এয়ারলাইনস থেকে শুরু করে ট্রাভেল এজেন্সি ও রিসোর্ট সবকিছুতেই ছাড়। পর্যটক টানতে এমন আকর্ষণীয় সুযোগ গ্রহণে ভ্রমণপিপাসু মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল ১১তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের শেষ দিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) পুষ্পগুচ্ছ হলে।
মেলায় আগত দর্শনার্থীরা জানান, পর্যটন মৌসুম সামনে রেখে এ ধরনের মেলায় অনেক রকম ছাড় ও অফার থাকে। সে সুযোগ নিতেই তারা এখানে এসেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলায় আসন্ন পর্যটন মৌসুমে দেশ ও বিদেশে বেড়ানোর বিভিন্ন আকর্ষণীয় ভ্রমণ অফার, হোটেল, রিসোর্ট বা প্যাকেজ বুকিংসহ বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। সকাল থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষের ভিড়। স্টলে স্টলে ঘুরছেন আর দেখছেন। মেলায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন এয়ারলাইনস ও ট্রাভেল এজেন্সি নানা ছাড়ের সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। রামপুরা থেকে মেলায় আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য এ ধরনের মেলা খুবই কার্যকর। অন্যান্য সময় সে রকম ছাড় না পেলেও মেলা হলেই কিছু না কিছু ছাড় আসে। ছাড়ের সুযোগে যে পরিমাণ পর্যটক অন্যান্য সময় থাকে তার চাইতে বেশি আসে এ সময়টাতে। জাকির হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, মেলা হলেই ছাড় পাওয়া যায়। এয়ারলাইনসগুলো যেমন ছাড় দেয়, ট্রাভেল এজেন্সিরাও নানা ধরনের প্যাকেজ ছাড় দেয়। এটি আমাদের মতো পর্যটকদের জন্য খুব কাজে লাগে। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় পর্যটন বিচিত্রার আয়োজনে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশের সহযোগিতায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ মালদ্বীপ, চায়না, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভুটান, সিঙ্গাপুরের শতাধিক পর্যটন সংস্থা অংশ নেয়। মেলা বৈচিত্র্যময় করার জন্য আয়োজিত হয় পর্যটনবিষয়ক সেমিনার, শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) মিটিং। মেলার প্রতিদিন সন্ধ্যায় ছিল চায়না, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
মেলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কমার্শিয়াল সুপারভাইজার হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মেলায় আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। মেলায় আজ ১ কোটি টাকার টিকিট সেল হয়েছে। মেলাকেন্দ্রিক ক্যাম্পেইনে আমাদের প্রায় ১ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। ট্যুরিজম মেলার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষিত হয়েছে। কম খরচে ভ্রমণ করতে বিমানের প্রতি মানুষ আকর্ষিত হচ্ছে। এ ছাড়া ১৫ শতাংশ ছাড়ের কারণে টিকিট বিক্রি বেড়েছে।’ মেলার মাধ্যমে দেশের স্থবির পর্যটন শিল্পের দ্বার উন্মোচন হয়েছে জানিয়ে পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক ও এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, ‘দেশের চলমান স্থবির অবস্থা থেকে মানুষকে পর্যটনে আকর্ষণ বাড়াতে পর্যটন খাতের জন্য এক নতুন দিগন্ত তৈরি হয়েছে এ মেলার মাধ্যমে। এ ধরনের ফেয়ার দেশের পর্যটন খাত আরও এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এতে দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পট সম্পর্কে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং পর্যটকদের আগমন বাড়বে। এ মেলাকে পর্যটন খাতের সবাই নতুন করে স্টার্টআপ হিসেবে দেখছেন। ৬০ জন বিদেশি ডেলিগেট আমাদের এ মেলায় অংশ নিয়েছেন। তাঁরা আমাদের মেলা নিয়ে অনেক বেশি পজিটিভ। তাঁরা যখন এ বার্তা তাঁদের দেশে গিয়ে দেবেন, তখন সেটা আমাদের জন্য খুব বেশি অনুপ্রাণিত করবে। একই সঙ্গে বিদেশি পর্যটকদের আমাদের দেশে আসার জন্য আকৃষ্ট করবে। সামগ্রিকভাবে বললে আমাদের এবারের মেলায় ১০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছেন।’