মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

আনোয়ারের প্রচারণায় প্রবাসীরা ইভিএম নিয়ে সন্দেহ বাবুলের

সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

আনোয়ারের প্রচারণায় প্রবাসীরা ইভিএম নিয়ে সন্দেহ বাবুলের

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণা চলছে। গতকাল থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পক্ষে দেশে আসা যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা প্রচারণায় নেমেছেন। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামানও দিনভর নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়েছেন। অপরদিকে ইভিএম নিয়ে তার সন্দেহ ও আশঙ্কার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। ইভিএমে ভোট কারচুপি হলে সিলেটবাসী বরদাস্ত করবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। আর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দিনভর প্রচারণা চালিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। দুপুরে নগরীর উপশহর ই ব্লকে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণায় নামেন যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা। যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ২০০ প্রবাসী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচারণায় অংশ নিতে সিলেটে এসেছেন। প্রবাসীরা উপশহরের বাসা-বাড়ি ও বস্তিতে গিয়ে নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ করেন। আনোয়ারুজ্জামানকে একজন বিচক্ষণ ও দক্ষ নেতা উল্লেখ করে প্রবাসী নেতারা বলেন, নৌকা প্রতীক বিজয়ী হলে সিলেট হবে লন্ডনের মতো উন্নত শহর। আর সিলেটকে কাক্সিক্ষত বাসযোগ্য নগরী গড়তে আনোয়ারুজ্জামান প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাবেন। সকালে নগরীর জিন্দাবাজার থেকে প্রচারণা শুরু করেন আনোয়ারুজ্জামান। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে নগরীর জিন্দাবাজারে বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও পথচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসায়ীবান্ধব। সরকার ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে নির্বিঘ্নে ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমিও ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায়ীদের সম্মান করি। ব্যবসায়ীদের যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে পাশে পাবেন। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে সিলেটের ব্যবসায়ীদের কল্যাণে সব সময় কাজ করে যাব।’

প্রচারণাকালে আনোয়ারুজ্জামানের সঙ্গে ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহসভাপতি বিজিত চৌধুরী, জেলা শাখার সহসভাপতি সুজাত আলী রফিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল, আবদুল মতিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য তাহমিন আহমদ প্রমুখ।

এদিকে গতকাল নগরীর শিবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের সঙ্গে গণসংযোগ করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এ সময় তিনি ইভিএম নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে লাঙ্গলের বিজয় কেউ রুখতে পারবে না। নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। আমি প্রথম থেকেই ইভিএম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছি। কারণ ইভিএম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা খুবই কম। নির্বাচন কমিশনের উচিত ইভিএম সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা।’ গণসংযোগকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ ভাবছি না। জনগণ বিচার করবে কে আগামীতে নগরের সেবক হবেন। তবে আমার বিশ্বাস এই নগরবাসী আর ফাঁকা বুলিতে বিশ্বাস করবে না।’ তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমার দল বা আমি কখনো সন্ত্রাসী লালন করিনি। আমি সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী নই। কারা সন্ত্রাসী লালন করে সেটা জনগণই ভালো জানে।’ গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ মুনিম চৌধুরী বাবু, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দিন খালেদ, মহানগর শাখার সদস্য সচিব আবদুস শহিদ লস্কর বশির প্রমুখ। এ ছাড়া দিনভর প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। গতকাল তিনি নগরীর ১, ২, ৩, ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম। প্রচারণাকালে ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘মাহমুদুল হাসান এ নগরীর সন্তান। তিনি বাইরে থেকে আসেননি। এ শহরেই তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। সিলেট নগরীতে একজন সৎ, যোগ্য আমানতদার ব্যক্তি হিসেবে মাহমুদুল হাসানের পরিচিতি রয়েছে। নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলে সিলেটে অবিস্মরণীয় উন্নয়ন হবে। নগর ভবনে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ হবে।’

সর্বশেষ খবর