শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১

জাতি কি পদার্থ

সলিমুল্লাহ খান
প্রিন্ট ভার্সন
জাতি কি পদার্থ

বিগত ৭ই মার্চ তারিখে ধানমন্ডিতে অনুষ্ঠিত একটি ক্ষুদ্র পন্ডিত সমাবেশে আমি একটি আধঘণ্টার বক্তৃতা করার সুযোগ পাইয়াছিলাম। বক্তৃতা বিষয়-জাতি ও জাতীয়তাবাদ-নির্ধারণ করিয়াছিলেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ। সেই সমাবেশে আমি যে সকল কথা বলিতেছিলাম তাহার সহিত বলিতে পারি নাই এমন কিছু কথাও এখানে যোগ করিলাম। আমার বক্তৃতার শিরোনাম ছিল গালভরা-‘বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসনের লেখায় অলীক ও প্রতীক : স্বাধীনতার যুগে পরাধীনতার পুনরাবৃত্তি’।

মনে পড়িতেছে, ১৯৭১ সালের পর হইতে বাংলাদেশের কোন কোন লেখক আবিষ্কার করিয়াছিলেন ‘বাঙালী’ জাতির ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরের। কিছুদিন হইল শোনা যাইতেছে জাতিজ্ঞানে ‘বাঙালী’র বয়স মাত্র এক হাজার বছর। যদি তাহা না হইত, তবে ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী’ কথাটা কোন অর্থ বহন করিত না। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯১৬ সালে ‘বৌদ্ধগান ও দোহা’ প্রকাশের মুহূর্তে অবশ্য ‘হাজার বছরের পুরান বাঙ্গালা ভাষা’ কথাটি ব্যবহার করিতে ভোলেন নাই। আগের চার হাজার বছরের কি হইল তাহা লইয়া কাহাকেও বিশেষ মাথা ঘামাইতে দেখি নাই। অনেকেই-মনে হইতেছে-হাজার বছরে সিদ্ধ হইয়াছেন।

এই মনীষী সমাবেশেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সিদ্ধি অতুলনীয়। ১৯৩৮ সালের শেষভাগে সমাপ্ত ‘বাংলাভাষা-পরিচয়’ নামক কাহিনীতে তিনি লিখিয়াছিলেন, ‘এতকাল আমাদের যে বাঙালি বলা হয়েছে তার সংজ্ঞা হচ্ছে, আমরা বাংলা বলে থাকি। শাসনকর্তারা বাংলা প্রদেশের অংশ-প্রত্যংশ অন্য প্রদেশে জুড়ে দিয়েছেন, কিন্তু সরকারি দফতরের কাঁচিতে তার ভাষাটাকে ছেঁটে ফেলতে পারেননি।’ ঠাকুরের যুক্তি ছিল, বাংলাদেশের ভাষাই দেশের-যাহাকে বলে-ভাবমূর্তি বা ‘সাকার জগত’ তাহা গড়িয়াছে। তিনি বিশদ লিখিয়াছেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস খ-তার ইতিহাস। পূর্ববঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ, রাঢ় বরেন্দ্রের ভাগ কেবল ভূগোলের ভাগ নয়; অন্তরের ভাগও ছিল তার সঙ্গে জড়িয়ে। সমাজেরও মিল ছিল না। তবু এর মধ্যে যে ঐক্যের ধারা চলে এসেছে সে ভাষার ঐক্য নিয়ে।’

১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে নবগঠিত বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রও সেই খ-তার ইতিহাসটি অস্বীকার করে নাই। ১৯৭২ সালের সংবিধানে লেখা হইয়াছিল, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত হইবে (ক) ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা-ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা লইয়া পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল; এবং (খ) যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হইতে পারে।’ [অনুচ্ছেদ ২]

এই তো গেল গণপ্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার কথা। এক্ষণে নাগরিকত্বের কথা উঠিবে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে লেখা হইয়াছিল, ‘বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে; বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাঙালী বলিয়া পরিচিত হইবেন।’ [অনুচ্ছেদ ৬] আকেলমন্দ ব্যক্তি মাত্রেই লক্ষ করিয়াছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার মধ্যে প্রাপ্তব্য ১৯৩৮ সালের ‘বাঙালি’ আর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে উৎকীর্ণ ‘বাঙালী’ হুবহু এক পদার্থ নয়। ‘পদ’ (বানানের পরিবর্তন সত্ত্বেও) এক রহিয়াছে কিন্তু ‘পদার্থ’ আর এক রহিল না।

এই সত্যে সন্দিগ্ধ যাহারা তাহাদের কথা মনে রাখিয়াই কিনা জানি না, ১৯৭২ সালের সংবিধানের লেখকগণ পুনশ্চ লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন : ‘ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।’ [অনুচ্ছেদ ৯]

আকেলমন্দ ব্যক্তি মাত্রেই খেয়াল করিবেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যাহাকে বলিয়াছিলেন ‘ভাষার ঐক্য’, তাহা হইতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান খানিক তফাতে দাঁড়াইয়াছে। এক্ষণে ঐক্যের ভিত্তি হইয়াছে ‘ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম’ এবং ‘জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ’। স্পষ্ট করিয়াই বলা হইয়াছে, ‘সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।’

