১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৭ বছর সময় নিয়ে নওগাঁর মান্দা উপজেলার জোতবাজারের পাশে আত্রাই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে ঠিকাদার সংযোগ সড়ক না করেই চলে যান। পরে ব্যক্তি উদ্যোগে কোনো মতে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। সংযোগ সড়কের বেহাল দশায় সেতুর সুফল পাচ্ছে না স্থানীয়রা। এখান দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা হেঁটে চলাচলও দুষ্কর। চরম ভোগান্তিতে উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। এভাবেই চলছে প্রায় দুই বছর।
জানা যায়, আত্রাই নদীর ওপর জোতবাজার খেয়াঘাটে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল। এর উদ্বোধন করেন স্থানীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। এর দৈর্ঘ্য ২১৭ মিটার ও প্রস্থ ৭ দশমিক ৩২ মিটার। এতে ব্যয় হয় ১৮ কোটি ৮১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেতুর মূল কাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিলন ট্রেডার্স। তবে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাতে সংযোগ সড়ক না করে তারা চলে যান। ২০২৩ সালের ৯ মে সংযোগ সড়কের কাজ ব্যক্তিগত উদ্যোগে উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এস এম ব্রুহানী সুলতান মাহমুদ গামা। বর্তমানে সেতুর দুই পাশের সংযোগের রাস্তায় কাদা ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা পায়ে হেঁটে কষ্ট করে চলাচল করছে। স্বাভাবিকভাবে সেতুতে ওঠানামা করতে পারে না চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহন। কাদায় গাড়ির চাকা দেবে আটকে যায় ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন। অনেক সময় দুর্ঘটনায় পড়ছেন যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানায়, সেতুটির উত্তর পাশে উপজেলার নুরুল্লাবাদ, কালিকাপুর ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ পাশে প্রসাদপুর, গণেশপুর ও মৈনম ইউনিয়ন। সেতুটির সংযোগ সড়ক হলে নদীর উত্তর পারের লোকজনের জোতবাজারে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে সুবিধা হবে। জোতবাজারে নুরুল্লাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, জোতবাজার মহিলা কলেজ এবং জোতবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নদীর উত্তর পারের বিভিন্ন গ্রামের শিক্ষার্থীরা এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। অনেকদিন পর এই ব্রিজ পেলেও সংযোগ সড়কের বেহাল দশা। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার অবস্থা খুব হয়ে যায়। ফলে ফেরিঘাট রাস্তা হয়ে ঘুরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। ওষুধ কোম্পানির এমপিও আলমগীর বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হয়। কোটি কোটি টাকায় ব্রিজ নির্মাণ হলেও সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচল করা যায় না। এমনকি পায়ে হেঁটাও দুষ্কর হয়ে পড়ে।
শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। এতে এলাকার মানুষের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভ্যান, নসিমন ছাড়াও পায়ে হেঁটে চলতে গিয়ে অনেক মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হয়েছেন।
নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়কের জন্য আগের ঠিকাদার কাজ সম্পূর্ণ না করায় নতুন করে ঠিকাদারের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য টেন্ডার হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।