বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাতে পিকআপ ভ্যান নিয়ে ডাকাতি করত ওরা

আলী আজম

রাজধানীর মালিবাগে স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) কর্মরত এক নারী পুলিশ কনস্টেবল গত ১২ মে ভোরে ভিভিআইপি ডিউটির জন্য বাসা থেকে রিকশায় বের হন। তিনি অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনের মোড়ে পৌঁছামাত্র পেছন থেকে একটি হলুদ ও নীল রঙের পিকআপভ্যান তার রিকশাটিকে চাপ দেয়। পরে পিকআপভ্যান থেকে দুজন নেমে তার হাত ধরে এবং অন্যজন গলায় চাকু ধরে ভয়ভীতি দেখায়। পরে ওই নারীর গলায় থাকা সোনার চেইন ও ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। ভ্যানিটি ব্যাগের ভিতরে ৫ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন ও আইডি   কার্ড ছিল। ওই ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। চক্রটির সন্ধান পেতে একে একে যাচাই করা হয় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা ঘেঁটে দেখার পর কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে রাজধানীর মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- সোহেল, আক্তার ওরফে সোহরাব, আবির হোসেন ওরফে রাসেল ও মো. রনি। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত দেশি বিভিন্ন অস্ত্র, পিকআপভ্যান, লুণ্ঠিত টাকা, চারটি স্মার্ট মোবাইল ফোন ও তিনটি বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ডাকাত চক্রটি রাত হলেই ঢাকা মহানগরীতে পিকআপ ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়ত। এক স্থান থেকে ডাকাতি করে দ্রুত আরেক স্থানে যেত। নির্জন স্থানে কাউকে পেলেই অস্ত্র ঠেকিয়ে তার সর্বস্ব লুটে নিত। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চক্রটি ঢাকার পথেঘাটে, অলিগলিতে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ডাকাতি ও ছিনতাই করত। ছিনতাই করা পিকআপভ্যান দিয়েই ডাকাতি করত চক্রটি। ডিসি হায়াত আরও বলেন, গত ১২ মে এসবির এক নারী কনস্টেবল বাসা থেকে ডিউটি করার জন্য বের হওয়ার পর ছিনতাইয়ের শিকার হন। তার কাছে থেকে মোবাইল, সোনার চেইন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় চক্রটি।

এ ঘটনায় নারী কনস্টেবল পল্টন থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় তদন্তে নেমে চক্রটির সন্ধান পাই। তবে আমরা এটাকে ছিনতাই না বলে ডাকাতি বলব, কারণ দুজনের বেশি হলে সেটা দস্যুতা। তারা দুজন। একজন হাতে চাপাতি ধরে সেই নারী কনস্টেবলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে থাকা সর্বস্ব লুটে নিয়ে চলে যায়। এর জন্য অপরাধীদের ধরতে শতাধিক সিসি ক্যামেরা যাচাই-বাছাই শেষে ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। পরে গ্রুপটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। এই চক্রের কাছ থেকে জানতে পারি, ১২ মে এক দিনে চক্রটি রাজারবাগসহ রাজধানীর চার স্থানে ডাকাতি করে। এই কাজে যে পিকআপটি ব্যবহার করা হয়েছিল সেটিও ডাকাতি করা। পিকআপটি কোথা থেকে ডাকাতি করা হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। নগরীতে যে এলাকায় পুলিশের টহল থাকে না ডাকাতির জন্য তারা সেসব স্থান বেছে নেয়। এরা সবাই মাদকাসক্ত ও দুর্র্ধর্ষ। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার চারজন ছাড়া আরও তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। করোনার সময় মোহাম্মদপুর ও খিলগাঁওয়ে দুটি ওষুধের দোকানে ডাকাতি করে চক্রটি।

সর্বশেষ খবর