দুর্নীতির বিশ্বজনীন ধারণা সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রা ক্রমাগত বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর এক ধাপ এগিয়ে বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪তম, আর ২০১৩ সালে ছিল ১৬তম স্থানে।
বুধবার সকালে বার্লিনভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) টিআই দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০১৫ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) কর্তৃক প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০১৫ অনুযায়ী ২০১৪ সালের তুলনায় বাংলাদেশের স্কোর অপরিবর্তিত থাকলেও অবস্থানের এক ধাপ অবনতি হয়েছে। এছাড়া, বৈশ্বিক গড় স্কোরের তুলনায় বাংলাদেশের ২০১৫ সালের স্কোর অনেক কম এবং গতবারের মত একই স্কোর নিয়ে এবারও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় সর্বনিম্ন হওয়ায় দেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা এখনও উদ্বেগজনক।
এই প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আরো কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ জবাবদিহিমূলক অপরাপর প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাধীনতা কার্যকরতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
বুধবার সিপিআই ২০১৫ এর বৈশ্বিক প্রকাশ উপলক্ষে ধানমণ্ডিস্থ টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের এই অবস্থান প্রকাশ করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ বছর বাংলাদেশ ০-১০০ স্কেলে ২৫ স্কোর পেয়ে ১৬৮টি দেশের মধ্যে ঊর্ধ্বক্রম অনুসারে ১৩৯তম এবং নিম্নক্রম অনুসারে ১৩তম অবস্থানে রয়েছে। ২০১৫ সালের স্কোর ২০১৪ সালের মতই অপরিবর্তিত থাকলেও অবস্থানের নিম্নক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০১৫ সালে এক ধাপ নিচে নেমেছে। তবে উচ্চক্রম অনুযায়ী ২০১৪ সালের তুলনায় বাংলাদেশ ২০১৫ সালে ছয় ধাপ এগিয়েছে।
সিপিআই অনুযায়ী ৯১ স্কোর পেয়ে ২০১৫ সালে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে ডেনমার্ক। ৯০ স্কোর পেয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড এবং ৮৯ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সুইডেন। আর সর্বনিন্ম ৮ স্কোর পেয়ে ২০১৫ সালে তালিকার সর্বনিম্নে যৌথভাবে অবস্থান করছে উত্তর কোরিয়া ও সোমালিয়া। ১১ ও ১২ স্কোর পেয়ে তালিকার সর্বনিন্মের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দেশ হিসেবে রয়েছে যথাক্রমে আফগানিস্তান ও সুদান।
সিপিআই ২০১৫ এর জন্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সূত্র হিসেবে সাতটি জরিপ ব্যবহৃত হয়েছে।
জরিপগুলো হলো: বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি পলিসি অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল অ্যাসেসমেন্ট ২০১৪, ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম এক্সিউকিউটিভ ওপিনিয়ন সার্ভে ২০১৫, বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশন ট্রান্সফরমেশন ইনডেক্স ২০১৬, ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট ‘রুল অব ল’ ইনডেক্স ২০১৫, পলিটিক্যাল রিস্ক সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনাল কান্ট্রি রিস্ক গাইড ২০১৫, ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কান্ট্রি রিস্ক রেটিংস্ ২০১৫ এবং গ্লোবাল ইনসাইট কান্ট্রি রিস্ক রেটিংস্ ২০১৪ এর রিপোর্ট।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব/ সালাহ উদ্দীন