শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবার লড়াই খুলনা বরিশালে

প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় প্রার্থীরা, জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সবাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা ও বরিশাল

এবার লড়াই খুলনা বরিশালে

প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রচারণায় নেমেছেন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে নগরীর বয়রা নূরনগর এলাকায় স্থাপিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন। চার মেয়র প্রার্থী, ৩১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক পেয়েছেন নৌকা প্রতীক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুকে লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আবদুল আউয়ালকে হাতপাখা ও জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীক পেয়েছেন।

এদিকে প্রতীক হাতে পেয়েই আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন মেয়র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বেলা ১১টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে লিফলেট বিতরণ শুরু করেন। তিনি বলেন, আমরা একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন করতে চাই। এবারের সিটি নির্বাচনে প্রচারণার সময় অনেক কম, দিনের বেলায় বাইরে প্রচন্ড গরম।

আচরণবিধি মেনে সব ভোটারের কাছে পৌঁছাতে চাই। ভোটের দিন তারা যেন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করেন, আমরা এ আহ্বান জানাব। আমরা চাই চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করে পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক নগরী গড়ে তুলতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে ভোটাররা যেন সহযোগিতা করেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়াল বলেন, নির্বাচিত হলে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। তিনি বলেন, আমাদের ভোটাররা যাতে হয়রানির শিকার না হন এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চাচ্ছি। নির্বাচন কমিশনের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছি যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হয়। তিনি ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, খুলনার রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বাড়ছে। তিনি সব স্তরের দুর্নীতি-দুঃশাসন প্রতিরোধ করে খুলনাকে সুন্দর আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে ভোটের মাধ্যমে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান তিনি। অন্যদিকে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সংশয়ের কথা জানান জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে, এটা গণমানুষের দাবি। ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি বলেন, এ শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা। আমি জয়লাভ করলে ভোগান্তি দূর করতে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার করব। খুলনা সিটিতে ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬১ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এবার ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ২৮৯টি কেন্দ্র ও ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। নির্বাচন কমিশন সার্বক্ষণিক মনিটর করবে। সিটি নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩। আগামী ১২ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বরিশালে প্রতীক বরাদ্দ, প্রচারণা শুরু : বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতীক পেয়েই আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমে পড়েছেন তারা। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। নগরীর নথুল্লাবাদে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গতকাল প্রথমে প্রতিদ্বন্দ্বী সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতকে দলীয় প্রতীক নৌকা, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপসকে লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে হাতপাখা এবং জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চুকে গোলাপ ফুল প্রতীক বরাদ্দ দেন তিনি। এ ছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপনকে টেবিল ঘড়ি, আলী হোসেন হাওলাদারকে হরিণ এবং মো. আসাদুজ্জামানকে হাতি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৬ জন এবং ১০ সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৪২ প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নগরবাসীর কাছে দোয়া ও ১২ জুন নৌকায় ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত। নির্বাচিত হলে বরিশাল শহরে ব্যাপক উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচন দেখে ভোট নিয়ে জনগণের আগ্রহ বেড়েছে। বরিশালকে একটি উৎপাদনমুখী এবং আইটি নগরী গড়তে লাঙ্গলে ভোট চান তিনি। প্রতীক বরাদ্দ নিতে নির্বাচন কমিশনে যাননি ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ও বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। প্রতীক পেয়েই গণসংযোগ শুরু করেন জাকের পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু। তিনি বরিশাল নগরীর উন্নয়নে গোলাপ ফুল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর। বিধি লঙ্ঘন হলে অভিযুক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বরিশাল সিটিতে এবার ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ ভোটার ইভিএমে ভোট দেবেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর