নাগরিকদের মুঠোফোনে আড়িপাতা, ডিভাইস নজরদারিতে রাখা, ফেসবুক-মেসেঞ্জার, এক্স, টেলিগ্রাম, ভাইবার, ইমো ও স্কাইপিতে এমনকি ওয়েবসাইট ব্লক ও ইমেইলে আড়িপাতার অভিযোগে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) বিলুপ্তির দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবির কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কার্যক্রম সংবিধান পরিপন্থি। সংবিধানের ধারা ৪৩-এর (খ) অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের সব মাধ্যমের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। অথচ ২০১৩ সালে বরখাস্ত হওয়া মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের পরামর্শে এই বিতর্কিত সংস্থাটি গঠন করা হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মূলত নাগরিকদের যোগাযোগে আড়িপাতা এবং নজরদারিতে রাখার জন্যই এই সংস্থা গঠন করা হয়েছে। ফোনালাপ রেকর্ড ও ফাঁস, ইন্টারনেট ও বিভিন্ন অ্যাপে আড়িপাতা ছাড়া অন্য কোনো কাজই করেনি এই সংস্থাটি। এতে অভিযোগ করে বলা হয়, এনটিএমসি মোবাইল অপারেটরদেরও বাধ্য করেছে বিভিন্ন ধরনের মেসেজ গ্রাহকদের পাঠাতে। ফোনালাপ রেকর্ড এমনকি ভিডিও কলও রেকর্ড করে অনেক সম্ভ্রান্ত নাগরিককে হেনস্তা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, তারা ‘বিক্যাল মাউন্টেন ডাটা ইন্টারসেপ্টর’ এবং ‘বিক্যাল মাউন্টেন মোবাইল ইন্টারসেপ্টর’-এর মতো ভয়ানক যন্ত্র ব্যবহার করেছে। এমনকি বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা বিতর্কিত ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কাছ থেকে ‘পেগাসাস স্পাইওয়্যার’ কেনা হয়েছিল বলেও দেশ ও বিদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। আমরা আগেই এর প্রতিবাদ করেছিলাম এবং তদন্ত চেয়েছিলাম। যদিও সরকার বলেছিলেন এ ধরনের যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি। সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা এবং সংবিধান পরিপন্থি। সেই সঙ্গে মানবাধিকারের লঙ্ঘন। তাই দেশ জাতি এবং সংবিধানকে সমুন্নত রেখে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এনটিএমসি বিলুপ্তি আবশ্যক। এজন্য এনটিএমসির বিলুপ্তির দাবিপত্র শিগগিরই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।