দিনাজপুর শহরের ব্যস্ততম এলাকায় হাজার হাজার চড়ুই পাখির অভয়ারণ্য। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর হয়ে ওঠে দৃষ্টিনন্দন। চঞ্চল প্রকৃতির পাখি চড়ুই। এরা মানুষের আশপাশে বসবাস করতে ভালোবাসে। ভোর হতেই বেশির ভাগ পাখি চলে যায় আহারের সন্ধানে শহরের অন্যত্র কিংবা দূর-দূরান্তের কোনো এলাকায়। আবার বিকাল হলেই সেই সব চড়ুই পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে ফিরে আসে নীড়ে। আর তখনই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা। এ দৃশ্য দেখা যায় দিনাজপুর শহরের ব্যস্ততম নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় কিচিরমিচির শব্দ পাখিপ্রেমিকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এখানে কেউ পাখি শিকার বা পাখিকে ঢিল ছোড়ে না। তাই গাছের পাতায় পাতায় কিংবা বিদ্যুতের তারে ভরে থাকে অগণিত চড়ুই পাখি। সন্ধ্যায় কোনো পথচারী বা প্রকৃতিপ্রেমীরা বিদ্যুতের তারে হাজার হাজার চড়ুই পাখি দেখে ছবি না তুলে যেতে পারেন না।
চড়ুই পাখি বছরে একাধিকবার প্রজনন করে। প্রতিবারে ৪-৬টি করে ডিম দেয়। এদের ছানা বেঁচে থাকে প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ। ক্ষতিকর পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষক কীটনাশক ব্যবহার করছে। আর চড়ুই প্রধানত শস্যদানা, ঘাসের বিচির পাশাপাশি অসংখ্য পোকামাকড় খেয়ে থাকে। বিশেষ করে পোকার শুককীট, মুককীট বা লেদাপোকা যারা শস্য উৎপাদনের অন্তরায়। চড়ুই পাখি এসব পোকার ক্ষতিকর আক্রমণ থেকে ফসল, সবজির খেত, বনাঞ্চল বাঁচিয়ে পরিবেশ ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কিন্তু ফসলের খেতে কীটনাশক ছিটানোর কারণে এসব খাবার খেয়ে তারাও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।
শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসায়ী আলী আকবর, ফারুক হোসেন, সবুর হোসেন চৌধুরীসহ অনেকে জানান, অনেকদিন ধরেই ব্যস্ততম এ বাসস্ট্যান্ড এলাকার বিদ্যুতের তারে, মেহগনি গাছে ও সাইন বোর্ডের ওপরে সকালে ও বিকালের পরই পরিবেশবান্ধব হাজার হাজার চড়ুই পাখির কিচির-মিচির শব্দে অন্যরকম পরিবেশ তৈরি করে। যা মুগ্ধ করে সবাইকে।
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠক মোসাদ্দেক হেসেন জানান, চড়ুইয়ের যে কয়েক প্রজাতি দেখা যায়, তার মধ্যে এ প্রজাতি দলবদ্ধ। প্রজনের আগে তারা একত্রে ঝাঁক বেঁধে উড়ে এসে বসত গড়ে।