এখানে আমরা কি দেখিলাম? দেখিলাম বেশিদিনের কথা নয়-১৯৩৮ হইতে ১৯৭২-মাত্র এই ৩৪ বছরের ব্যবধানে ‘জাতি’ পদটির সংজ্ঞা বা পদার্থ ষোল আনা না হইলেও বারো আনাই বদলাইয়া গিয়াছে। এই জাতীয় ঘটনাকেই হয়তো লোকে বলে ইতিহাস। অনেক সময় নতুন নতুন ঘটনার জন্য মানুষ নতুন নতুন ‘পদ’ বা শব্দ তৈয়ার করে; কখনও বা পুরাতন পদের ভিতর নতুন পদার্থ ঢুকাইয়া দেয়। আমার দেখা চৌত্রিশ বছরের উদীয়মান ‘বাঙালী’ জাতি তাহার সামান্য প্রমাণ। প্রমাণ আরও ঢের পেশ করা যাইতে পারে।

এই সত্য সম্বল করিয়া কোন কোন পন্ডিত পাশ্চাত্য জগতে প্রচার করিয়াছেন-‘জাতি’ বলিয়া কোন পদার্থ আসলেই নাই। যদি বা থাকিয়া থাকে তাহা ‘নকল পদার্থ’ মাত্র। বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন নামক একজন খ্যাতিমান আধা-ইংরেজ আধা-আয়ার পন্ডিত ১৯৮৩ সালে ছাপা একটি ইংরেজি বইয়ের নামযোগেই এই ধারণার বহুল প্রচার করিয়াছিলেন। তাঁহার বইয়ের নাম ‘ইমাজিন্ড কমিউনিটি’। আমি তাহার বাংলা লিখিতেছি ‘সকল্প সমাজ’ অথবা ‘অলীক সমাজ’। ইহার নির্গলিতার্থ ‘যে সমাজ সমাজ নয়’ অর্থাৎ ‘নকল সমাজ’। যে পদার্থকে ‘জাতি’ পদের মধ্যে আমরা ধরিতেছি তাহা পিচ্ছিল সন্দেহ নাই। তবে প্রশ্ন হইতেছে, তাহা কতখানি অলীক পদার্থ। সবিনয়ে নিবেদন করি-অ্যান্ডারসন সাহেব ‘জাতি’ ঠিক কি পদার্থ তাহার গা দেখেন নাই, মাত্র একটি পা দেখিয়াছেন। ‘জাতি’ পদার্থের আরও দুইটি পা হয়তো আছে যাহা তিনি দেখিতে পান নাই। কাজী নজরুল ইসলামের সহিত ধুয়া ধরিতে ইচ্ছা হয় : দে জাতির গা ধুইয়ে!

‘জাতি’ নামক পদার্থের কমপক্ষে তিনটি পা (অর্থাৎ জগত) আছে। এক নম্বরে আছে ‘অলীক’ পা, যাহার অপর নাম ‘ভাবের জগত’ বা ‘সাকার জগত’। অ্যান্ডারসন ইহাকেই জড়াইয়া ধরিয়াছেন। কিন্তু তিনি বিস্মৃত হইয়াছেন যে জাতির আরও দুইটি পা আছে-একটির নাম ‘প্রতীক জগত’ বা ‘অকারণ জগত’ আর অন্যটির নাম ‘কারণ জগত’ বা ‘নিরাকার জগত’। প্রতীক বা অকারণ জগতের আকার আছে, তবে কারণ বা নিরাকার জগতের কোন আকার থাকে না।

জাতি তৈয়ার হইয়াছে এই তিন জগতের মিলনমেলায়। এই সত্য আমি দেখিতে পাইয়াছি ফরাশি দেশের ভাববাদী জাক লাকাঁর লেখায়। বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন অনেক লেখাপড়া শিখিয়াছেন-এমনকি জার্মান ভাববাদী বাহল্টার বেনিয়ামিনের দোহাই দিতেও তিনি নিরলস-কিন্তু তাঁহার লেখা তন্ন তন্ন করিয়াও জাক লাকাঁর লেখার সহিত তাঁহার বিশেষ পরিচয় আছে এমন মনে হইল না। না থাকিবার ফল হয়তো ভালোই হইয়াছে। নচেৎ তাঁহার ‘অলীক সমাজ’ বইটির এমন জগজ্জোড়া কাটতি হইত না।

অ্যান্ডারসনের বহিটি বাহির হইয়াছিল-আগেই উল্লেখ করিয়াছি-১৯৮৩ সালে। লেখক নিজেই জানাইতেছেন, ২০০৭ সালে তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বইটির একাধিক সংস্করণ তেত্রিশটি দেশের ঊনত্রিশটি ভাষায় প্রকাশিত হয়। ইংরেজি ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রায় আশি বছর বয়সে অ্যান্ডারসন পরলোকগমন করিয়াছেন। কিন্তু তাঁহার বইটি এখনও পুরোদমে জীবিত। সকলেই তাহার আলোচনা করিতেছেন। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগিবে বইটির এহেন জনপ্রিয়তার কারণ কি।

কয়েকটি কারণের কথা লেখক নিজেই নির্দেশ করিয়াছেন। ইংরেজ লেখকদের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে ‘জাতি’ পদার্থটা প্রথমেই তৈয়ার হইয়াছিল এয়ুরোপ মহাদেশে এবং পরে সেখান হইতেই পৃথিবীর বাদবাকি অংশে তাহার নকল রফতানি করা হইয়াছে। বেনিডিক্ট অ্যান্ডারসন বলিতে চাহেন, এই ধারণাটি ষোল আনা সত্য নহে। তাঁহার নিজের ধারণা, ‘জাতি’ পদার্থ এবং তাহার উপজাত ‘জাতীয়তাবাদ’ (বা সত্য বলিতে জাতি-ব্যবসায়ী রাষ্ট্র) প্রথমে উত্তর আর কিছু পরে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রস্তুত হইয়াছিল। এই অমৃতই পরে খোদ এয়ুরোপের লোকেরা আমদানি করে। পরিশেষে এয়ুরোপ হইতে এই ‘পদার্থ’ (ও-বলা বাহুল্য-তাহার ‘পদ’) দুনিয়ার আর আর দেশে বিস্তৃত হয়। অ্যান্ডারসনের কথা যদি আমি বড় একটা ভুল না বুঝিয়া থাকি তবে তাঁহার দাবি এই যে এয়ুরোপ হইতে দক্ষিণ, মধ্য, আর উত্তর আমেরিকায় যাহারা বসতি স্থাপন করিবার উদ্দেশ্যে গিয়াছিলেন-যাহারা ‘ক্রেয়োল’ বা সংকর অর্থাৎ ‘মিশ্র’ জাতীয়-তাহারাই জাতি নামক পদার্থের জনক। অ্যান্ডারসন আদেশ করিতেছেন, সাইমন বলিবার হইতে জর্জ ওয়াশিংটন প্রভৃতি ক্রেয়োল, সংকর, মিশ্র কিংবা নতুন জাতির নেতাকেই এই সংকর, ‘মিশ্র’ বা ‘ক্রেয়োল’ জাতিগুলির মুখপাত্র বলিয়া চেনা যায়।

এক্ষণে প্রশ্ন দাঁড়াইতেছে, এই ‘জাতি’ কথাটি ইঁহারা কোথা হইতে পাইলেন। অ্যান্ডারসন নিজেই দেখাইয়াছেন, উত্তর আমেরিকার ১৩টি উপনিবেশ যখন ১৭৭৬ সালের দিকে মাতৃভূমি ইংলন্ডের কাছে স্বাধীনতা দাবি করিল তখন কিন্তু উঁহাদের ঘোষণাপত্রে ‘জাতি’ (বা নেশন) শব্দটি স্থান পায় নাই। স্থান পাইয়াছিল ‘জনগণ’ (বা পিপল) শব্দটি। তবে এই ঘটনার এক যুগ পর-মানে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের ১৭৮৭ সালের মধ্যে রচিত সংবিধান বা গঠনতন্ত্রে-‘জাতি’ শব্দটি যেন বা উড়িয়া আসিয়া জুড়িয়া বসে। বলা বাহুল্য, এই শব্দটি তাঁহারা এয়ুরোপ মহাদেশের-তথা ফরাশি দেশের-ভাষা হইতেই কুড়াইয়া লইয়াছিলেন।

দেখা যাইতেছে, অ্যান্ডারসন নতুন করিয়া কলম্বাস সাজিলেন, জাতি নামক পদার্থ বা ‘অলীক সমাজ’ তিনি খুঁজিয়া পাইলেন কলম্বাস যেখানে থামিয়াছিলেন সেখানেই। মজার বিষয়, এই জাতির মধ্যে ঐসব দেশের পুরাতন অধিবাসীদের জায়গা মোটেও হয় নাই। এমন কি আফ্রিকা মহাদেশ হইতে ধরিয়া লইয়া যাওয়া দাসদেরও সেখানে পংক্তি দেওয়ার ফুরসৎ হয় নাই। অ্যান্ডারসন স্বীকার করিয়াছেন, নরগোষ্ঠীগত (বা এথনিক) কিংবা ভাষাগত ঐক্য দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকায় জন্ম লওয়া নতুন নতুন জাতির নতুন জাতীয় ধারণার ভিত্তি ছিল না। দেখা যাইতেছে, বাংলাদেশের সংবিধানে লিখিত ‘ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট’ হওয়ার গুণটা অ্যান্ডারসনের অভিধানে আদৌ অপরিহার্য গুণ নয়।

অ্যান্ডারসনের বইটির জনপ্রিয় হইবার আসল কারণটি মনে হইতেছে এখানে নহে, অন্যত্র পাওয়া যাইবে। তিনি মনে করেন, জাতি পদার্থ বা জাতীয়তাবাদের ব্যবসায় জগত জুড়িয়া ছড়াইয়া পড়িবার পিছনে একটি বস্তুগত ব্যাখ্যাও কার্যকর আছে। এই ব্যাখ্যা একই সঙ্গে ইতিহাসভিত্তিকও বটে। খ্রিস্টীয় ১৬ শতাব্দী হইতে এয়ুরোপে ছাপাখানার প্রসার ঘটিতে শুরু করিয়াছিল। এই ছাপাখানায় উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বাজারের আর দশটি পণ্য হইতে আলাদা। পণ্যস্বরূপ চিনি কিংবা তামাক আর বই কিংবা সংবাদপত্রে কিছু ফারাক আছে। বই কিংবা পত্রিকা হইতে আধুনিক যত ভাষার স্ফূর্তি আর তাহা হইতে সাহিত্য-বিশেষ উপন্যাস সাহিত্য-বিকাশ লাভ করিয়াছে। এই ছাপাখানার ফসল বা উপন্যাস হইতে জাতি নামক অলীক পদার্থের জন্ম হইয়াছে। সংক্ষেপে ইহাই অ্যান্ডারসনের দুই নম্বর আবিষ্কার। এই অর্থে তাঁহাকে ছাপাখানার দ্বিতীয় আবিষ্কারকর্তা বলিলে অন্যায় হইবে না।

ভদ্রলোকের তিন নম্বর একটা প্রস্তাবও আছে। তিনি মনে করেন, ‘জাতীয়তাবাদ’ বা জাতি পদার্থের অলীক মেজবান বা ভোজটা নিছক স্বাধীনতা ব্যবসায় (বা লিবারেলিজম) কিংবা সমাজতন্ত্র (বা মার্কসবাদ) প্রভৃতির ন্যায় রাজনৈতিক আদর্শ বা ধারণা মাত্র নহে। জাতি যে আবেগ তৈরি করে তাহার কারণে মানুষ জাতির জন্য নিঃশেষে প্রাণ দান করিতে উদ্যত হয়। অ্যান্ডারসনের তিন প্রস্তাবের মধ্যে এই শেষের প্রস্তাবটি আমার বিবেচনায় বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে। আমি ইহাকেই বলিয়াছি জাতির এক নম্বর পা অর্থাৎ সাকার জগত। অ্যান্ডারসন ইহাকেই আসলে ভর করিতেছেন। বলিতেছেন জাতি মাত্রই ‘অলীক সমাজ’ বিশেষ।

এক্ষণে আমি আর মাত্র দুইটি কথা যোগ করিব। বলিব পরিবার, গ্রাম, আর রাষ্ট্র-সকল ধরনের সমাজই-এক অর্থে অলীক বা সাকার সমাজ। কারণ ভাবের মধ্যস্থতা ছাড়া কোন রাষ্ট্র বা গ্রাম এমন কি পরিবারও গড়া যায় না। সাকার জগত মানুষের মানসলোকের প্রথম জগত। এই জগতের মধ্যে মানুষের কাছাকাছি যে সকল জীব বা প্রাণী বসবাস করে তাহারাও অংশীদার। তথাকথিত ‘মানবেতর’ প্রাণীও ইন্দ্রিয়শক্তির অধিকারী। তাঁহারাও আংশিক ভাববাদী-দড়ি দেখিলে সাপ মনে করে কিংবা সাপ দেখিলেই দৌড়াইয়া পলায়। এই স্বভাব তাহারা খানিকটা মানুষের সংসর্গে থাকার ফলেই হয়তো অর্জন করিয়াছে।

কিন্তু মানুষের আরেকটি জগতও আছে। এই জগতের নাম-জাক লাকাঁ যেমন রাখিয়াছেন-ভাষার বা আকারের জগত। আমি তাহার ব্যাখ্যা করিলাম প্রতীক জগত বা অকারণ জগত। ইংরেজি ভাষায় প্রতীকের পরিশব্দ ‘সিম্বল’। ইহা আসিয়াছে যে গ্রিক শব্দ হইতে তাহার একই বানান কিন্তু উচ্চারণ আলাদা। গ্রিকে প্রতীককে বলে ‘সুম্বল’ Szmbol)। আমাদের বাংলায় ইহার উচ্চারণ ‘সম্বল’। সুম্বল-সিম্বল-সম্বল কিন্তু একই পদের তিন রকম উচ্চারণ। চট্টগ্রামে যে ধরনের বিশেষ বাংলা ভাষায় আমি কথাবার্তা কহিয়া থাকি তাহাতে মোটামুটি গ্রিক উচ্চারণই বজায় রাখা হয়। আমরা বলি ‘সুম্বল’ অর্থাৎ অকারণ। যেমন, ‘তুমি কেন আমাকে অকারণে মারলে?’ এই বাক্যের চট্টগ্রামীন সংস্করণ হইতেছে, ‘তুঁই আঁরে সুম্বল্লাই মাইর গ কেয়া?’ এখানে ‘লাই’ মানে লাগিয়া। ‘সুম্বল্লাই’ মানে অকারণের লাগিয়া অর্থাৎ বিনা কারণে।

এই নিবন্ধ শেষ করিবার আগে বলি, জাতি আর পরিবারে ঢের প্রভেদ আছে। অনেকে জিনিশটা ধরিতে না পারিয়া ‘জাতির জনক’ প্রভৃতি পদের জন্ম দিয়াছেন। প্রকৃত প্রস্তাবে, খ্রিস্টীয় সতের-আঠার শতকের আগে রাজারাই ছিলেন প্রজাদের একাধারে প্রভু ও পিতা। দেশে দেশে ‘জাতি’ পদার্থ যখন জন্ম নিতেছিল তখন-ফরাশি দেশের কথাই ধরি না কেন-পিতার কর্তৃত্ব হ্রাস পাইতেছে। নতুন ফরাশি জাতির কোন পিতা ছিল না। স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী এখনও ফরাশি প্রজাতন্ত্রের শিয়রে শোভা পায়। তাহার উপরে যে মূর্তিটি বসানো হইয়াছে-আকেলমন্দ পাঠিকা দেখিবেন-তাহার আদল কিন্তু কোন এক নারীর। এক্ষণে কেহ কেহ সে দেশেও জাতির প্রতিষ্ঠাতা বা পিতা খুঁজিয়া বেড়াইতেছেন। একজনের নাম ‘ক্লোবিস’ (এই ক্লোবিস নাম হইতেই ফরাশিদের জনপ্রিয় ‘লুই’ নামটি আসিয়াছে)। ইনি প্রায় ১৫০০ বছর আগের লোক। এখানে বাকি ইতিহাস লিখিব না।

পরাধীনতার বিরুদ্ধে আমাদের দেশের মতো দেশে যে সকল দেশে সংগ্রাম অনুষ্ঠিত হইয়াছে অ্যান্ডারসন তাহাদের পিতৃত্বও দান করিয়াছেন এ সকল দেশকে যাহারা একদা গায়ের জোরে দখল করিয়া শাসন-অর্থাৎ দাস-করিয়াছিলেন তাহাদের। এয়ুরোপিয়া শিক্ষাদীক্ষা হইতে ভারত কি বাংলাদেশের নতুন জাতীয় নেতারা ‘জাতি’ কি পদার্থ তাহা জানিতে পারিয়াছেন। সুতরাং ব্রিটিশ শাসকেরাই এ দেশের জাতির পিতা-বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন দেখিলাম শেষমেষ ইহাই শিখাইতেছেন।

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখ হইতে বাংলাদেশে যে নয়া জাতির জন্ম হইয়াছে বলিয়া শোনা যায় তাহার উদাহরণ হইতে তৃতীয় একটি জগতের কথাও আমরা আমল করিতে পারি। সেই জগতের কথা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু তাহার নাম দেওয়া যায় কারণের জগত-অথবা-বলা যায়-‘নিরাকার’ জগত।

মানুষ মাত্রেই কোন না কোন ভাষায় কথা বলে। কিন্তু নানান দেশের মানুষ কথা বলে নানান ভাষায়। কেন? মানুষ মাত্রেই মরিবে। এই মৃত্যু মানুষকে নিরাকারও করিবে। মানুষ যে দেশে জন্মায় তাহার একটা রূপ আছে। সে কোন না কোন ভাষায় কথা বলে। তাহার প্রাণ গড়িয়ে পিটিয়ে ওঠে মানব সমাজেই। ছোট হোক বড় হোক সে সমাজে একটা বিধি থাকে। এই বিধির প্রথম পদ অন্তত আজ পর্যন্ত আমরা যতদূর জানি ‘পিতার নাম’। ‘পিতা’ নয়-আবার বলি-‘পিতার নাম’। এই নাম গ্রহণ করার জন্য পুরুষ হওয়া অনিবার্য নয়। মানুষ এই পিতৃনামের পরাক্রম হইতে পরিত্রাণ পায় না যদিও বা সে রক্তমাংসের পিতার প্রাণহানি পর্যন্ত করিতে পারে। সজীব পিতার তুলনায় নির্জীব পিতাই অধিক ক্ষমতা ধরেন-সিগমুন্ড ফ্রয়েড এই সত্যের প্রতিষ্ঠা দিয়াছেন।

‘জাতি’ পদার্থের গোড়ায় এই পিতার নাম বা বিধিই অকারণ জগতের প্রতিষ্ঠা দিয়াছে।

যদি ঘটনার শেষ এখানেই হইত, তবে গোটা মানবজাতির একটাই রাষ্ট্র থাকিত। ঘটনা আরো আছে। পিতৃনামের পরাক্রম হইতে মানুষ ছাড়া পায় না বলিয়াই সে নতুন নতুন জাতি তৈয়ার করিয়াছে। এই জগতের নাম আমি রাখিয়াছি ‘কারণের জগত’। এই জগতের সহিত মৃত্যুর যোগ। জীবনের চেয়েও মূল্যবান কোন পদার্থ? আপনি বলিবেন, ‘ভক্তি’। আমি বলিব, ‘স্বাধীনতা’। প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামই-যদি সফল হয়-নতুন জাতির জন্ম দেয়।

অ্যান্ডারসন সাহেব এই জগতের পরিচয় লাভ করেন নাই। তিনি বরং অকারণ (বা রিয়েল) জগতকে অলীক (বা ইমাজিনারি) জগতের সহিত গুলাইয়া ফেলিয়াছেন। হইতে পারে অ্যান্ডারসনের মতো পন্ডিতের কথা স্মরণ করিয়াই ভাববাদী জাক লাকাঁ কহিয়াছিলেন, ‘যাহারা প্রতারিত হয় নাই তাহারা ভুল করে’। ফরাশি ভাষায় ‘পিতার নাম’ এই পদযুগলের উচ্চারণ, হয় ‘লে নোঁ দু পের’। ইহার দুই রকম অর্থ হইতে পারে : ‘পিতার নাম (সমূহ)’ অথবা ‘পিতার নিষেধাজ্ঞা’। কেননা ফরাশি জবানে ‘নাম’ এবং ‘না’ দুই শব্দের একই উচ্চারণ-‘নোঁ’। ওস্তাদের প্রহার শেষ প্রহরে। জাক লাকাঁ বলিতেছেন, এই বাক্যের আরও এক উচ্চারণ আছে ‘লে নোঁ দুপ এর’। ইহার মানে আমি উপরে লিখিয়াছি-‘যাহারা প্রতারিত হয় না তাহারা ভুল করে’। মানুষ প্রতারিত হইবার জন্যই জাতি গঠন করে। আর যাহারা জাতি গঠন করিতে পারে নাই তাহারা হয়তো ভুলই করিয়াছে।

লেখক : শিক্ষাবিদ।

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর
বিএনপির ৫৫ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
বিএনপির ৫৫ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১০ মিনিট আগে | রাজনীতি

সকালে ডিম খাবেন কেন
সকালে ডিম খাবেন কেন

১০ মিনিট আগে | জীবন ধারা

টানা বর্ষণে ভিয়েতনামে ভয়াবহ বন্যা, ৪১ জনের প্রাণহানি
টানা বর্ষণে ভিয়েতনামে ভয়াবহ বন্যা, ৪১ জনের প্রাণহানি

১১ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সার বিতরণ-সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা বিষয়ে অবহিতকরণ সভা
সার বিতরণ-সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা বিষয়ে অবহিতকরণ সভা

২৩ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

তেঁতুলিয়ায় বাড়ছে শীতের দাপট, তাপমাত্রা ১৪.৯ ডিগ্রি
তেঁতুলিয়ায় বাড়ছে শীতের দাপট, তাপমাত্রা ১৪.৯ ডিগ্রি

২৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (২১ নভেম্বর)
একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (২১ নভেম্বর)

২৬ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যে দামে কেনা যাবে প্রতি ভরি স্বর্ণ
যে দামে কেনা যাবে প্রতি ভরি স্বর্ণ

২৬ মিনিট আগে | অর্থনীতি

ঢাকায় দিনভর থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া
ঢাকায় দিনভর থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া

২৯ মিনিট আগে | জাতীয়

নভেম্বরের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৪৫০০ কোটি টাকা
নভেম্বরের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৪৫০০ কোটি টাকা

৩৪ মিনিট আগে | অর্থনীতি

শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট ও দর্শনীয় স্থান বন্ধ
শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট ও দর্শনীয় স্থান বন্ধ

৩৫ মিনিট আগে | নগর জীবন

আজকের নামাজের সময়সূচি, ২১ নভেম্বর ২০২৫
আজকের নামাজের সময়সূচি, ২১ নভেম্বর ২০২৫

৩৭ মিনিট আগে | ইসলামী জীবন

ফের উত্তপ্ত নেপাল, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী সুশীলার
ফের উত্তপ্ত নেপাল, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী সুশীলার

৪৩ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

১৬ বছরের কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করল অস্ট্রেলিয়া
১৬ বছরের কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করল অস্ট্রেলিয়া

৫০ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যেসব খরচ বরকত বয়ে আনে
যেসব খরচ বরকত বয়ে আনে

৫৩ মিনিট আগে | ইসলামী জীবন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: মার্কিন শান্তি প্রস্তাব মানবে না ইউরোপ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: মার্কিন শান্তি প্রস্তাব মানবে না ইউরোপ

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

লাল পাহাড়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ভোটের উৎসব
লাল পাহাড়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ভোটের উৎসব

১ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পর শত শত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে
ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পর শত শত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর গুলিতে দুই সেনা নিহত
সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর গুলিতে দুই সেনা নিহত

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

লঙ্কানদের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেল জিম্বাবুয়ে
লঙ্কানদের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেল জিম্বাবুয়ে

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

রুশ হামলার একদিন পরেও নিখোঁজ ২২ : জেলেনস্কি
রুশ হামলার একদিন পরেও নিখোঁজ ২২ : জেলেনস্কি

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ
বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ

১ ঘণ্টা আগে | টেক ওয়ার্ল্ড

আজ সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া
আজ সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে ইসির সভা ৩০ নভেম্বর
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে ইসির সভা ৩০ নভেম্বর

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইসির ৯ কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন
ইসির ৯ কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

জাতির গর্বিত প্রতিষ্ঠান সশস্ত্র বাহিনী: তারেক রহমান
জাতির গর্বিত প্রতিষ্ঠান সশস্ত্র বাহিনী: তারেক রহমান

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

জাতিসংঘের কপ-৩০ জলবায়ু সম্মেলন ভেন‍্যুতে ভয়াবহ আগুন
জাতিসংঘের কপ-৩০ জলবায়ু সম্মেলন ভেন‍্যুতে ভয়াবহ আগুন

৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বিদেশে কর্মী পাঠাতে সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম ওইপি চালু
বিদেশে কর্মী পাঠাতে সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম ওইপি চালু

৭ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

অস্ট্রেলিয়ায় কার্যকর হতে যাচ্ছে শিশুদের ফেসবুক-টিকটক ব্যবহার বন্ধের আইন
অস্ট্রেলিয়ায় কার্যকর হতে যাচ্ছে শিশুদের ফেসবুক-টিকটক ব্যবহার বন্ধের আইন

৭ ঘণ্টা আগে | টেক ওয়ার্ল্ড

খতমে নবুয়ত ইমানের অংশ
খতমে নবুয়ত ইমানের অংশ

৭ ঘণ্টা আগে | ইসলামী জীবন

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতা
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতা

৭ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

সর্বাধিক পঠিত
ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার এমন রেকর্ড গড়লেন শাই হোপ
ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার এমন রেকর্ড গড়লেন শাই হোপ

১৯ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

ঢাকার যে আসনের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনলেন রিকশাচালক সুজন
ঢাকার যে আসনের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনলেন রিকশাচালক সুজন

১২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভারতের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
ভারতের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কে জয়ী, স্পষ্ট করল মার্কিন প্রতিবেদন
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কে জয়ী, স্পষ্ট করল মার্কিন প্রতিবেদন

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত হলো সংবিধানে, কার্যকর হবে ভবিষ্যতে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত হলো সংবিধানে, কার্যকর হবে ভবিষ্যতে

২২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাকরিচ্যুত
তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাকরিচ্যুত

২২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল
ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

১৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ
১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ

২০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মুশফিক ছাড়াও শততম টেস্টে শতক হাঁকিয়েছেন যারা
মুশফিক ছাড়াও শততম টেস্টে শতক হাঁকিয়েছেন যারা

২২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ৫ প্রতিশ্রুতি তারেক রহমানের
নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ৫ প্রতিশ্রুতি তারেক রহমানের

২১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

হাসিনা পালানোতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এলো : জয়নুল আবেদীন
হাসিনা পালানোতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এলো : জয়নুল আবেদীন

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, প্রতিক্রিয়ায় যা বললো জামায়াত
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, প্রতিক্রিয়ায় যা বললো জামায়াত

১৭ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

পুলিশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করবেন না : ডিএমপি কমিশনার
পুলিশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করবেন না : ডিএমপি কমিশনার

২০ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

অভ‍্যন্তরীণ ইস্যুতে কোনো দেশের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ: দিল্লিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা
অভ‍্যন্তরীণ ইস্যুতে কোনো দেশের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ: দিল্লিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

আন্দোলনরত ৮ দলের কর্মসূচিতে পরিবর্তন
আন্দোলনরত ৮ দলের কর্মসূচিতে পরিবর্তন

১৪ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় নিয়ে যা বললেন আমির খসরু
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় নিয়ে যা বললেন আমির খসরু

২০ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

শুক্রবার মামদানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প
শুক্রবার মামদানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আগামী ৩-৪ কার্যদিবসের মধ্যে গণভোট আইন করা হবে
আগামী ৩-৪ কার্যদিবসের মধ্যে গণভোট আইন করা হবে

১৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মোদিকে আরও একবার বোল্ড করলেন ট্রাম্প
মোদিকে আরও একবার বোল্ড করলেন ট্রাম্প

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সৌদি যুবরাজের অনুরোধ, সুদানের সংঘাত অবসান করতে চান ট্রাম্প
সৌদি যুবরাজের অনুরোধ, সুদানের সংঘাত অবসান করতে চান ট্রাম্প

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

শততম টেস্টে শতক হাঁকালেন মুশফিক
শততম টেস্টে শতক হাঁকালেন মুশফিক

২৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

৩৯ টাকা কেজিতে ধান, ৫০ টাকায় সিদ্ধ চাল কিনবে সরকার
৩৯ টাকা কেজিতে ধান, ৫০ টাকায় সিদ্ধ চাল কিনবে সরকার

১৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিহারে রেকর্ড গড়ে ১০ম বার মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নীতিশ কুমারের
বিহারে রেকর্ড গড়ে ১০ম বার মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নীতিশ কুমারের

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ভারতকে হারিয়ে ৯ বছরে সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ
ভারতকে হারিয়ে ৯ বছরে সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ

২৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ: এক নজরে সবকিছু
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ: এক নজরে সবকিছু

১৫ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ
মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ

১৮ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

জাতীয় পুনর্জাগরণের নেতা
জাতীয় পুনর্জাগরণের নেতা

২৩ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ হিসেবে সৌদিকে শ্রেণিকরণের তাৎপর্য কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ হিসেবে সৌদিকে শ্রেণিকরণের তাৎপর্য কী?

১৩ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন ও তার স্ত্রীর সম্পত্তি ক্রোক
সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন ও তার স্ত্রীর সম্পত্তি ক্রোক

১২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

প্রিন্ট সর্বাধিক
আবার জামায়াতের কঠোর সমালোচনা
আবার জামায়াতের কঠোর সমালোচনা

প্রথম পৃষ্ঠা

ফিতা কাটাই ভরসা
ফিতা কাটাই ভরসা

শোবিজ

নান্দনিক জাহাজ বানাচ্ছে বাংলাদেশ
নান্দনিক জাহাজ বানাচ্ছে বাংলাদেশ

পেছনের পৃষ্ঠা

মানুষ চ্যাপটা এবার চট্টগ্রামে
মানুষ চ্যাপটা এবার চট্টগ্রামে

প্রথম পৃষ্ঠা

সিলেটে পুরোনো কূপে নতুন করে মিলল গ্যাস
সিলেটে পুরোনো কূপে নতুন করে মিলল গ্যাস

পেছনের পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

ফিরল তত্ত্বাবধায়ক সরকার
ফিরল তত্ত্বাবধায়ক সরকার

প্রথম পৃষ্ঠা

সৌদিতে অপহরণ বাংলাদেশে মুক্তিপণ
সৌদিতে অপহরণ বাংলাদেশে মুক্তিপণ

পেছনের পৃষ্ঠা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ফের বসছে ইসি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ফের বসছে ইসি

পেছনের পৃষ্ঠা

সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ
সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ

প্রথম পৃষ্ঠা

না, আমাকে পয়সা দিতে হবে : ববিতা
না, আমাকে পয়সা দিতে হবে : ববিতা

শোবিজ

ক্যাপিটাল ড্রামার নাটক ‘ফার্স্ট লাভ’
ক্যাপিটাল ড্রামার নাটক ‘ফার্স্ট লাভ’

শোবিজ

তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন উপলক্ষে তথ্যচিত্র
তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন উপলক্ষে তথ্যচিত্র

শোবিজ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

খবর

দেশ এগোলে মা-বোনদের ভয় পেতে হবে না
দেশ এগোলে মা-বোনদের ভয় পেতে হবে না

প্রথম পৃষ্ঠা

বড়পর্দায় সাংবাদিক তিশা
বড়পর্দায় সাংবাদিক তিশা

শোবিজ

বিদেশি কোচদের অধীনে ভারত জয়
বিদেশি কোচদের অধীনে ভারত জয়

মাঠে ময়দানে

হাঙ্গেরির মঞ্চে বাংলাদেশি তাওসিফ
হাঙ্গেরির মঞ্চে বাংলাদেশি তাওসিফ

শোবিজ

ব্যাপক সাড়া পোস্টাল ভোটিং নিবন্ধনে
ব্যাপক সাড়া পোস্টাল ভোটিং নিবন্ধনে

পেছনের পৃষ্ঠা

হামজার শুভেচ্ছায় মুগ্ধ মুশফিক
হামজার শুভেচ্ছায় মুগ্ধ মুশফিক

মাঠে ময়দানে

রিকশাচালক সুজন কিনলেন এনসিপির মনোনয়নপত্র
রিকশাচালক সুজন কিনলেন এনসিপির মনোনয়নপত্র

পেছনের পৃষ্ঠা

মুশফিকের শততম টেস্টে লিটনেরও সেঞ্চুরি
মুশফিকের শততম টেস্টে লিটনেরও সেঞ্চুরি

মাঠে ময়দানে

প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল
প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

প্রথম পৃষ্ঠা

নির্বাচন নিয়ে নাগরিকদের মনে এখনো শঙ্কা
নির্বাচন নিয়ে নাগরিকদের মনে এখনো শঙ্কা

প্রথম পৃষ্ঠা

১০০-তে ১০০ মুশফিক
১০০-তে ১০০ মুশফিক

প্রথম পৃষ্ঠা

পুলিশের মনোবল ভাঙলে পাহারা দিতে হবে নিজেদের
পুলিশের মনোবল ভাঙলে পাহারা দিতে হবে নিজেদের

প্রথম পৃষ্ঠা

অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ চায় না বাংলাদেশ
অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ চায় না বাংলাদেশ

প্রথম পৃষ্ঠা

১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু
১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু

পেছনের পৃষ্ঠা

নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে কমনওয়েলথ মহাসচিব ঢাকায়
নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে কমনওয়েলথ মহাসচিব ঢাকায়

প্রথম পৃষ্ঠা

তিন-চার কর্মদিবসের মধ্যেই গণভোট আইন
তিন-চার কর্মদিবসের মধ্যেই গণভোট আইন

প্রথম পৃষ্ঠা