আকস্মিক বন্যায় ধান মাছ সড়কসহ বিভিন্ন ক্ষয়-ক্ষতির মতো এবার নেত্রকোনার চার উপজেলায় আগাম রবি শস্যেরও ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা দিশেহারা। শুধুমাত্র শাক-সবজি চাষ করা কৃষকরা হতাশ। এমনিতেই দাম চড়া। তার উপরে আবাদ নেই, এতে করে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
অনেকে বাড়ির পাশে এবং কৃষি জমিতে রবিশস্যের আবাদ করে চাহিদা পূরণ করলেও এবার তাদের সেই আশা নেই। বরশিকুড়া এলাকার জামাল উদ্দিন জানান, প্রতিবছর সবজি চাষে তারা নিজেরাও চলতে পারতেন। কিনে খাওয়া লাগতো না। লালশাক, পুইশাক, লাউশাক, পেপেসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করে বাজারের চাহিদাও মিটাতে পারতেন। এবার বাজার থেকে কিনে খাওয়ার মতো অবস্থা কারোরই নেই। কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। পড়েছেন হতাশায়। এই ক্ষতি পূষাবে কি করে এ নিয়ে হতাশ।
অন্যদিকে উজ্জল মিযা বলেন, দিনে ৫ শ টাকা রোজগার করে চাল ডাল কিনে আবার বাড়তি দামে সবজি কেনা যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। ধানের সাথে বাড়ির পাশের জমিতে করা তাদের সবজিও শেষ। অবশিষ্ট নেই কিছু।
এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার ১ হাজার ৪৬৫ হেক্টর আবাদ হলেও ১৭৭ হেক্টর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মুল্য ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার হিসাবে আগাম এই রবি শস্য ক্ষতি হয়েছে। এতে মোট ৫ হাজার ৩ শ জনের মতো কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হন।
কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বন্যায় প্রধান ফসল ধানের এবার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। জেলার মোট ৭৫ হাজার কৃষক ধান ও সবজি চাষে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তার মধ্যে শুধুমাত্র ৫ হাজারের অধিক শাকসবজির কৃষক। তারা যেন এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন সেজন্য পুন:বার্সন প্রকল্প নেয়া যায় কিনা এ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নতুনভাবে যদি তারা রবিশস্য করেন তাহলে হয়তো ক্ষতি পুষে যাবে। প্রণোদনা সুযোগ পেলেও তারা ঘুরে দাড়াঁতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএম