বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন দেরি হলে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। তাতে আওয়ামী লীগের লোকজন অপকর্ম করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে। পালিয়ে যাওয়া সরকারের দোসররা দেশে অস্থিরতা করে বর্তমান সরকারকে বিপাকে ফেলতে চাইছে। গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা ইস্যুতে অস্থিরতা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে এখনো বসে আছে আওয়ামী লীগের দোসররা। ছাত্র-জনতা হত্যাকারীদের সরকারের বিভিন্ন স্তরে বসিয়ে রেখে ভালো কিছু সম্ভব নয়। সরকার যাতে স্বস্তিতে কাজ করতে না পারে তার জন্য একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলছে স্বৈরাচারের দোসররা। সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কারের বিষয়গুলো দেশের মানুষের প্রত্যাশা থেকে পূরণ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া নয়, এটা সবার কাছ থেকে মতামত আসা উচিত।
বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার চেষ্টা দেশের জন্য মঙ্গল নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধান পরিবর্তন-পরিমার্জন করতে হলে জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে, না হয় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
বাসায় ফিরলেও ‘বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ নন’ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনাকে ডাক্তাররা এখন পর্যন্ত ফিট টু ফ্লাইং, এটা মনে করছেন না। সে জন্য উনাকে বিদেশে নিতে বিলম্ব হচ্ছে।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনা সরকারকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত : বিএনপি মহাসচিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাকে আমি কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় মনে করি না। এর সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত রয়েছে। একদিকে শূন্যতার সুযোগ নেওয়া, অন্যদিকে মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে ভৌগোলিক রাজনীতির যে পরিবর্তন ঘটছে আশপাশের অঞ্চলে, ওইদিকে ভারতবর্ষের মণিপুরে যে বিদ্রোহ, এগুলোকে যদি আপনি আনেন, জিওপলিটিক্সের এ ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। তবে এখন মন্তব্য করাটা সঠিক হবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, একটা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া শুরুর চেষ্টা করা। অন্যদিকে শেখ হাসিনা পার্শ্ববর্তী দেশে থেকে যেসব কথা বলছেন, সেগুলো কতটুকু সত্য-মিথ্যা আমি জানি না। তবে সেই কথাগুলো এখানে বড় প্রভাব ফেলছে। বলা যায়, উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে। আর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সচিবালয়ে আনসার বাহিনীর ঘেরাও, বিভিন্ন সংগঠনের নানা দাবিদাওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মব লিঞ্চিং’, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের বিভিন্ন ঘটনা সরকারকে অস্থিতিশীল করতেই করা হয়েছে।