কালজয়ী একুশে গানের রচয়িতা, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মরণে বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডনের উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল ও শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এই প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিকের কর্ম ও জীবন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের কাছে বিশেষভাবে তুলে ধরার জন্য যুক্তরাজ্যে একটি ফাউন্ডেশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন।
গতকাল সোমবার পূর্ব লন্ডনের ইমপ্রেশন ইভেন্টস ভেন্যুতে আয়োজিত এই মিলাদ মাহফিল ও শোকসভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি প্রধান অতিথি এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপি ও বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য রুশনারা আলি সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আবদুল গাফফার চৌধুরীর সুদীর্ঘ প্রবাস জীবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ সুলতান মাহমুদ শরীফ, বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা লোকমান আহমেদ, যুক্তরাজ্যে আবদুল গাফফার চৌধুরীর সম্পাদনায় লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক নুতন দিনের পরিচালক খুররম মতিন, সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক ও কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা, বিবিসির সাবেক সাংবাদিক উদয় শংকর দাস ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উর্মি মাজহার।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী ছিলেন আমাদের পিতৃতুল্য, আমাদের অভিভাবক। সাংবাদিক হিসেবে সব সময় ছিলেন অকুতোভয় ও স্পষ্টভাষী। সত্য কথা অকপটে বলতেন ও লিখতেন এবং যা লিখতেন সে বিষয়ে তার ধারণা ছিল স্পষ্ট। তিনি আমাদের কাছে ছিলেন অসীম প্রেরণা ও সাহসের উৎস।’
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপি আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঠিক মূল্যায়নের জন্য তার লেখার অনুশীলন ও অনুসরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের বাতিঘর বরেণ্য সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর কর্ম ও জীবন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের কাছে বিশেষভাবে তুলে ধরার জন্য যুক্তরাজ্যে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করা যেতে পারে।
এ ব্যাপারে মরহুমের পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগ নেয়ার এবং এক্ষেত্রে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সবাইকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষার্তে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের কাছ থেকে যেসব বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব হাইকমিশন বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অনুষ্ঠানে রুশনারা আলী এমপি বলেন, বাংলাদেশে এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ওপর সাংবাদিক হিসেবে আবদুল গাফফার চৌধুরী ও তাঁর লেখার প্রভাব ছিল অসামান্য। তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে আমাদের সব সময় এই সাহস যুগিয়েছেন যে সত্যিকারের নিষ্ঠা ও অঙ্গীকার থাকলে যে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব।
শোকসভায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্রিটিশ-বাংলাদেশী সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে আবদুল গাফফার চৌধুরীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর