বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাকে সব কার্যক্রম থেকে অপসারণ ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী সমাজ নামের একটি প্ল্যাটফরম। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান। সংবাদ সম্মেলনে কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী প্রকৌশলী মোতাহার হোসাইন, চুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী তানবিরুল হাসান তমাল, ডুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান বলেন, কুয়েটের তৎকালীন ভিসি ড. নওশের আলী মোড়লকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় ভিসির বাসভবনের সামনে অসম্মান ও অপমানজনক মাইকিংসহ নানানভাবে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে মেয়াদ সম্পন্ন হওয়ার আগেই পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন অধ্যাপক ড. আলমগীর। এরপর ড. আলমগীর রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে দুই মেয়াদে কুয়েটের ভিসির দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে কুয়েটের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসকে নোংরা রাজনীতি ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করা হয়। তিনি দায়িত্বপালনের শুরু থেকেই ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য কুয়েটে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করেন এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিতে থাকেন। তার পৃষ্ঠপোশকতায় ছাত্রলীগ কুয়েট ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। হলের সিট বাণিজ্য, ডাইনিং হলের খাবার বাণিজ্য, টর্চার সেল গঠন, র্যাগিং, টেন্ডার ও কমিশন বাণিজ্য, শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য, সাধারণ ছাত্র, এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বহিরাগত ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন ও মারধর করান। তার ইন্ধনে ছাত্র কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুজন শিক্ষকের মৃত্যু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের বিরোধিতা ও আন্দোলন দমনের চক্রান্ত ইত্যাদি অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।
ইউজিসির সদস্য হিসেবেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনেন তারা। বক্তারা বলেন, নানা অনিয়মে জড়িত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে ইউজিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা অনাকাক্সিক্ষত। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও ইউজিসির সম্মান রক্ষার্থে অবিলম্বে ইউজিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব এবং কুয়েটের শিক্ষক পদসহ সব কার্যক্রম থেকে অপসারণ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়।