৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:৩৮

ক্ষুব্ধ মুসলিম আমেরিকানদের ‘অ্যাবান্ডন বাইডেন কোয়ালিশন’

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

ক্ষুব্ধ মুসলিম আমেরিকানদের ‘অ্যাবান্ডন বাইডেন কোয়ালিশন’

অ্যাবান্ডন বাইডেন কোয়ালিশন সংবাদ সম্মেলনে ‘অ্যাবান্ডন বাইডেন কোয়ালিশন’র নেতৃবৃন্দ। ছবি-বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘বাইডেনকে ত্যাগ করো’ স্লোগানে উজ্জীবিত আমেরিকায় মুসলমান সম্প্রদায়ের নেতারা শনিবার মিশিগানের ডেট্রয়েটে এক সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হয়ে সামনের নির্বাচনে জো বাইডেনকে পরাজিত করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। গাজায় মুসলিম হত্যায় ইসরায়েলকে সর্বাত্মক সহায়তার জন্য ক্ষুব্ধ মুসলিম আমেরিকানদের পক্ষ থেকে বাইডেনের বিরুদ্ধে তহবিল গঠন এবং বিজয় নির্ধারণী (সুইং স্টেট) স্টেটসমূহে এখন থেকেই প্রচারণা শুরুর সিদ্ধান্তও জানানো হয়।

আর এই প্রচারাভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অ্যাবান্ডন বাইডেন’ (AbandonBiden) অর্থাৎ বাইডেনকে ত্যাগ/বর্জন করো। সংবাদ সম্মেলন থেকে বাইডেনকে ‘ওয়ানটাইম প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিহিত করে সামনের নির্বাচনে অন্য যে কোনো প্রার্থীকে জয়ী করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে সে ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিবেচনায় নেওয়া হবে না বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

উল্লেখ্য, মিশিগান, মিনেসোটা, আরিজোনা, উইসকনসিন, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নেভাদা এবং পেনসিলভেনিয়া স্টেটকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় অর্থাৎ এসব স্টেটকে ‘সুইং স্টেট’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এসব স্টেটের মুসলিম নেতারাই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন এবং জাতীয় একটি ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে বাইডেন বিরোধী প্রচারণায় ঐক্যমত পোষণ করা হয় এবং গঠন করা হয় ‘অ্যাবান্ডন বাইডেন ন্যাশনাল কোয়ালিশন’।

গত নির্বাচনে বাইডেনের বিজয়ে মুসলিম আমেরিকান এবং তরুণ ভোটারেরা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন বলে উল্লেখ করে এই কোয়ালিশনের অন্যতম সদস্য ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার অধ্যাপক হাসান আব্দেল সালাম বলেন, আমরা একটি টিম গড়তে চাই, যার মধ্য দিয়ে সুইং স্টেটসমূহের সকল মুসলমান ভোটার সরব হবেন এবং কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, যাতে প্রতিটি স্টেটেই বাইডেনের পরাজয় নিশ্চিত হয়।

সুইং স্টেটসমূহে মুসলমান ভোটারের সংখ্যা একেবারে কম নয়। তারা যদি বাইডেনকে ভোট না দেন, তাহলে তার পরাজয় নিশ্চিত বলে মনে করছেন মুসলিম নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইসরায়েলকে সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র এবং বিপুল অর্থ দিয়েছেন বাইডেন। সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে গাজায় নিরস্ত্র মুসলমানদের হত্যায়।

‘অ্যাবান্ডন বাইডেন ন্যাশনাল কোয়ালিশন’র আরেক সদস্য এবং ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স’ তথা কেয়ার-মিনেসোটা চ্যাপ্টারের নির্বাহী পরিচালক জেলানী হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমেরিকান মুসলমান হিসেবে আমরা ক্ষমতাহীন নই। আমরাও ক্ষমতাবান, শক্তিশালী ভোটার হিসেবে। কেবলমাত্র আমাদের পর্যাপ্ত অর্থ নেই, তবে আমাদের খাঁটি ভোটার আছে এবং আমরা সেই ভোট-শক্তি প্রয়োগ করে এই জাতিকে রক্ষা করতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় যে, তারা ট্রাম্পকেও সমর্থন দেবেন না। বাইডেনকে ঠেকাতে তারা মাঠে নামবেন। এ লক্ষ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক রচনার কাজ চলছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় মুসলমানের সংখ্যা ৩৪ লাখ ৫০ হাজারের মতো। তবে অন্য সংস্থাগুলোর মতে এ সংখ্যা ৯০ লাখের কাছাকাছি। আরব আমেরিকান ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী গত নির্বাচনে আরব আমেরিকানের ৫৯% বাইডেনের পক্ষে ছিলেন। সম্প্রতি বিভিন্ন জরিপে তা একেবারেই কমেছে। বিশেষ করে হামাস নিধনের অভিযানে গাজায় নিরস্ত্র মুসলমান হত্যাযজ্ঞে বাইডেনের সমর্থনের পর মুসলিম আমেরিকানরা একেবারেই হতাশ হয়ে পড়েছেন বাইডেনের ব্যাপারে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর