হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, তাদের সাম্প্রতিক হামলা 'সব সীমারেখা' অতিক্রম করেছে। তিনি বলেন, হিজবুল্লাহর যোগাযোগের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি—যেমন পেজার ও রেডিও—ব্যবহার করে চালানো হামলাগুলো যুদ্ধ ঘোষণার সামিল। এসব ঘটনায় ইসরায়েলকে সরাসরি দায়ী করে নাসরুল্লাহ একে লেবাননের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এই প্রথম প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেন। তার ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন, হিজবুল্লাহকে এক নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, হিজবুল্লাহ এ লড়াই থেকে পিছু হটবে না, বরং তারা ‘ন্যায়বিচারের প্রতিশোধ’ নেবে।
গত মঙ্গলবার এবং বুধবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত পেজার এবং ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরণ ঘটে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এতে দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়। পরদিন আরও ২৫ জন মারা যান। এই ঘটনায় ইসরায়েল এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক দায় স্বীকার না করলেও, লেবাননের ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ এবং অন্যান্য হামলার পেছনে ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাসরুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, ইসরায়েল সব ধরনের নীতি এবং আইন লঙ্ঘন করে চলেছে, যা মানবিকতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের চরম অবমাননা। তিনি আরও বলেন, এটি লেবাননের জনগণ ও সার্বভৌমত্বের ওপর এক ভয়াবহ আগ্রাসন এবং এ ধরনের আক্রমণকে যুদ্ধ ঘোষণার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। তবে তিনি এটাও নিশ্চিত করেন, এসব আঘাত সত্ত্বেও হিজবুল্লাহর যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিচালনার ক্ষমতা সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে।
হিজবুল্লাহ নেতার মতে, গাজার যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর লড়াই আরও জোরদার হতে পারে। তবে, সংঘাতের মাত্রা বাড়ানোর ইচ্ছা নেই বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ইসরায়েলি হামলাকে কঠোর সাজা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও নাসরুল্লাহ আরও জানান, তারা গাজার যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সীমান্তে হামলা চালিয়ে যাবে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে দুটি ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এতে তাদের দুই সেনা নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল