষ হবে আগস্টে ♦ সেপ্টেম্বরে পুরোদমে চালানোর লক্ষ্য ♦ মূল সেতুর ওপর ট্রায়াল কাল ♦ যশোর ও নীলফামারী রুটে ঈদে ট্রেন চলবে পদ্মা রেলসেতুর কোচ দিয়ে

আকতারুজ্জামান

পদ্মায় ট্রেনে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের কাজ ইতোমধ্যে ৯১ শতাংশ শেষ হয়েছে। জুনের মধ্যে এ অংশের কাজ শেষ হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া প্রান্তের অগ্রগতি এখন ৭২ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ভাঙ্গা থেকে যশোরের কাজ শেষ হয়েছে ৬৮ ভাগ। সবমিলে সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপনের সার্বিক অগ্রগতি এখন ৭৪ ভাগ। আগামী আগস্টের মধ্যে রেল সংযোগ স্থাপনের সব কাজ শেষ করবে সরকার। সেপ্টেম্বরে শুরু হবে রেল চলাচল। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পদ্মার মূল রেল সেতুর ওপর ট্রায়াল ট্রেন পরিচালনা করা হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত সেতু অতিক্রম করে এই ট্রায়াল ট্রেন উদ্বোধন করবেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। রেল সংযোগ প্রকল্পে ট্রেন চলাচলের জন্য ইতোমধ্যে ৪৫টি কোচ চীন থেকে দেশে এসে পৌঁছেছে। এসব কোচের কয়েকটি দিয়ে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদযাত্রায় পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন পরিচালনা করা হবে। নীলফামারীর চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ও যশোরগামী বেনাপোল এক্সপ্রেসে এসব কোচ প্রতিস্থাপন করা হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্র জানায়, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশে ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটারের পুরোটাই প্রস্তুত করা হয়েছে। এ অংশে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে ১৩টি। বর্তমানে স্টেশন ইয়ার্ডে লাইন স্থাপন, সিগন্যালিং কার্যক্রম, স্টেশন তৈরিসহ বেশ কিছু কার্যক্রম চলছে। এগুলো জুনের মধ্যে শেষ হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া অংশে ৩৯ দশমিক ৬৩ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটারে রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ১৫টি ব্রিজের মধ্যে শেষ হয়েছে ১৩টির কাজ। তুলনামূলক অগ্রগতি কম ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের। এখানে ১৬৮টি ছোটখাটো ব্রিজ ও কালভার্টের মধ্যে ১৬১টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসাইন গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশে পদ্মা সেতুর ওপর রেললাইন স্থাপন এ প্রকল্পে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই লাইন স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের কাজ শেষ হয়েছে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশে ৮২ কিলোমিটারেই ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এ জন্য আগস্টেই সব কার্যক্রম শেষ করা হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে রেল চলাচল শুরু হবে আশা করি। তিনি বলেন, মূল পদ্মা ব্রিজে ৩০ কিলোমিটার এলাকায় কোনো পাথর থাকবে না, এসব এলাকায় ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। বাকি অংশে পাথর থাকবে। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, পদ্মা সেতুর ওপরে রেললাইন স্থাপন বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, এটি ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত সেতু পার হয়ে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রায়াল করব আমরা। প্রকল্পসূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। গত ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর