যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (নাসা) প্রধান নভোচারী জোসেফ এম আকাবা বলেছেন, এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স) প্রযুক্তিতে পারদর্শী হলে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (নাসা) বাংলাদেশিদের কাজের সুযোগ থাকবে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের হাতে অনেক সম্ভাবনা। যারা এআই শিখবে, তারা ভবিষ্যতে নাসাসহ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মহাকাশ সংস্থাগুলোতে কাজ করতে পারবে।
গতকাল প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ভ্রমণে এসে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্লে পেন স্কুলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্লে পেন স্কুলের চেয়ারম্যান এ মান্নান খান, প্রিন্সিপাল শরাবন তহুরা, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পলিটিক্যাল অফিসার জেমস গার্ডিনার প্রমুখ। নাসার প্রধান নভোচারী জোসেফ এম আকাবা আরও বলেন, এআই প্রযুক্তিকে উন্নত করতে নাসা বিভিন্ন দেশে নানান ধরনের প্রতিযোগিতা করে থাকে। বাংলাদেশও এতে অংশ নেয়। বাংলাদেশের কেউ যদি এআই প্রযুক্তি নিয়ে অনেক বেশি উন্নতি করতে পারে, তাহলে নাসায় কাজ করার সুযোগ থাকবে। এমন সব লোকদেরই নাসা খুঁজে থাকে, যাতে করে এআই ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা মহাকাশে আরও বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে পারি। এ সময় তিনি বৈশ্বিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নাসার অবদান এবং মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ কীভাবে লাভবান হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। জোসেফ এম আকাবা বলেন, আমি আশাবাদী ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকেও মহাকাশ ভ্রমণে যাবে। আমি মনে করি এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করে ভালোভাবে পড়াশোনা করার মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণ ও অনুসন্ধানের স্বপ্নপূরণ করা সম্ভব। কখন কার সুযোগ আসে এটা বলা যায় না, তাই স্বপ্নপূরণে পরিশ্রমী হতে হবে।
মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে আসার পর সাধারণ জীবনযাপনে কেমন অনুভূতি হয়, এ বিষয়ে জোসেফ এম আকাবা বলেন, মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে আসার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ সবকিছুই ভারী মনে হয়। কারণ মহাকাশে থাকে মাইক্রোগ্রাভিটি। পৃথিবীতে আসার পর একজন নভোচারীর স্বাভাবিক হতে কিছু দিন সময় লাগে। মহাকাশ থেকে আসার পর আমাদের ৪৫ দিন পুনর্বাসনে থাকতে হয়। পরে আমাদের নানা ধরনের মেডিকেল চেকআপ করতে হয়। আমাদের শরীরের কন্ডিশন কেমন আছে এবং আগের মতন স্বাভাবিক হয়েছে কি না, তা দেখা হয়।
মহাকাশে থাকার দিনগুলো প্রতিনিয়ত মিস করেন জানিয়ে নাসার এ বিজ্ঞানী বলেন, মহাকাশে থাকার অভিজ্ঞতা অনেক রোমাঞ্চকর। এ দিনগুলো আমি প্রতিনিয়ত মিস করি। তবে পরিবারের সঙ্গে পৃথিবীতে থাকার অনুভূতিটাও চমৎকার হয়। সর্বশেষ পাঁচ বছর আগে আমি মহাকাশে যাই, আমি আশায় আছি আবার কবে সেখানে যাব। তিনি বলেন, মহাকাশে মজার একটি বিষয় হচ্ছে, সেখান থেকে নভোচারীরা চাইলে পৃথিবীতে যে কোনো দেশে যে কারও কাছে ফোনকল করতে পারেন। এই ফোনকলে কোনো প্রকার খরচ নেই। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, সেখানে আমাকে কেউ কল দিতে পারবে না। বিজ্ঞানী আকাবা যুক্তরাষ্ট্রের একজন শিক্ষক, হাইড্রোজিওলজিস্ট এবং পিস কর্পসের সাবেক স্বেচ্ছাসেবকও। ২০০৪ সালের মে মাসে নাসার মহাকাশচারী প্রার্থী হিসেবে মনোনীত প্রথম পুয়ের্তোরিকান বংশোদ্ভূত ব্যক্তি তিনি। ২০২৩ সালে আকাবাকে নাসার নভোচারী কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।