জাকাত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। মাহে রমজানে প্রতিটি ইবাদতে ও নেক আমলে যেহেতু অধিক সওয়াব মেলে সেহেতু একে জাকাত আদায়ের মাস বা মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রমজান শেষে ঈদ উদ্যাপনের আগে ফিতরা প্রদানের যে বিধান রয়েছে তা জাকাত থেকে আলাদা এবং সক্ষম ব্যক্তির জন্য জাকাত আদায় করা ফরজ। আরবি শব্দ জাকাতের অর্থ পবিত্রতা, ক্রমবৃদ্ধি, আধিক্য ইত্যাদি। জাকাত জাকাতদাতার ধনসম্পদের প্রবৃদ্ধি সাধন করে, পবিত্র করে, ক্রমবৃদ্ধি ঘটায়। জাকাত প্রদানে শুধু ধনসম্পদের সমৃদ্ধি সাধনে সীমাবদ্ধ থাকে না, জাকাত আদায়কারীর মনমানসিকতা, ধ্যান-ধারণার সৌকর্য সাধিত হয়। আল কোরআনে সালাত বা নামাজ কায়েমের নির্দেশের পরপরই প্রায় ক্ষেত্রেই জাকাত আদায়ের কথা এসেছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ বা সঞ্চয় থাকলে জাকাত আদায় আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু জাকাতের প্রাপক কারা, এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের অবকাশ রয়েছে। দরিদ্র আত্মীয়স্বজন, দুস্থজন সাধারণত জাকাতের দাবিদার। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আল কোরআনে জাকাতের প্রাপক হিসেবে আরেক বিশেষ শ্রেণির দাবিদারের কথা বলেছেন। ‘ইহা প্রাপ্য অভাবগ্রস্ত লোকদের, যারা আল্লার পথে এমনভাবে ব্যাপৃত যে দেশময় ঘোরাফেরা করতে পারে না; যাচ্ঞা না করার জন্য অজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবমুক্ত বলে মনে করে, তুমি তাদের লক্ষণ দেখে চিনতে পারবে। তারা মানুষের কাছে নাছোড় হয়ে যাচ্ঞা করে না। যে ধনসম্পদ তোমরা ব্যয় কর আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৭৩)। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি বা পরিবার আছে যারা সাহায্যপ্রার্থী হতে পারে না সামাজিক মানমর্যাদার কারণে, কিংবা তারা সংকোচবোধ করে সাহায্য চাইতে, অথচ দেখলে বোঝা যায় তারা দৈন্যদশায় আছে এবং তাদের সাহায্যের প্রয়োজন। নামাজ ও রোজা হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে শেষ নবী (সা.) পর্যন্ত প্রত্যেক নবী ও রসুলের শরিয়তেই ফরজ রয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর পূর্ববর্তী নবী ও রসুলদের সময়ও জাকাত আদায়ের নির্দেশ ছিল। তবে বিভিন্ন শরিয়তে এর আকার-আকৃতি ও খুঁটিনাটি বিষয় ছিল বিভিন্নরূপ। হজরত ঈসা (আ.)-এর শরিয়তেও নামাজ ও জাকাত ফরজ ছিল। কোরআনে উল্লিখিত হয়েছে : ‘যেখানেই আমি (হজরত ঈসা ) থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও জাকাত আদায় করতে।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত ৩১)। প্রশ্ন হতে পারে যে, ঈসা (আ.) কোনো সময় মালদার হননি। তিনি ঘর নির্মাণ করেননি এবং অর্থকড়িও সঞ্চয় করেননি। এ অবস্থায় তাকে জাকাতের আদেশ দেওয়ার মানে কী? উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট যে, মালদারের ওপর জাকাত ফরজ, এটা ছিল তার শরিয়তের আইন। ঈসা (আ.)ও এ আইনের আওতাভুক্ত ছিলেন যে, কোনো নিসাব পরিমাণ মাল একত্রিত হলে তাকেও জাকাত আদায় করতে হবে। ‘সে (হজরত ইসমাইল) তার পরিজনবর্গকে সালাত ও জাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার প্রতিপালকের সন্তোষভাজন।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত ৫৫)। সুরা আম্বিয়ার ৭২ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে যে, হজরত ইবরাহিম, ইসহাক ও ইয়াকুবকেও জাকাত প্রদানের জন্য ওহি নাজিল করা হয়েছিল। জাকাত আদায়কে সম্পদশালী ব্যক্তির পক্ষ থেকে দুস্থ-দরিদ্রের প্রতি সাহায্যের আদেশ প্রতীয়মান হলেও এটি মূলত জাকাত আদায়কারীর কল্যাণ প্রবৃদ্ধির জন্যই। আল কোরআনে স্পষ্ট করা হয়েছে : ‘ধন বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা সুদে যা দিয়ে থাক, আল্লার দৃষ্টিতে তা ধনসম্পদ বৃদ্ধি করে না; কিন্তু আল্লার সন্তষ্টি লাভের জন্য যে জাকাত তোমরা দিয়ে থাক তাই-ই বৃদ্ধি পায়, তারাই সমৃদ্ধিশালী।’ (সুরা রুম, আয়াত ৩৯)। লেখক : সরকারের সাবেক সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান।
শিরোনাম
- চট্টগ্রামে ইয়াবা মামলায় সাজা: পাঁচ বছর কারাদণ্ড
- চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত
- সততার সাহস : ভুল স্বীকারের মর্যাদা
- লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসার ছাত্র অপহরণ, পাঁচ দিনেও মেলেনি খোঁজ
- কুয়াকাটায় শৈবাল চাষ নিয়ে কর্মশালা
- ২০০ রানে হেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- মালয়েশিয়ায় ভূমিধসে প্রাণ গেল বাংলাদেশি শ্রমিকের
- টাইমের প্রচ্ছদে নিজের চুল ‘গায়েব’ দেখে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প
- মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড: নিহত ১৬ জনের মরদেহ ঢামেক মর্গে
- হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৯৪
- থাইল্যান্ডে মাদকসহ চার ইসরায়েলি সেনা গ্রেফতার
- অগ্নিদুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক
- অক্টোবরের ১৩ দিনে এলো ১২৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
- মিসরে গাজা শান্তি সম্মেলন: দুই প্রেসিডেন্টের গোপন আলাপ ফাঁস
- মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড : আলামত সংগ্রহ করছে সিআইডি
- মেক্সিকোর অর্ধশতাধিক রাজনীতিকের ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র
- গাজার সব সীমান্ত খুলে দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের
- ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ পাঠাল ইসরায়েল
- শরীয়তপুরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত
- গাজার রাফা ক্রসিং বন্ধ ও সীমিত ত্রাণ পাঠানোর পরিকল্পনা ইসরায়েলের
জাকাত
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর