শিরোনাম
- বাগেরহাটে ভারতীয় নাগরিককে এনআইডি দেওয়ার অভিযোগ, দুদকের মামলা
- রাতের আঁধারে কুপিয়ে জখম, আরো একজন মারা গেছেন
- ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিষয়ে নাক গলাতে চান না রাহুল গান্ধী
- পেছাচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ
- পাকিস্তানে হামলা: কাশ্মীর নিয়ে নতুন করে কঠিন চাপে ভারত
- ঢাকার মূল সড়কে কোনো রিকশা চলতে পারবে না : ডিএনসিসি প্রশাসক
- কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর ওপর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ
- গুচ্ছ ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
- কেন মধ্যপ্রাচ্য দিয়ে বিদেশ সফর শুরু করলেন ট্রাম্প?
- টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের স্কোয়াড দিল দক্ষিণ আফ্রিকা
- সৌদি আরবের সাথে ‘১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি’ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের
- পুশইন করা ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, ৩ ভারতীয়কে আদালতে প্রেরণ
- নাগরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী গ্রেফতার
- রাজশাহী নার্সিং কলেজে দু’পক্ষের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ১০
- ভারতের সাথে সংঘর্ষে ১১ সেনাসহ ৫১ জন নিহত : পাকিস্তান সেনাবাহিনী
- মাদারীপুরে হাসপাতালের দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান
- ২০২৭ বিশ্বকাপে দেখা যাবে না রোহিত-কোহলিকে
- ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কিনবে সরকার
- রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের মতবিনিময় সভা
- হবিগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৪০
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক আবহে মাতৃভাষা দিবস
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি
অনলাইন ভার্সন

পঞ্চমবারের মতো জাতিসংঘ সদরদপ্তরে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক আবহে উদযাপন করা হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কানাডা, মিশর, জর্ডান, লিথুনিয়া ও নিউজিল্যান্ড এবং জাতিসংঘ সচিবালয় ও ইউনেস্কোর সহ-আয়োজনে ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। কোভিড-১৯ এর বিধি-নিষেধ জনিত কারণে ইভেন্টটি ভার্চুয়ালে অনুষ্ঠিত হয় যা জাতিসংঘ ওয়েভ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সদর দফতরে এই একটিমাত্র অনুষ্ঠানই হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভলকান বজকির অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন এবং বক্তব্য রাখেন। সহ-আয়োজক দেশসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধিগণ ছাড়াও অনুষ্ঠানটিতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের বহুভাষিক সমন্বয়কারী ও জেনারেল অ্যাসেম্বিলি ও কনফারেন্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং জাতিসংঘের বৈশ্বিক যোগাযোগ বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল। এছাড়া ইউনেস্কো মহাপরিচালকের ভিডিও বার্তা এবং নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের বার্তা উপস্থাপন করা হয়। স্প্যানিস ভাষাভাষী বন্ধু-দেশগুলোর পক্ষে এ সভায় বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত পর্তুগালের স্থায়ী প্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রাণ উৎসর্গকারী সকল ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “ভাষা শহীদদের এই আত্মত্যাগের ফলেই ‘বাংলা’ রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করেছে”। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আর এই ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই ১৯৭১ সালে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা”।
যে সকল প্রবাসী বাংলাদেশী মহান শহীদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস করার জন্য প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। প্রবাসী বাংলাদেশীগণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কোর সাথে সরকারিভাবে যোগাযোগ স্থাপন এবং বিষয়টি এগিয়ে নিতে যে বিচক্ষণ ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন তা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন তিনি। পৃথিবীর বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সমূহের সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছেন মর্মেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে প্রস্তাবনা রেখেছেন তা পুনরুল্লেখ করেন তিনি।
সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভলকান বজকির জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনকে ধন্যবাদ জানান। সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ অন্য বক্তাগণ জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে অনন্য ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া মাতৃভাষা ও বিশ্বব্যাপী বহুভাষিকতা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে নেতৃত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন বক্তাগণ।
বক্তাগণ বহুভাষিকতার গুরুত্ব বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে বহুভাষিকতার তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের সংরক্ষণ এবং শিক্ষা ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তা ব্যবহার এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে মর্মে উল্লেখ করেন তাঁরা। টেকসই উন্নয়ন ও এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনের অনুঘটক হিসেবে মাতৃভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে অনুধাবন, সহিষ্ণুতা, সংলাপ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণ এগিয়ে নেওয়ার জন্য মত প্রকাশ করেন তাঁরা।
বহুভাষিক উপাদানের সমন্বয়ে অনুষ্ঠানটিতে বর্ণাঢ্য এক সাংস্কৃতিক পর্ব পরিবেশিত হয়। ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রকে উজ্জ্বীবিত রাখার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বহুভাষিক উপাদানের সমন্বয়ে তিনটি ভিন্নমাত্রার সঙ্গীত পরিবেশন করে ইউএন চেম্বার মিউজিক সোসাইটি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিলুপ্তপ্রায় ভাষা ‘খোসা-এর একটি অপেরা সঙ্গীত, ফ্রেঞ্চ ভাষার একটি যন্ত্রসঙ্গীত, এবং জাপানী শিল্পী পরিবেশিত একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিমসং ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ -এর ভিন্ন মাত্রার পরিবেশনা সকলেরই নজর কাড়ে। বাংলাদেশের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেন এর শিক্ষার্থীগণ বহুভাষার সমন্বয়ে গানটি পরিবেশন করেন। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক স্কুলের শিক্ষার্থীগণের পরিবেশনায় ৩৮টি ভাষায় ক্ষুদে ভিডিও বার্তা অনুষ্ঠানটিতে আলাদা মাত্রা এনে দেয়।
ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানটিতে জাতিসংঘ সদস্য দেশসমূহের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
এই বিভাগের আরও খবর