রাজবাড়ী পৌরসভার বেশির ভাগ রাস্তাই এখন বেহাল। এ কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পৌরবাসীসহ লক্ষাধিক নাগরিককে। বছরের পর বছর সংস্কারের আশ্বাসেও মেলেনি সমাধান।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় শহরের বেশির ভাগ রাস্তার এ অবস্থা। শহরের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়ক, শিশু পরিবার সড়ক, ভবানীপুর সড়ক, ড্রাইআইচ ফ্যাক্টরি সড়ক, বিনোদপুর ভাজনচলা সড়ক, ভকেশনাল সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে জমে থাকে পানি। বেশি বৃষ্টি হলে রাস্তাগুলো তলিয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় সড়কে যান চলাচল। হাসপাতাল সড়ক দিয়ে রোগী ও স্বজনরা যাতায়াত করেন। রাস্তার কারণে অনেকেই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শহরে প্রবেশের দুই লেনের সড়কের বেশির ভাগ স্থান ভেঙে গেছে। রাজবাড়ী পৌরসভার তথ্যমতে, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১০৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। ৫ বছর আগে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকটি রাস্তা সংস্কার করা হয়। নতুন নির্মাণ করা রাস্তাগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন। ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারে প্রয়োজন প্রায় ৭০ কোটি টাকা। পাবলিক হেলথ থেকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সড়কে বড় বড় গর্ত। একাধিক স্থানে লাল নিশান টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজবাড়ী বাজার থেকে দাদশি ইউনিয়নে যাওয়ার পথে ২ কিলোমিটার সড়কজুড়ে ছোট-বড় গর্ত। দু-এক জায়গায় ইট দিয়ে কোনোমতে যানবাহন চলাচল সচল রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও খোয়া উঠে মাটি বেরিয়ে গেছে। ইজিবাইজ চালক ও পৌরবাসী বলেন, পৌরসভার সাবেক মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরীর আমল থেকে রাস্তার অবস্থা খারাপ। সর্বশেষ নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন মো. আলমগীর শেখ তিতু। তাকে অপসারণ করেছে সরকার। তার মেয়াদে রাস্তাগুলো আরও খারাপ হয়েছে। পৌরসভার বাসিন্দারা বলেন, পৌরসভার কোনো সড়ক ভালো নেই। কোনো রাস্তা সংস্কার হয়নি। ইজিবাইক ও রিকশায় যাতায়াত করতে কষ্ট হয়। অনেক ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করে। অনেক সময় রিকশা উল্টে যায়। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায়। রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত সরকার আমলে দুর্নীতি আর লুটপাট হয়েছে। পৌরসভায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমরা জনগণের কাছে জবাব দিতে পারি না। শুধু আমার ওয়ার্ডের সড়কগুলোই নয়। সব রাস্তাই খারাপ। পৌরসভার আরেক কাউন্সিলর জহির রাজ বলেন, আমাদের প্রায় ৩ বছর মেয়াদে রাস্তার কোনো কাজ হয়নি। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। কোনো রাস্তাই ভালো নেই। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত রাস্তাগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেন তিনি। রাস্তাগুলো সংস্কার করা না হলে পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচি আসতে পারে, বলেন তিনি। রাস্তাঘাট সংস্কারের ব্যাপারে সাবেক মেয়র মো. আলমগীর শেখ তিতু বলেন, ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস হয়ে আছে। সেটি বাস্তবায়ন হলে রাস্তাঘাট সংস্কার করা হবে। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তায়েব আলী বলেন, রাস্তাগুলো সংস্কারের ব্যাপারে প্রকল্পগুলো পাস হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সেগুলো পাস হলে রাস্তা সংস্কার করা হবে।