শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১

জাতি কি পদার্থ

সলিমুল্লাহ খান
প্রিন্ট ভার্সন
জাতি কি পদার্থ

বিগত ৭ই মার্চ তারিখে ধানমন্ডিতে অনুষ্ঠিত একটি ক্ষুদ্র পন্ডিত সমাবেশে আমি একটি আধঘণ্টার বক্তৃতা করার সুযোগ পাইয়াছিলাম। বক্তৃতা বিষয়-জাতি ও জাতীয়তাবাদ-নির্ধারণ করিয়াছিলেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ। সেই সমাবেশে আমি যে সকল কথা বলিতেছিলাম তাহার সহিত বলিতে পারি নাই এমন কিছু কথাও এখানে যোগ করিলাম। আমার বক্তৃতার শিরোনাম ছিল গালভরা-‘বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসনের লেখায় অলীক ও প্রতীক : স্বাধীনতার যুগে পরাধীনতার পুনরাবৃত্তি’।

মনে পড়িতেছে, ১৯৭১ সালের পর হইতে বাংলাদেশের কোন কোন লেখক আবিষ্কার করিয়াছিলেন ‘বাঙালী’ জাতির ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরের। কিছুদিন হইল শোনা যাইতেছে জাতিজ্ঞানে ‘বাঙালী’র বয়স মাত্র এক হাজার বছর। যদি তাহা না হইত, তবে ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী’ কথাটা কোন অর্থ বহন করিত না। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯১৬ সালে ‘বৌদ্ধগান ও দোহা’ প্রকাশের মুহূর্তে অবশ্য ‘হাজার বছরের পুরান বাঙ্গালা ভাষা’ কথাটি ব্যবহার করিতে ভোলেন নাই। আগের চার হাজার বছরের কি হইল তাহা লইয়া কাহাকেও বিশেষ মাথা ঘামাইতে দেখি নাই। অনেকেই-মনে হইতেছে-হাজার বছরে সিদ্ধ হইয়াছেন।

এই মনীষী সমাবেশেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সিদ্ধি অতুলনীয়। ১৯৩৮ সালের শেষভাগে সমাপ্ত ‘বাংলাভাষা-পরিচয়’ নামক কাহিনীতে তিনি লিখিয়াছিলেন, ‘এতকাল আমাদের যে বাঙালি বলা হয়েছে তার সংজ্ঞা হচ্ছে, আমরা বাংলা বলে থাকি। শাসনকর্তারা বাংলা প্রদেশের অংশ-প্রত্যংশ অন্য প্রদেশে জুড়ে দিয়েছেন, কিন্তু সরকারি দফতরের কাঁচিতে তার ভাষাটাকে ছেঁটে ফেলতে পারেননি।’ ঠাকুরের যুক্তি ছিল, বাংলাদেশের ভাষাই দেশের-যাহাকে বলে-ভাবমূর্তি বা ‘সাকার জগত’ তাহা গড়িয়াছে। তিনি বিশদ লিখিয়াছেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস খ-তার ইতিহাস। পূর্ববঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ, রাঢ় বরেন্দ্রের ভাগ কেবল ভূগোলের ভাগ নয়; অন্তরের ভাগও ছিল তার সঙ্গে জড়িয়ে। সমাজেরও মিল ছিল না। তবু এর মধ্যে যে ঐক্যের ধারা চলে এসেছে সে ভাষার ঐক্য নিয়ে।’

১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে নবগঠিত বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রও সেই খ-তার ইতিহাসটি অস্বীকার করে নাই। ১৯৭২ সালের সংবিধানে লেখা হইয়াছিল, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত হইবে (ক) ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা-ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা লইয়া পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল; এবং (খ) যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হইতে পারে।’ [অনুচ্ছেদ ২]

এই তো গেল গণপ্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার কথা। এক্ষণে নাগরিকত্বের কথা উঠিবে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে লেখা হইয়াছিল, ‘বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে; বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাঙালী বলিয়া পরিচিত হইবেন।’ [অনুচ্ছেদ ৬] আকেলমন্দ ব্যক্তি মাত্রেই লক্ষ করিয়াছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার মধ্যে প্রাপ্তব্য ১৯৩৮ সালের ‘বাঙালি’ আর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে উৎকীর্ণ ‘বাঙালী’ হুবহু এক পদার্থ নয়। ‘পদ’ (বানানের পরিবর্তন সত্ত্বেও) এক রহিয়াছে কিন্তু ‘পদার্থ’ আর এক রহিল না।

এই সত্যে সন্দিগ্ধ যাহারা তাহাদের কথা মনে রাখিয়াই কিনা জানি না, ১৯৭২ সালের সংবিধানের লেখকগণ পুনশ্চ লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন : ‘ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।’ [অনুচ্ছেদ ৯]

আকেলমন্দ ব্যক্তি মাত্রেই খেয়াল করিবেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যাহাকে বলিয়াছিলেন ‘ভাষার ঐক্য’, তাহা হইতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান খানিক তফাতে দাঁড়াইয়াছে। এক্ষণে ঐক্যের ভিত্তি হইয়াছে ‘ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম’ এবং ‘জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ’। স্পষ্ট করিয়াই বলা হইয়াছে, ‘সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।’

এখানে আমরা কি দেখিলাম? দেখিলাম বেশিদিনের কথা নয়-১৯৩৮ হইতে ১৯৭২-মাত্র এই ৩৪ বছরের ব্যবধানে ‘জাতি’ পদটির সংজ্ঞা বা পদার্থ ষোল আনা না হইলেও বারো আনাই বদলাইয়া গিয়াছে। এই জাতীয় ঘটনাকেই হয়তো লোকে বলে ইতিহাস। অনেক সময় নতুন নতুন ঘটনার জন্য মানুষ নতুন নতুন ‘পদ’ বা শব্দ তৈয়ার করে; কখনও বা পুরাতন পদের ভিতর নতুন পদার্থ ঢুকাইয়া দেয়। আমার দেখা চৌত্রিশ বছরের উদীয়মান ‘বাঙালী’ জাতি তাহার সামান্য প্রমাণ। প্রমাণ আরও ঢের পেশ করা যাইতে পারে।

এই সত্য সম্বল করিয়া কোন কোন পন্ডিত পাশ্চাত্য জগতে প্রচার করিয়াছেন-‘জাতি’ বলিয়া কোন পদার্থ আসলেই নাই। যদি বা থাকিয়া থাকে তাহা ‘নকল পদার্থ’ মাত্র। বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন নামক একজন খ্যাতিমান আধা-ইংরেজ আধা-আয়ার পন্ডিত ১৯৮৩ সালে ছাপা একটি ইংরেজি বইয়ের নামযোগেই এই ধারণার বহুল প্রচার করিয়াছিলেন। তাঁহার বইয়ের নাম ‘ইমাজিন্ড কমিউনিটি’। আমি তাহার বাংলা লিখিতেছি ‘সকল্প সমাজ’ অথবা ‘অলীক সমাজ’। ইহার নির্গলিতার্থ ‘যে সমাজ সমাজ নয়’ অর্থাৎ ‘নকল সমাজ’। যে পদার্থকে ‘জাতি’ পদের মধ্যে আমরা ধরিতেছি তাহা পিচ্ছিল সন্দেহ নাই। তবে প্রশ্ন হইতেছে, তাহা কতখানি অলীক পদার্থ। সবিনয়ে নিবেদন করি-অ্যান্ডারসন সাহেব ‘জাতি’ ঠিক কি পদার্থ তাহার গা দেখেন নাই, মাত্র একটি পা দেখিয়াছেন। ‘জাতি’ পদার্থের আরও দুইটি পা হয়তো আছে যাহা তিনি দেখিতে পান নাই। কাজী নজরুল ইসলামের সহিত ধুয়া ধরিতে ইচ্ছা হয় : দে জাতির গা ধুইয়ে!

‘জাতি’ নামক পদার্থের কমপক্ষে তিনটি পা (অর্থাৎ জগত) আছে। এক নম্বরে আছে ‘অলীক’ পা, যাহার অপর নাম ‘ভাবের জগত’ বা ‘সাকার জগত’। অ্যান্ডারসন ইহাকেই জড়াইয়া ধরিয়াছেন। কিন্তু তিনি বিস্মৃত হইয়াছেন যে জাতির আরও দুইটি পা আছে-একটির নাম ‘প্রতীক জগত’ বা ‘অকারণ জগত’ আর অন্যটির নাম ‘কারণ জগত’ বা ‘নিরাকার জগত’। প্রতীক বা অকারণ জগতের আকার আছে, তবে কারণ বা নিরাকার জগতের কোন আকার থাকে না।

জাতি তৈয়ার হইয়াছে এই তিন জগতের মিলনমেলায়। এই সত্য আমি দেখিতে পাইয়াছি ফরাশি দেশের ভাববাদী জাক লাকাঁর লেখায়। বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন অনেক লেখাপড়া শিখিয়াছেন-এমনকি জার্মান ভাববাদী বাহল্টার বেনিয়ামিনের দোহাই দিতেও তিনি নিরলস-কিন্তু তাঁহার লেখা তন্ন তন্ন করিয়াও জাক লাকাঁর লেখার সহিত তাঁহার বিশেষ পরিচয় আছে এমন মনে হইল না। না থাকিবার ফল হয়তো ভালোই হইয়াছে। নচেৎ তাঁহার ‘অলীক সমাজ’ বইটির এমন জগজ্জোড়া কাটতি হইত না।

অ্যান্ডারসনের বহিটি বাহির হইয়াছিল-আগেই উল্লেখ করিয়াছি-১৯৮৩ সালে। লেখক নিজেই জানাইতেছেন, ২০০৭ সালে তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বইটির একাধিক সংস্করণ তেত্রিশটি দেশের ঊনত্রিশটি ভাষায় প্রকাশিত হয়। ইংরেজি ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রায় আশি বছর বয়সে অ্যান্ডারসন পরলোকগমন করিয়াছেন। কিন্তু তাঁহার বইটি এখনও পুরোদমে জীবিত। সকলেই তাহার আলোচনা করিতেছেন। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগিবে বইটির এহেন জনপ্রিয়তার কারণ কি।

কয়েকটি কারণের কথা লেখক নিজেই নির্দেশ করিয়াছেন। ইংরেজ লেখকদের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে ‘জাতি’ পদার্থটা প্রথমেই তৈয়ার হইয়াছিল এয়ুরোপ মহাদেশে এবং পরে সেখান হইতেই পৃথিবীর বাদবাকি অংশে তাহার নকল রফতানি করা হইয়াছে। বেনিডিক্ট অ্যান্ডারসন বলিতে চাহেন, এই ধারণাটি ষোল আনা সত্য নহে। তাঁহার নিজের ধারণা, ‘জাতি’ পদার্থ এবং তাহার উপজাত ‘জাতীয়তাবাদ’ (বা সত্য বলিতে জাতি-ব্যবসায়ী রাষ্ট্র) প্রথমে উত্তর আর কিছু পরে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রস্তুত হইয়াছিল। এই অমৃতই পরে খোদ এয়ুরোপের লোকেরা আমদানি করে। পরিশেষে এয়ুরোপ হইতে এই ‘পদার্থ’ (ও-বলা বাহুল্য-তাহার ‘পদ’) দুনিয়ার আর আর দেশে বিস্তৃত হয়। অ্যান্ডারসনের কথা যদি আমি বড় একটা ভুল না বুঝিয়া থাকি তবে তাঁহার দাবি এই যে এয়ুরোপ হইতে দক্ষিণ, মধ্য, আর উত্তর আমেরিকায় যাহারা বসতি স্থাপন করিবার উদ্দেশ্যে গিয়াছিলেন-যাহারা ‘ক্রেয়োল’ বা সংকর অর্থাৎ ‘মিশ্র’ জাতীয়-তাহারাই জাতি নামক পদার্থের জনক। অ্যান্ডারসন আদেশ করিতেছেন, সাইমন বলিবার হইতে জর্জ ওয়াশিংটন প্রভৃতি ক্রেয়োল, সংকর, মিশ্র কিংবা নতুন জাতির নেতাকেই এই সংকর, ‘মিশ্র’ বা ‘ক্রেয়োল’ জাতিগুলির মুখপাত্র বলিয়া চেনা যায়।

এক্ষণে প্রশ্ন দাঁড়াইতেছে, এই ‘জাতি’ কথাটি ইঁহারা কোথা হইতে পাইলেন। অ্যান্ডারসন নিজেই দেখাইয়াছেন, উত্তর আমেরিকার ১৩টি উপনিবেশ যখন ১৭৭৬ সালের দিকে মাতৃভূমি ইংলন্ডের কাছে স্বাধীনতা দাবি করিল তখন কিন্তু উঁহাদের ঘোষণাপত্রে ‘জাতি’ (বা নেশন) শব্দটি স্থান পায় নাই। স্থান পাইয়াছিল ‘জনগণ’ (বা পিপল) শব্দটি। তবে এই ঘটনার এক যুগ পর-মানে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের ১৭৮৭ সালের মধ্যে রচিত সংবিধান বা গঠনতন্ত্রে-‘জাতি’ শব্দটি যেন বা উড়িয়া আসিয়া জুড়িয়া বসে। বলা বাহুল্য, এই শব্দটি তাঁহারা এয়ুরোপ মহাদেশের-তথা ফরাশি দেশের-ভাষা হইতেই কুড়াইয়া লইয়াছিলেন।

দেখা যাইতেছে, অ্যান্ডারসন নতুন করিয়া কলম্বাস সাজিলেন, জাতি নামক পদার্থ বা ‘অলীক সমাজ’ তিনি খুঁজিয়া পাইলেন কলম্বাস যেখানে থামিয়াছিলেন সেখানেই। মজার বিষয়, এই জাতির মধ্যে ঐসব দেশের পুরাতন অধিবাসীদের জায়গা মোটেও হয় নাই। এমন কি আফ্রিকা মহাদেশ হইতে ধরিয়া লইয়া যাওয়া দাসদেরও সেখানে পংক্তি দেওয়ার ফুরসৎ হয় নাই। অ্যান্ডারসন স্বীকার করিয়াছেন, নরগোষ্ঠীগত (বা এথনিক) কিংবা ভাষাগত ঐক্য দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকায় জন্ম লওয়া নতুন নতুন জাতির নতুন জাতীয় ধারণার ভিত্তি ছিল না। দেখা যাইতেছে, বাংলাদেশের সংবিধানে লিখিত ‘ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট’ হওয়ার গুণটা অ্যান্ডারসনের অভিধানে আদৌ অপরিহার্য গুণ নয়।

অ্যান্ডারসনের বইটির জনপ্রিয় হইবার আসল কারণটি মনে হইতেছে এখানে নহে, অন্যত্র পাওয়া যাইবে। তিনি মনে করেন, জাতি পদার্থ বা জাতীয়তাবাদের ব্যবসায় জগত জুড়িয়া ছড়াইয়া পড়িবার পিছনে একটি বস্তুগত ব্যাখ্যাও কার্যকর আছে। এই ব্যাখ্যা একই সঙ্গে ইতিহাসভিত্তিকও বটে। খ্রিস্টীয় ১৬ শতাব্দী হইতে এয়ুরোপে ছাপাখানার প্রসার ঘটিতে শুরু করিয়াছিল। এই ছাপাখানায় উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বাজারের আর দশটি পণ্য হইতে আলাদা। পণ্যস্বরূপ চিনি কিংবা তামাক আর বই কিংবা সংবাদপত্রে কিছু ফারাক আছে। বই কিংবা পত্রিকা হইতে আধুনিক যত ভাষার স্ফূর্তি আর তাহা হইতে সাহিত্য-বিশেষ উপন্যাস সাহিত্য-বিকাশ লাভ করিয়াছে। এই ছাপাখানার ফসল বা উপন্যাস হইতে জাতি নামক অলীক পদার্থের জন্ম হইয়াছে। সংক্ষেপে ইহাই অ্যান্ডারসনের দুই নম্বর আবিষ্কার। এই অর্থে তাঁহাকে ছাপাখানার দ্বিতীয় আবিষ্কারকর্তা বলিলে অন্যায় হইবে না।

ভদ্রলোকের তিন নম্বর একটা প্রস্তাবও আছে। তিনি মনে করেন, ‘জাতীয়তাবাদ’ বা জাতি পদার্থের অলীক মেজবান বা ভোজটা নিছক স্বাধীনতা ব্যবসায় (বা লিবারেলিজম) কিংবা সমাজতন্ত্র (বা মার্কসবাদ) প্রভৃতির ন্যায় রাজনৈতিক আদর্শ বা ধারণা মাত্র নহে। জাতি যে আবেগ তৈরি করে তাহার কারণে মানুষ জাতির জন্য নিঃশেষে প্রাণ দান করিতে উদ্যত হয়। অ্যান্ডারসনের তিন প্রস্তাবের মধ্যে এই শেষের প্রস্তাবটি আমার বিবেচনায় বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে। আমি ইহাকেই বলিয়াছি জাতির এক নম্বর পা অর্থাৎ সাকার জগত। অ্যান্ডারসন ইহাকেই আসলে ভর করিতেছেন। বলিতেছেন জাতি মাত্রই ‘অলীক সমাজ’ বিশেষ।

এক্ষণে আমি আর মাত্র দুইটি কথা যোগ করিব। বলিব পরিবার, গ্রাম, আর রাষ্ট্র-সকল ধরনের সমাজই-এক অর্থে অলীক বা সাকার সমাজ। কারণ ভাবের মধ্যস্থতা ছাড়া কোন রাষ্ট্র বা গ্রাম এমন কি পরিবারও গড়া যায় না। সাকার জগত মানুষের মানসলোকের প্রথম জগত। এই জগতের মধ্যে মানুষের কাছাকাছি যে সকল জীব বা প্রাণী বসবাস করে তাহারাও অংশীদার। তথাকথিত ‘মানবেতর’ প্রাণীও ইন্দ্রিয়শক্তির অধিকারী। তাঁহারাও আংশিক ভাববাদী-দড়ি দেখিলে সাপ মনে করে কিংবা সাপ দেখিলেই দৌড়াইয়া পলায়। এই স্বভাব তাহারা খানিকটা মানুষের সংসর্গে থাকার ফলেই হয়তো অর্জন করিয়াছে।

কিন্তু মানুষের আরেকটি জগতও আছে। এই জগতের নাম-জাক লাকাঁ যেমন রাখিয়াছেন-ভাষার বা আকারের জগত। আমি তাহার ব্যাখ্যা করিলাম প্রতীক জগত বা অকারণ জগত। ইংরেজি ভাষায় প্রতীকের পরিশব্দ ‘সিম্বল’। ইহা আসিয়াছে যে গ্রিক শব্দ হইতে তাহার একই বানান কিন্তু উচ্চারণ আলাদা। গ্রিকে প্রতীককে বলে ‘সুম্বল’ Szmbol)। আমাদের বাংলায় ইহার উচ্চারণ ‘সম্বল’। সুম্বল-সিম্বল-সম্বল কিন্তু একই পদের তিন রকম উচ্চারণ। চট্টগ্রামে যে ধরনের বিশেষ বাংলা ভাষায় আমি কথাবার্তা কহিয়া থাকি তাহাতে মোটামুটি গ্রিক উচ্চারণই বজায় রাখা হয়। আমরা বলি ‘সুম্বল’ অর্থাৎ অকারণ। যেমন, ‘তুমি কেন আমাকে অকারণে মারলে?’ এই বাক্যের চট্টগ্রামীন সংস্করণ হইতেছে, ‘তুঁই আঁরে সুম্বল্লাই মাইর গ কেয়া?’ এখানে ‘লাই’ মানে লাগিয়া। ‘সুম্বল্লাই’ মানে অকারণের লাগিয়া অর্থাৎ বিনা কারণে।

এই নিবন্ধ শেষ করিবার আগে বলি, জাতি আর পরিবারে ঢের প্রভেদ আছে। অনেকে জিনিশটা ধরিতে না পারিয়া ‘জাতির জনক’ প্রভৃতি পদের জন্ম দিয়াছেন। প্রকৃত প্রস্তাবে, খ্রিস্টীয় সতের-আঠার শতকের আগে রাজারাই ছিলেন প্রজাদের একাধারে প্রভু ও পিতা। দেশে দেশে ‘জাতি’ পদার্থ যখন জন্ম নিতেছিল তখন-ফরাশি দেশের কথাই ধরি না কেন-পিতার কর্তৃত্ব হ্রাস পাইতেছে। নতুন ফরাশি জাতির কোন পিতা ছিল না। স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী এখনও ফরাশি প্রজাতন্ত্রের শিয়রে শোভা পায়। তাহার উপরে যে মূর্তিটি বসানো হইয়াছে-আকেলমন্দ পাঠিকা দেখিবেন-তাহার আদল কিন্তু কোন এক নারীর। এক্ষণে কেহ কেহ সে দেশেও জাতির প্রতিষ্ঠাতা বা পিতা খুঁজিয়া বেড়াইতেছেন। একজনের নাম ‘ক্লোবিস’ (এই ক্লোবিস নাম হইতেই ফরাশিদের জনপ্রিয় ‘লুই’ নামটি আসিয়াছে)। ইনি প্রায় ১৫০০ বছর আগের লোক। এখানে বাকি ইতিহাস লিখিব না।

পরাধীনতার বিরুদ্ধে আমাদের দেশের মতো দেশে যে সকল দেশে সংগ্রাম অনুষ্ঠিত হইয়াছে অ্যান্ডারসন তাহাদের পিতৃত্বও দান করিয়াছেন এ সকল দেশকে যাহারা একদা গায়ের জোরে দখল করিয়া শাসন-অর্থাৎ দাস-করিয়াছিলেন তাহাদের। এয়ুরোপিয়া শিক্ষাদীক্ষা হইতে ভারত কি বাংলাদেশের নতুন জাতীয় নেতারা ‘জাতি’ কি পদার্থ তাহা জানিতে পারিয়াছেন। সুতরাং ব্রিটিশ শাসকেরাই এ দেশের জাতির পিতা-বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন দেখিলাম শেষমেষ ইহাই শিখাইতেছেন।

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখ হইতে বাংলাদেশে যে নয়া জাতির জন্ম হইয়াছে বলিয়া শোনা যায় তাহার উদাহরণ হইতে তৃতীয় একটি জগতের কথাও আমরা আমল করিতে পারি। সেই জগতের কথা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু তাহার নাম দেওয়া যায় কারণের জগত-অথবা-বলা যায়-‘নিরাকার’ জগত।

মানুষ মাত্রেই কোন না কোন ভাষায় কথা বলে। কিন্তু নানান দেশের মানুষ কথা বলে নানান ভাষায়। কেন? মানুষ মাত্রেই মরিবে। এই মৃত্যু মানুষকে নিরাকারও করিবে। মানুষ যে দেশে জন্মায় তাহার একটা রূপ আছে। সে কোন না কোন ভাষায় কথা বলে। তাহার প্রাণ গড়িয়ে পিটিয়ে ওঠে মানব সমাজেই। ছোট হোক বড় হোক সে সমাজে একটা বিধি থাকে। এই বিধির প্রথম পদ অন্তত আজ পর্যন্ত আমরা যতদূর জানি ‘পিতার নাম’। ‘পিতা’ নয়-আবার বলি-‘পিতার নাম’। এই নাম গ্রহণ করার জন্য পুরুষ হওয়া অনিবার্য নয়। মানুষ এই পিতৃনামের পরাক্রম হইতে পরিত্রাণ পায় না যদিও বা সে রক্তমাংসের পিতার প্রাণহানি পর্যন্ত করিতে পারে। সজীব পিতার তুলনায় নির্জীব পিতাই অধিক ক্ষমতা ধরেন-সিগমুন্ড ফ্রয়েড এই সত্যের প্রতিষ্ঠা দিয়াছেন।

‘জাতি’ পদার্থের গোড়ায় এই পিতার নাম বা বিধিই অকারণ জগতের প্রতিষ্ঠা দিয়াছে।

যদি ঘটনার শেষ এখানেই হইত, তবে গোটা মানবজাতির একটাই রাষ্ট্র থাকিত। ঘটনা আরো আছে। পিতৃনামের পরাক্রম হইতে মানুষ ছাড়া পায় না বলিয়াই সে নতুন নতুন জাতি তৈয়ার করিয়াছে। এই জগতের নাম আমি রাখিয়াছি ‘কারণের জগত’। এই জগতের সহিত মৃত্যুর যোগ। জীবনের চেয়েও মূল্যবান কোন পদার্থ? আপনি বলিবেন, ‘ভক্তি’। আমি বলিব, ‘স্বাধীনতা’। প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামই-যদি সফল হয়-নতুন জাতির জন্ম দেয়।

অ্যান্ডারসন সাহেব এই জগতের পরিচয় লাভ করেন নাই। তিনি বরং অকারণ (বা রিয়েল) জগতকে অলীক (বা ইমাজিনারি) জগতের সহিত গুলাইয়া ফেলিয়াছেন। হইতে পারে অ্যান্ডারসনের মতো পন্ডিতের কথা স্মরণ করিয়াই ভাববাদী জাক লাকাঁ কহিয়াছিলেন, ‘যাহারা প্রতারিত হয় নাই তাহারা ভুল করে’। ফরাশি ভাষায় ‘পিতার নাম’ এই পদযুগলের উচ্চারণ, হয় ‘লে নোঁ দু পের’। ইহার দুই রকম অর্থ হইতে পারে : ‘পিতার নাম (সমূহ)’ অথবা ‘পিতার নিষেধাজ্ঞা’। কেননা ফরাশি জবানে ‘নাম’ এবং ‘না’ দুই শব্দের একই উচ্চারণ-‘নোঁ’। ওস্তাদের প্রহার শেষ প্রহরে। জাক লাকাঁ বলিতেছেন, এই বাক্যের আরও এক উচ্চারণ আছে ‘লে নোঁ দুপ এর’। ইহার মানে আমি উপরে লিখিয়াছি-‘যাহারা প্রতারিত হয় না তাহারা ভুল করে’। মানুষ প্রতারিত হইবার জন্যই জাতি গঠন করে। আর যাহারা জাতি গঠন করিতে পারে নাই তাহারা হয়তো ভুলই করিয়াছে।

লেখক : শিক্ষাবিদ।

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর
সার্টিফিকেট জটিলতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রফতানি বন্ধ
সার্টিফিকেট জটিলতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রফতানি বন্ধ

২ সেকেন্ড আগে | দেশগ্রাম

রুমায় পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ি উল্টে আহত ১১
রুমায় পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ি উল্টে আহত ১১

৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ
মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ

১৩ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৪
রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৪

১৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ বালুমহালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ বালুমহালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা

২৩ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

লামায় সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত
লামায় সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত

৩৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

শনিবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
শনিবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

৩৫ মিনিট আগে | জাতীয়

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

৪৪ মিনিট আগে | জাতীয়

দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন গিল!
দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন গিল!

৫৭ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

হাসিনা পালানোতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এলো : জয়নুল আবেদীন
হাসিনা পালানোতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এলো : জয়নুল আবেদীন

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার এমন রেকর্ড গড়লেন শাই হোপ
ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার এমন রেকর্ড গড়লেন শাই হোপ

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ ছাত্রদলের
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ ছাত্রদলের

১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

মোংলায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহায়তা
মোংলায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহায়তা

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

পুলিশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করবেন না : ডিএমপি কমিশনার
পুলিশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করবেন না : ডিএমপি কমিশনার

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

সালমানের বাড়িতে গুলি চালানো আনমোল বিষ্ণোই গ্রেফতার
সালমানের বাড়িতে গুলি চালানো আনমোল বিষ্ণোই গ্রেফতার

১ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক ব্যবস্থা : অ্যাটর্নি জেনারেল
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক ব্যবস্থা : অ্যাটর্নি জেনারেল

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে চাই : আসিফ
শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে চাই : আসিফ

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

গাজায় ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দিবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
গাজায় ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দিবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

টাইপ ২ ডায়াবেটিস এক দিনে হয় না, নিঃশব্দেই বাড়ে ঝুঁকি
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এক দিনে হয় না, নিঃশব্দেই বাড়ে ঝুঁকি

১ ঘণ্টা আগে | হেলথ কর্নার

অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে কার বিপক্ষে
অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে কার বিপক্ষে

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ
১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গ্যাসের চাপ কম থাকবে
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গ্যাসের চাপ কম থাকবে

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় নিয়ে যা বললেন আমির খসরু
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় নিয়ে যা বললেন আমির খসরু

২ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

মার্কিন নির্বাচনে হামলার পরিকল্পনায় আফগান নাগরিকের ১৫ বছরের দণ্ড
মার্কিন নির্বাচনে হামলার পরিকল্পনায় আফগান নাগরিকের ১৫ বছরের দণ্ড

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ রপ্তানি বন্ধ
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ রপ্তানি বন্ধ

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ৫ প্রতিশ্রুতি তারেক রহমানের
নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ৫ প্রতিশ্রুতি তারেক রহমানের

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

‘শততম’ ম্যাচে শতক হাঁকালেন লিটনও
‘শততম’ ম্যাচে শতক হাঁকালেন লিটনও

২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

তারেক রহমান : ভিশনারি রাজনীতিক
তারেক রহমান : ভিশনারি রাজনীতিক

২ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

শুক্রবার মামদানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প
শুক্রবার মামদানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

জবির নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা
জবির নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা

৩ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

সর্বাধিক পঠিত
দেশজুড়ে মোবাইল ফোন বিক্রির সব দোকান বন্ধের ঘোষণা
দেশজুড়ে মোবাইল ফোন বিক্রির সব দোকান বন্ধের ঘোষণা

২৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

লাশ পোড়ানোর মামলায় ক্ষমা চেয়ে জবানবন্দি দিলেন রাজসাক্ষী আবজালুল
লাশ পোড়ানোর মামলায় ক্ষমা চেয়ে জবানবন্দি দিলেন রাজসাক্ষী আবজালুল

২০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা নিয়ে সচিবদের সঙ্গে বসছে কমিশন
নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা নিয়ে সচিবদের সঙ্গে বসছে কমিশন

২১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত হলো সংবিধানে, কার্যকর হবে ভবিষ্যতে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত হলো সংবিধানে, কার্যকর হবে ভবিষ্যতে

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভারতের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
ভারতের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কারাগারে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদ
কারাগারে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদ

১৮ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাকরিচ্যুত
তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাকরিচ্যুত

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিশ্বকাপের এক গ্রুপে রাখা হলো না ভারত-পাকিস্তানকে
বিশ্বকাপের এক গ্রুপে রাখা হলো না ভারত-পাকিস্তানকে

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ
টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ

১১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মুশফিক ছাড়াও শততম টেস্টে শতক হাঁকিয়েছেন যারা
মুশফিক ছাড়াও শততম টেস্টে শতক হাঁকিয়েছেন যারা

৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

নির্বাচনে মিজানুর রহমান আজহারীর প্রার্থী হওয়ার খবর সঠিক নয় : জামায়াত
নির্বাচনে মিজানুর রহমান আজহারীর প্রার্থী হওয়ার খবর সঠিক নয় : জামায়াত

১৮ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

অজিত দোভালকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালেন খলিলুর রহমান
অজিত দোভালকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালেন খলিলুর রহমান

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শততম টেস্টে সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে মুশফিক, বাড়ল অপেক্ষা
শততম টেস্টে সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে মুশফিক, বাড়ল অপেক্ষা

২১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

কারচুপির অভিযোগ এনে মিস ইউনিভার্স ছাড়লেন দুই বিচারক
কারচুপির অভিযোগ এনে মিস ইউনিভার্স ছাড়লেন দুই বিচারক

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

রোজ গার্ডেন কিনে ক্ষতি ৩৩২ কোটি, অনুসন্ধানে দুদক
রোজ গার্ডেন কিনে ক্ষতি ৩৩২ কোটি, অনুসন্ধানে দুদক

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

দেশে থেকেই কার্ড দিয়ে বিদেশি রুটের বিমানের টিকিট কেনা যাবে
দেশে থেকেই কার্ড দিয়ে বিদেশি রুটের বিমানের টিকিট কেনা যাবে

১৮ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

পল্লবীতে যুবদল নেতা হত্যা, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
পল্লবীতে যুবদল নেতা হত্যা, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার

২৩ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ
১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয়: জাতিসংঘে বাংলাদেশ

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ৫ প্রতিশ্রুতি তারেক রহমানের
নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ৫ প্রতিশ্রুতি তারেক রহমানের

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফের চালু করবে জাপান
বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফের চালু করবে জাপান

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইন্দোনেশিয়ায় জেগে উঠল আগ্নেয়গিরি, সর্বোচ্চ সতর্কতা
ইন্দোনেশিয়ায় জেগে উঠল আগ্নেয়গিরি, সর্বোচ্চ সতর্কতা

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দিল্লি বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা কী বলছে
দিল্লি বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা কী বলছে

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সৌদি যুবরাজের অনুরোধ, সুদানের সংঘাত অবসান করতে চান ট্রাম্প
সৌদি যুবরাজের অনুরোধ, সুদানের সংঘাত অবসান করতে চান ট্রাম্প

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

শততম টেস্টে শতক হাঁকালেন মুশফিক
শততম টেস্টে শতক হাঁকালেন মুশফিক

৪ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

৭ বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা ৮ দলের
৭ বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা ৮ দলের

১৫ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে নতুন পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে নতুন পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মোদির পা ছুঁয়ে প্রণাম ঐশ্বরিয়ার
মোদির পা ছুঁয়ে প্রণাম ঐশ্বরিয়ার

১৯ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

শুক্রবার মামদানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প
শুক্রবার মামদানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

একজন নয়, প্রতি ভোটকেন্দ্রে পাঁচজন সেনাসদস্য চায় জামায়াত
একজন নয়, প্রতি ভোটকেন্দ্রে পাঁচজন সেনাসদস্য চায় জামায়াত

২৩ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আগামীকাল
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আগামীকাল

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

প্রিন্ট সর্বাধিক
রিভিউ হচ্ছে প্রার্থী তালিকা
রিভিউ হচ্ছে প্রার্থী তালিকা

প্রথম পৃষ্ঠা

ইতালি যাওয়ার পথে গুলি করে হত্যা তিনজনকে
ইতালি যাওয়ার পথে গুলি করে হত্যা তিনজনকে

পেছনের পৃষ্ঠা

বিজনেস ভিসা ফের চালু ভারতের
বিজনেস ভিসা ফের চালু ভারতের

পেছনের পৃষ্ঠা

একটি জন্মদিন, একটি মৃত্যুদণ্ডের রায় ও আগামীর বাংলাদেশ
একটি জন্মদিন, একটি মৃত্যুদণ্ডের রায় ও আগামীর বাংলাদেশ

সম্পাদকীয়

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

যে জয় শিরোপার চেয়ে দামি
যে জয় শিরোপার চেয়ে দামি

মাঠে ময়দানে

তারেক রহমানের জন্মদিন আজ
তারেক রহমানের জন্মদিন আজ

প্রথম পৃষ্ঠা

বিএনপি জামায়াতের জমজমাট প্রচার
বিএনপি জামায়াতের জমজমাট প্রচার

পেছনের পৃষ্ঠা

আস্থার বাতিঘর তারেক রহমান
আস্থার বাতিঘর তারেক রহমান

সম্পাদকীয়

শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সহায়তা প্রয়োজন সেনাবাহিনীর
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সহায়তা প্রয়োজন সেনাবাহিনীর

প্রথম পৃষ্ঠা

হারিয়ে গেছে আগারগাঁওয়ের সেই সাইকেল লেন
হারিয়ে গেছে আগারগাঁওয়ের সেই সাইকেল লেন

রকমারি নগর পরিক্রমা

শ্বেতপত্রের ক্ষেত্রে উপদেষ্টামণ্ডলী উৎসাহিত হননি
শ্বেতপত্রের ক্ষেত্রে উপদেষ্টামণ্ডলী উৎসাহিত হননি

প্রথম পৃষ্ঠা

মান ঠিক রাখতে গিয়ে কমেছে উৎপাদন
মান ঠিক রাখতে গিয়ে কমেছে উৎপাদন

পেছনের পৃষ্ঠা

রং বদলাচ্ছে স্থলপদ্ম
রং বদলাচ্ছে স্থলপদ্ম

পেছনের পৃষ্ঠা

খাদে পড়ে আছে সাকুরা পরিবহন
খাদে পড়ে আছে সাকুরা পরিবহন

পেছনের পৃষ্ঠা

ফ্যাসিস্টের দোসর ট্যাগের প্রবণতা বেড়েছে
ফ্যাসিস্টের দোসর ট্যাগের প্রবণতা বেড়েছে

নগর জীবন

রাজনৈতিক পরিচয়ে অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজি
রাজনৈতিক পরিচয়ে অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজি

প্রথম পৃষ্ঠা

ভারতের বিপক্ষে জয়ে জাতীয় দলকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
ভারতের বিপক্ষে জয়ে জাতীয় দলকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

মাঠে ময়দানে

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরাট চুক্তি সৌদির
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরাট চুক্তি সৌদির

প্রথম পৃষ্ঠা

নিরপেক্ষ ভোটের প্রতিশ্রুতিতে অটল
নিরপেক্ষ ভোটের প্রতিশ্রুতিতে অটল

প্রথম পৃষ্ঠা

দিল্লিতে বৈঠক হলো দুই নিরাপত্তা উপদেষ্টার
দিল্লিতে বৈঠক হলো দুই নিরাপত্তা উপদেষ্টার

প্রথম পৃষ্ঠা

আইন লঙ্ঘন করে রেলে দরপত্র
আইন লঙ্ঘন করে রেলে দরপত্র

নগর জীবন

গণ অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারকে চিকিৎসা দেবে আমরা বিএনপি পরিবার
গণ অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারকে চিকিৎসা দেবে আমরা বিএনপি পরিবার

নগর জীবন

আতঙ্কের নাম বাস
আতঙ্কের নাম বাস

রকমারি নগর পরিক্রমা

অক্টোবরে সড়কে নিহত ৪৪১ জন
অক্টোবরে সড়কে নিহত ৪৪১ জন

পেছনের পৃষ্ঠা

পরোপকারী মুন্না এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
পরোপকারী মুন্না এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে

পেছনের পৃষ্ঠা

জামায়াত আমিরের সঙ্গে বৈঠক ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের
জামায়াত আমিরের সঙ্গে বৈঠক ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের

প্রথম পৃষ্ঠা

রাজসাক্ষীর রোমহর্ষক জবানবন্দি
রাজসাক্ষীর রোমহর্ষক জবানবন্দি

পেছনের পৃষ্ঠা

রোজ গার্ডেন কেনায় ৩৩২ কোটি টাকা ক্ষতি
রোজ গার্ডেন কেনায় ৩৩২ কোটি টাকা ক্ষতি

পেছনের পৃষ্ঠা

আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা
আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা

পেছনের পৃষ্ঠা