ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে ঢাকায় বিমানবন্দরে আটক হওয়া নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম খানকে আজ বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা আদালতে তুললে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
২০২২ সালে বিএনপির অফিসসহ নেত্রকোনার ছোট বাজার এলাকায় ভাঙচুর-নাশকতার ঘটনায় গত ৫ আগস্ট করা একটি মামলায় এই রিমান্ড দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী মো. শহীদুল্লাহ।
বামনমোহা গ্রামের সাদেক মিয়ার করা মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে নেত্রকোনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম খানকে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আই/ও) মো. শাহজাহান সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীসহ স্বল্প সময়ে আবেদন পর্যালোচনা করে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট ইন্সপ্ক্টের মো. জাফর ইকবাল জানান, আদালতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর আদালতে তোলা হলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল হোসাইন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে গতকাল বুধবার সকালে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কলকাতায় যাওয়ার জন্য ইমিগ্রেশনে আসার পর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অনুমতি না পাওয়ায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। নজরুল ইসলাম খান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং তিনবারের নৌকার মনোনীত মেয়র ছিলেন। তার বিরুদ্ধে পৌরসভায় নানা অনিয়মসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
সম্প্রতি দুদকের একটি মামলা হলেও সেটি থেকেও তিনি অর্থের ক্ষমতায় বেরিয়ে আসেন। জানা গেছে, লুটপাটসহ পৌরসভায় নিজ পরিবারের ও আত্মীয়স্বজনদের চাকরি দিয়ে কাজ না করে বেতন নেওয়াসহ নানা অনিয়ম করে গেছেন তিনি। বিগিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েও দুর্নীতির মামলায় আটক হয়েছিলেন তিনি। এ যাবৎকাল পর্যন্ত তিনি নিজে ও তার ছেলের নামে পৌরসভার সকল ঠিকাদারি কাজ করে গেছেন। কেউ মুখ খুললে তার প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন।
জমি কিনে পৌর শিশু পার্ক নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তিনি বাধার মুখে শহরের উকিল পাড়ায় রেললাইন দখল করে নামমাত্র শিশু পার্ক নির্মাণ করে পুরো ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ। এ অভিযোগে বিভিাগীয় তদন্ত হলেও রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষমতা বলে তিনি সেগুলো থেকেও উতরে যান।
২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি 'নেত্রকোনা রেললাইনে পৌর শিশুপার্ক' শিরোনামে নয়াদিগন্ত পত্রিকায় একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে নানাভাবে ওই প্রতিবেদককে হুমকি ধামকিসহ হয়রানি করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