বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরাতে চীন তার ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার বিষয়ে চীনের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।’ গতকাল গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি পাঁচ দিনের চীন সফর করে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। সফরের বিস্তারিত তুলে ধরতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সফর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি এবং আমরা আমাদের যে প্রয়োজন তা ব্যাখ্যা করেছি। তারা (চীন) ইতিবাচকভাবে সায় দিয়েছে। এটির ওপর তারা কাজ করছে। আমরা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে এলে বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে দেখব।’ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কী আলোচনা হয়েছে-জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চীন বলেছে অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে তারা এ বিষয়টির ওপর কাজ করছে। মিয়ানমার সরকারকে তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে রাজি করানোর চেষ্টা করছে।’
বাংলাদেশে গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে চীনের সমর্থন ছিল। গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিএনপির প্রতিনিধিদল তিনবার চীন সফর করেছে। বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরানোর ব্যাপারে চীনের মনোভাবটা কী দেখছেন-এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত পজিটিভ।’
পাশের একটি দেশের (ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে) সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক গত দেড় দশকে অনেকটাই টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই কি আপনারা চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বটা আরও দৃঢ় করার চেষ্টা করছেন-এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার বিষয়ে চীনের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আমরা কিন্তু আমাদের নীতি থেকে কখনো সরিনি। তাইওয়ানের একটা ট্রেড সেন্টার এখানে কয়েক দিনের জন্য হয়েছিল। তারপর সেটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল চীন সফরে গিয়েছিল। দলে আমিও ছিলাম।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার দলে ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনেও তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী সম্প্রতি উদ্যাপিত হয়েছে। এটি সেই ঐতিহাসিক সম্পর্ক, যা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চীন সফরের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল, যা পরে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আরও ঘনিষ্ঠতর হয়েছে। প্রতিটি বৈঠকে চীনা নেতারা দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে এ দুই নেতার অবদান সম্মানের সঙ্গে ব্যক্ত করেন।’ তিনি বলেন, ‘বৈঠকে পলিসি ব্যুরোর সদস্য শি-লি-হংসং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।’