বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

উন্নয়ন ইস্যুই বড় চ্যালেঞ্জ

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার কাজ চলছে। সড়ক উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে আরও প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার কাজ পাইপলাইনে আছে। কিন্তু সময় মতো উন্নয়ন কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ড্রেন উঁচু করায় নির্মিত ড্রেনের তুলনায় বাসাবাড়ি নিচে পড়ে গেছে। ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে সেখানে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। ভোগান্তি নিরসনে চলমান এসব উন্নয়ন কাজ দ্রুত শেষ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

এদিকে সিটি নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো মেয়র পদে ভোটের মাঠে নামছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ জুন খুলনা সিটির ভোট গ্রহণ। তালুকদার আবদুল খালেককে মেয়র প্রার্থী মনোনীত করায় খুলনা নগর আওয়ামী লীগ উজ্জীবিত। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেকের সামনে এবার বড় চ্যালেঞ্জ চলমান এ উন্নয়ন কাজ দ্রুত শেষ করা।

তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, খুলনার সড়ক-ড্রেনেজ উন্নয়নে যেসব কাজ চলছে, সেগুলো শেষ করা আমার প্রধান দায়িত্ব। এই কাজ শেষ হওয়ার পর উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কী কী প্রয়োজন নির্বাচনের পর তা চিহ্নিত করা হবে এবং এসব বাস্তবায়নে যা যা প্রয়োজন তা করা হবে। তিনি বলেন, খুলনাকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। করোনা মহামারির কারণে উন্নয়ন কাজ কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও বর্তমানে দ্রুত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।

তবে উন্নয়ন কাজে নগরবাসীর চলাচলে কিছুটা বিঘ্নের সৃষ্টি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে মেয়র বলেন, চলমান কাজ সম্পন্ন হলে খুলনা একটি আধুনিক শহরে পরিণত হবে। তিনি বলেন, খুলনার দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যাবে। খুলনা পরিচ্ছন্ন ও তিলোত্তমা নগরী হবে। নগরবাসীর প্রতি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, খুলনার উন্নয়নে নগরবাসীরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে খুলনা শহরকে কাক্সিক্ষত উন্নয়নের লক্ষ্যে নেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বিগত দিনে একমাত্র নৌকায় ভোট দিয়েই মানুষের উন্নয়ন হয়েছে। এ কারণে কেসিসি এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অন্যদিকে নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল বলেন, উন্নয়নে এক সংস্থার সঙ্গে অন্য সংস্থার সমন্বয় না থাকায় খুলনায় উন্নয়ন কাজ জনভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। শহরের মধ্যে চলাচল করা যায় না। রাস্তাঘাটের বিপর্যস্ত পরিস্থিতি। আমরা চাই পরিকল্পিত ও আধুনিক একটা শহর। কিন্তু খুলনা সিটির ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। অনেক জায়গায় ড্রেনের পানি সরে না। রাস্তায় ফেলে রাখা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে মানুষ চলাচল করতে পারে না। তিনি পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য হাতপাখা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু পান ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুজ্জাম্মিল হক ১৪ হাজার ৩৬৩ ভোট, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান (লাঙ্গল) ১০৭২ এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিজানুর রহমান ৫৩৪ ভোট পান। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবার সিটি নির্বাচনে তাদের প্রার্থী বদল করেছে।

সর্বশেষ খবর