অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন নারায়নগঞ্জের সাত খুনের মামলার প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেনের অন্যতম সহযোগী খান সুমন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার অনতিদূরে অবস্থিত দমদম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান সুমন।
গত ১৮ আগষ্ট পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ জেলা শেশন জজ আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। আদালতের বিচারক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় শর্ত সাপেক্ষে সুমনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
আজ খান সুমনের সহকারী আইনজীবি অনুপ ঘোষ জানান 'ওইদিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদালতে জমা দিতে না পারায় সেসময় কারাগার থেকে মুক্ত হতে পারেন নি। এরপর গত সোমবার সুমনের তরফে আদালতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। গতকাল বিকেলে কারাগার থেকে মুক্তি পান সুমন'।
এরআগে তিনবার জেলা আদালতের নিম্ন কক্ষে তাঁর জামিন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর ১৮ আগষ্ট আদালতের উচ্চ কক্ষ সেশন জজ কোর্টে জামিনের আবেদন জানান খান সুমনের আইনজীবি তারক চন্দ্র দাস ও সহকাল আইনজীবি অনুপ ঘোষ। আদালতের কাছে আইনজীবি জানান 'তাঁর মক্কেল (খান সুমন)-এর ভারতে প্রবেশের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পার্সপোট, ভিসার নম্বর, এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান নম্বর সহ মামলার সপক্ষে বেশ কিছু নথিও আদালতে পেশ করেন সুমনের আইনজীবি তারক চন্দ্র দাস।
আদালতকে তিনি জানান গত ১০ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার ২২৯ উড়ানে ভারতে আসেন সুমন। তাঁর পাসপোর্ট নং-এই০৭৯২৪২৮। এরপরই আদালতের নির্দেশে এই মামলার তদন্তকারী অফিসার প্রভাকর নাথ সুমনের ভারতে প্রবেশের বিষয়ে বিস্তারিত নথি জমা দেন।
খান সুমন মামলার প্রথম দিন থেকেই খূনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সুমন বলেন 'এই বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা'। তাঁর অভিযোগ ছিল বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে প্রবেশ সত্ত্বেও তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবি চন্দন সরকার সহ সাতজনের অপহরণ ও খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেন গত ১৪ জুন কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা কৈখালি'র একটি বহুতল আবাসন থেকে গ্রেফতার করে পুলিস। ওইদিন নূরের সঙ্গে তাঁর দুই সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম এবং খান সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪ বিদেশি নাগরিক আইন (ফরেনারস অ্যাক্ট) লঙ্ঘনের দুইটি ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরদিন ১৫ জুনই তাদের আদালতে তোলা হয়। এরপর কয়েকদফা রিমান্ডের পর তাদের স্থান হয় দমদমের কেন্দ্রীয় কারাগারে। আগামী ২৯ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।