ছাত্রদল নেতা মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যা’র অভিযোগে গ্রেফতার ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক গোলাপ মাহমুদ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাবের একটি দল।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে নূরুজ্জামান জনি ও তার সহপাঠী মইন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে দেখতে যায়। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেরার পথে আসামিরা জনি ও মইনকে ডিবি পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে তাদের ডিবি ঢাকা মেট্রোপলিটন-দক্ষিণ কার্যালয়ে নিয়ে গিয়েও নির্যাতন করা হয়।
তখন নুরুজ্জামান জনির ৭ (সাত) মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনিয়া পারভিনসহ আত্মীয়স্বজনরা খিলগাঁও থানা, ডিবি দক্ষিণ অফিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসসহ বিভিন্ন থানায় হন্য হয়ে খুঁজে বেড়ান। প্রায় ২ দিন ধরে খোঁজাখুঁজি করার পরেও নুরুজ্জামান জনির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পরে ২০ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর খেলার মাঠের আশপাশের মানুষজন চিৎকার করা কণ্ঠে কান্নার শব্দ শুনতে পায়। সেই সময় আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা গুলির শব্দ শুনতে পায়। ভোর রাতে বাদীসহ সাক্ষীরা ও প্রতিবেশীরা খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর মাঠের দিকে গিয়ে পুলিশদের দেখতে পায়। আসামিরা বলে যে, নুরুজ্জামান জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তার মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
বাদী ঢাকা মেডিকেল মর্গে গিয়ে দেখতে পান নুরুজ্জামানের বুকের বামে, ডান দিকে, দুই হাতের তালুতে ১৬টি গুলির চিহ্ন রয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্নও দেখা যায়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত