গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের বৈদেশিক ঋণছাড় প্রবাহে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। তবে এ সময়ে ঋণ পরিশোধ ছিল স্বাভাবিক। ফলে ঋণপ্রাপ্তির তুলনায় পরিশোধ করতে হয়েছে দ্বিগুণ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
ইআরডি সূত্র বলছে, আগস্টে বৈদেশিক ঋণছাড় হয়েছে মাত্র ১০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশকে বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ২০৩ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রাপ্ত ঋণের চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে।
একইভাবে বিদেশী ঋণের প্রতিশ্রুতিতেও বড় ধরনের পতন লক্ষ করা গেছে। গত আগস্টে ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৪ মিলিয়ন ডলারেরও কম। সব মিলিয়ে অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) প্রতিশ্রুতি এসেছে মাত্র ২০ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। শতাংশের হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯৮ শতাংশের বেশি।
গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বিদেশী ঋণ ছাড় হয়েছিল ৭৩৯ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ঋণছাড় হয়েছে মাত্র ৪৫৮ মিলিয়ন ডলার।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সরকারের সময় করা ঋণচুক্তির প্রস্তাবগুলো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে পর্যালোচনা করছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে না। তবে পর্যালোচনা শেষে প্রস্তাবিত ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তখন লক্ষ্য অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটির সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘পাইপলাইনে থাকা সব প্রকল্প যাচাই-বাছাই করা হবে। বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে দ্রুত যাচাই-বাছাই শেষ করার চেষ্টা চলছে। কারণ আমাদের বৈদেশিক অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাইপলাইনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে সব বিদেশী অর্থায়নের প্রকল্প ভালো প্রকল্প বলে বিবেচিত হবে না।’
এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে, যা ৩-৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র: বণিক বার্তা
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন