২৭ অক্টোবর, ২০২০ ১২:৫৬
নবম পর্ব

বনবিহারী

আলম শাইন


বনবিহারী

  তখন রাত দশটা, মাঘের হিমশীতল ঠাণ্ডায় শরীর বেঁকে আসছে। এমন ঠাণ্ডা বাপের জন্মেও অনুভব করিনি আমি। ঠাণ্ডার চোটে হাড়সুদ্ধ কাঁপছে, কাঁপছে সমস্ত প্রাণিকুলও। বুনো কুকুর আর শেয়ালের হাঁকডাক তেমন একটা শোনা যায় এখন। অথচ গ্রীষ্মে সাঁঝের আঁধার ঘনিয়ে এলেই শেয়াল কুকুরের হাঁকডাক শোনা যেত; এখন অনেকটাই কমে গেছে। ঠাণ্ডায় বন জঙ্গলে গুটিসুটি মেরে আছে, খাদ্যের সন্ধ্যান ব্যতীত বিনা প্রয়োজনে বের হয়নি ওরা।

টুপটাপ শিশির পড়ছে টিনের চাল গড়িয়ে। নিমশাখ থেকে ভেসে আসছে নিঃসঙ্গচর পেঁচা পাখির ক্ষীণ কণ্ঠস্বর ‘কুপ...কুপ...কুপ...’। গা ছমছম করা সেই কণ্ঠের উৎস খুঁজতে বাংলোর দরজার কপাট খুলে সন্তর্পণে বের হলাম। বাইরে আরও ঠাণ্ডা, ঠাণ্ডার চোটে গায়ের চাদর মুহূর্তেই হিমশীতল হয়ে এল। এত বছর বনপ্রান্তরে কাটিয়েছি অথচ এবারের মতো ভয়ানক ঠাণ্ডা আর কখনো অনুভূত হয়নি।

  বারান্দায় দাঁড়াতেই জ্যোৎস্নাজ্যোতিতে পা ভিজে গেলো; বারান্দায় এখন প্লাবন বয়ে যাচ্ছে, ঢেউ খেলছে ছলাৎ ছলাৎ। সেই রূপালি ঢেউয়ে পায়ের পাতা চুবিয়ে নিম গাছের কাছাকাছি চলে এলাম। গাছটা বাংলোর দক্ষিণ লাগোয়া। দেখলাম জ্যোৎস্নার চাদর মুড়িয়ে দিয়েছে সমস্ত বৃক্ষটাকে; রূপ নিয়েছে ধবল গিরির। চেনা সেই নিম গাছটাকে রহস্যময়ী করে তুলছে জ্যোৎস্নাজ্যোতি।

  পেঁচার উৎসস্থল খোঁজার চেষ্টা করছি, কিন্তু নজরে পড়ছে না। পেঁচাদর্শন খুবই প্রয়োজন, সরাসরি দেখলে ভয় কেটে যেত। কৈশোরে অনেক মিথ শুনেছি পেঁচা নিয়ে। পেঁচার ডাকে নাকি অমঙ্গল ঘটে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ সরাসরি পাখিটাকে দেখতে ইচ্ছে করছে তাই।

গতকাল পাখিটা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানিয়েছেন একজন পাখি গবেষক। তাই এই আগ্রহটা বেড়েছে আমার। সেই বিষয়েই সামান্য আলোচনা করছি এখন।

   নিঝুম দ্বীপে শীত মৌসুমে প্রচুর পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। প্রায় ৩০-৩৫ প্রজাতির হাজার হাজার পাখি নিচু ভূমিতে দেখা যায় তখন। বিপদাপন্ন বা সংকটাপন্ন কয়েক প্রজাতির পাখিরও দেখা মিলে সেই সময়। বিশেষ করে সংকটাপন্ন পাখি ‘দেশি গাংচষা’ এবং মহাবিপন্ন পাখি ‘চামচঠুঁটো বাটান’ এখানে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। এ ছাড়াও কালো লেজ জৌরালি, গুলিন্দা, লাল ঘাড় চা পাখি, কালোমাথা কাস্তেচরা, রাঙ্গা মানিকজোড়, ফুলরি হাঁস প্রচুর নজরে পড়ে। অন্যসব প্রজাতির চেয়ে হাঁস প্রজাতি বেশি নজরে পড়ে নিঝুম দ্বীপের নিচু এলাকাগুলোতে, যেখানে জোয়ার-ভাটা প্রবাহমান থাকে।

  দ্বীপ বনের চারপাশের সরু নদীতেও পাখিদের মিলনমেলা বসে তখন। পাখিগুলো হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এখানে আসে একটু উষ্ণতার খোঁজে; খাবারের সন্ধানে। ওদেরকে ঘিরে দেশি-বিদেশি পাখি পর্যবেক্ষকদের আগমন ঘটে তখন নিঝুম দ্বীপে। পরিযায়ী পাখিদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা হয়, শুমারিও হয়। আমার বেশ পছন্দ পাখ-পাখালি সান্নিধ্য লাভ করা। তাই আমি প্রতিবছর ছুটে যাই গবেষকদলের আমন্ত্রণে।

  প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকা থেকে কিছু তরুণ-তরুণী এসেছে পরিযায়ী পাখি নিয়ে কাজ করতে। তারা ক্যাম্প করেছে দ্বীপ বনের অদূরে; নদী সংলগ্ন চরে। সেই গবেষকদলের প্রধান হচ্ছেন এমরান হোসাইন দেওয়ান; আমার পরিচিত মানুষ। তিনি প্রতি বছর ক্যাম্পিং-এ এলেই দ্বীপ বনের বাংলোতে এসে আমার সঙ্গে দেখা করেন। পাখি সম্পর্কে নানান তথ্য জানান। আমার আগ্রহ থাকায় তিনি আমাকে প্রতি বছরই নিমন্ত্রণ করেন তাদের ক্যাম্পে রাত কাটাতে। আমি চেষ্টা করি তার নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। আবার আমিও আমাদের প্ল্যান্টে এনে অতিথিসেবা করি, বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়াই সবাই মিলে। সে এক মহা আনন্দ!
  
দুুপুরে তাদের ক্যাম্পে আমাদের নিমন্ত্রণ। আমরা চারজন সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে রওয়ানা দিয়েছি। সঙ্গে আছে দুইজন সহকারী ম্যানেজার, মহব্বত দয়াল আর আমি। জঙ্গলে আমি যখনই বের হই মহব্বত দয়ালকে সঙ্গে নিতে হয়। কোম্পানির আইন। আসলে এই প্ল্যান্টে সে একমাত্র ব্যক্তি যে কীনা প্রকৃতিকে অনুধাবন করতে পারে। যার ফলে তার সঙ্গে আমার একটা বন্ধন তৈরি হয়েছে। তাছাড়াও তার সঙ্গে আমার বয়সের তারতম্য খুব বেশি নয়; বড়জোর ২-৩ বছরের। প্ল্যান্টের স্থায়ী কর্মচারীদের মধ্যে বয়সের দিকে আমরা দুইজনই সিনিয়র। প্রায় সমবয়সী বিধায় সখ্যতাও একটু বেশিই।

  তাছাড়াও আমি বিশ্বাসী নই মানুষের মাঝে মানুষের শ্রেণিবিন্যাসে। মানুষের জন্ম মৃত্যুর পোশাকেই যদি কোন তারতম্য না থাকে, সেখানে তারতম্য ঘটানোর অধিকারই বা আমাকে কে দিয়েছে। বিষয়টা নিয়ে যখন ভাবি, তখন আর মানুষের মাঝে ভেদাভেদ খুঁজে পাই না আমি।

   গবেষকদের ক্যাম্পে আমাদের যেতে হচ্ছে ট্রলারে চড়ে। আর সেটি অবশ্যই জোয়ার ভাটার সময়সূচি মেনে যেতে হয়। নচেৎ কাদাজলে মাখামাখি হতে হবে। এই জন্য আমরা ভরা কাটাল ও মরা কাটাল মেনে চলি। নদী অঞ্চলের লোকজনকে এসব মেনে চলতে হয়।

  এখন নদী-নালা-খালে জোয়ার বইছে, আশা করি ভাটা পড়ার আগেই ফিরে আসব। আজ ধীরে-সুস্থে এলেও তেমন সমস্যা হবে না। কারণ তিথি অনুসারে দেখলাম আজ তেজ কাটাল। তেজ কাটালে জল উপচেপড়ে; মরা কাটালে জল কম প্রবাহিত হয়।

  জোয়ার-ভাটা শুধু নদীকেন্দ্রিক নয়, মানুষের মধ্যেও এর প্রভাব পড়ে। যেমন জোয়ারে ধন ভেসে আসে, আবার ভাটায় হয় খটখটে মরুভূমি। যেই রহস্য অনুধাবন করা বড়ই কঠিন; আবার সহজও হয়, যদি ভাবুকের অন্তর্দৃষ্টি খোলা থাকে।  

  আমরা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার আগে সঙ্গে নিলাম ৪টা বড় ইলিশ ভাজা, আর প্ল্যান্টে উৎপাদিত পাকা কলা, পাকা পেঁপে। বন-বাদাড়ে বাস করে আর অন্যকিছু নেওয়ার সুযোগ নেই আমাদের। সুযোগ থাকলে আরও অনেক কিছু নিয়ে যেতাম হয়তবা। কারণ নিমন্ত্রণ রক্ষায় খালি হাতে যেতে নেই; দেশের রেওয়াজ। বন-বাদাড়ে বাস করলেও সেই রেওয়াজ ভুলে যাইনি আমরা। আর তাছাড়া বছরে একটা মাত্রই তো নিমন্ত্রণ পাই, তা-ও সেটি এই গবেষকদের কল্যাণেই। সেখানে যেতে যদি একটু সামাজিকতা রক্ষা না করতে পারি তাহলে মনে বড়ই আফসোস থেকে যাবে।

   নদীর জোয়ারে সাঁতার কেটে ইঞ্জিন চালিত নৌকা দ্রুত এগিয়ে চলছে। আমি বসে আছি নৌকার কিনারে। নদীর দুই পারে চোখ; দেখছি শুধু গাছ আর গাছ। তার মধ্যে বেশিরভাগই কেওড়া গাছ, নদীর ওপর কাত হয়ে পড়ে আছে। শিকড়গুলোর অনেকাংশেই মাটি নেই, জোয়ারের জলে ধুয়ে ফকফকা করে ফেলেছে। তার পরেও বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টা, শেষ আকুতি করে যাচ্ছে গাছগুলো, জন্মদাত্রীকে আঁকড়ে ধরছে। আর মৃত্তিকা মা আপ্রাণ চেষ্টা করছে সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে। যেমনি চেষ্টা করছেন জগতের সমস্ত মায়েরা।
  
নয়াজলের ঘ্রাণে তন্ময় হয়ে ট্রলারযোগে চলছি নিমন্ত্রণ রক্ষার্থে। দুপুরের খাবার খেয়ে প্ল্যান্টে ফিরে আসব, সেই পরিকল্পনাই করছি মনে মনে। রাতযাপন সম্ভব নয়। রাতে আনন্দ হয়, গানবাজনা করে তরুণ-তরুণীরা। সেই আনন্দে অংশ গ্রহণের সুযোগ নেই আমাদের। আগামীকাল শিপমেন্ট আছে, তাই রাতে কিছু কাজকর্ম সেরে এগিয়ে রাখতে হবে। সুতরাং খেয়ে দেয়ে ফিরে আসতে হবে চটজলদি।

   আমরা ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ক্যাম্পে পৌঁছালাম। দলনেতা এমরান হোসাইন আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানালেন। আমাদের আগমনে ভদ্রলোক খুব খুশি হলেন, আমাকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। অতিথি সেবায় তিনি কোন ধরনের গাফিলতি করেননি। আমাদের নেওয়া ইলিশ ভাজা, ফল-ফলাদি সাদরে গ্রহণ করলেন। তার পর তাঁবুর ভেতরে নিয়ে আমাদেরকে যত্নসহকারে বসালেন। তিনি গল্পবাজ মানুষ, বসতেই নানান গল্প ফাঁদলেন। তরুণ-তরুণীদের কর্মকাণ্ড দেখালেন, আমি উদ্ভুত হলাম দেখে। কোন ধরনের স্বার্থ নিয়ে এরা কাজ করছে না। অনেকটা নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। আসলে এরাই হচ্ছে দেশের সূর্য সন্তান, দেশের সম্পদ।

  বিভিন্ন ধরনের আলাপ-আলোচনা শেষে দুপুরের খাবার খেতে বসলাম। তরুণ-তরুণীরা মিলে রান্নাবান্না করেছে। তারাই এখন আমাদেরকে পরিবেশন করে খাওয়াচ্ছে। অনেক কিছুই রেঁধেছে, কোরাল মাছ, গলদা চিংড়ি, খাসির মাংস ও নানান ধরনের সবজি। তরুণদের রান্নার হাত তত ভালো হওয়ার কথা নয়, তার পরেও বেশ হয়েছে। হয়তো তরুণীরা সাহায্য করায় রান্না চমৎকার হয়েছে। কড়া ঝাল মিশিয়ে একেবারে শুকনো করে রেঁধেছে। যে বয়সে তাদের হেসেখেলে বেড়ানোর কথা, সেই বয়সে একটা দায়িত্বপূর্ণ কাজ করতে এসে নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছে, এটি কিন্তু সোজা কথা নয়!

   খাওয়ার মাঝামাঝিতে আমার প্লেটে খাসির মাংস পরিবেশন করল তরুণদের একজন। উচ্চরক্তচাপের কারণে মাংস জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলি আমি। তথাপিও সমাজরক্ষার্থে এক টুকরা মাংস মুখে তুলে নিলাম। মাংসের টুকরাটা মুখে দিতেই আমার কাছে কেমন জানি যেন অপরিচিত খাবার মনে হলো। মনে খটকা লাগতেই আমার সঙ্গীদের জিজ্ঞেস করলাম, ‘মাংস থেকে কি ঘেসো গন্ধ পাচ্ছ তোমরা?’
  
সিকান্দর বারী মুখে দিয়ে বলল, ‘আমার কাছেও সেরকম মনে হচ্ছে বড়মিয়া।’ 
  
একে একে মুখে দিলো বিনময় ভৌমিক ও মহব্বত দয়াল। তারাও একই কথা জানাল। তবে মহব্বত দয়াল চুপিচুপি বাড়তি কথা যোগ করল, ‘এটা খাসি ছাগলের মাংস নয়, এটা হচ্ছে হরিণের মাংস।’

  কথাটা শুনার সঙ্গে সঙ্গে আমার মুড অফ হয়ে গেল; আমি ক্ষিপ্ত হলাম। এত বছর জঙ্গলে বাস করে যে কাজ আমি করিনি, তারা দুই দিনেই সেই কাজটি করে ফেলল! আমরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতেই এমরান হোসাইন বললেন, ‘রান্নায় কোন ধরনের সমস্যা হয়নি তো? ঝাল বা লবণ...।’

  বললাম,‘সে ধরনের কিছু না, সমস্যাটা হচ্ছে মাংস নিয়ে। এটা কিসের মাংস খাচ্ছি বলতে পারবেন?’

  তিনি বললেন, ‘কেন! খাসির মাংস।’ 

  বললাম, ‘আপনি কি নিশ্চিত খাসির মাংস? কোত্থেকে এনেছেন?’

  তিনি বললেন, ‘গতকাল বিকেলে ট্রলার চালককে টাকা দিয়েছি বাজার সদাই করতে। বলেছি মাছের সঙ্গে খাসির মাংস কিনে আনতে। সে সকালে বাজার সদাই দিয়ে গেছে। কেন কি হয়েছে?’

  বললাম, ‘শুধু হয়নি, অনেক কিছুই হয়েছে।’

  তার মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। বললেন, ‘খুলে বলুন প্লিজ।’

  তার মুখাবয়বের পরিবর্তন দেখেই বুঝে নিয়েছি তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। যাকে দিয়ে বাজার সদাই করিয়েছেন, সেই লোকটি এ জঘন্য কাজটি করেছে। খাসির মাংসের টাকা মেরে দিয়ে হরিণের মাংস গছিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ খাসির মাংসের তুলনায় কমদামে হরিণের মাংস কিনেছে চোরশিকারিদের কাছ থেকে। এই হচ্ছে আসল ঘটনা, যদি আমার ধারণার ভুল না হয়।

  আমি বললাম, ‘এটা হরিণের মাংস। ট্রলার চালক আপনার সঙ্গে চিট করেছে।’
 তার পর বিস্তারিত খুলে বলতেই তিনি আফসেট হয়ে পড়লেন। বললেন, ‘বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে এসে বন্যপ্রাণী নিধনে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করলাম; বিষয়টা মেনে নিতে পারছি না। আমি ভেবেছি লোকটি স্থানীয়, বাজার সদাই তাকে দিয়ে করালেই ভালো হবে; চেনা জানা আছে তার। সেটি মনে করেই দায়িত্বটা দিলাম তাকে।’

  বললাম, ‘অপকর্ম স্থানীয়দের দ্বারাই বেশি ঘটে। ওদের সিন্ডিকেট আছে, সেটি অবশ্য আপনার জানার কথাও নয়। কথা হচ্ছে আপনি জেনেশুনে কাজটি করেননি, সুতরাং আপনি নির্দোষ, আফসেট হবেন না। আমরা ট্রলার চালক সম্পর্কে বনবিভাগে রিপোর্ট করবো; আশা করি শাস্তি হবে তার।’ 

  আমার কথায় আশ্বস্ত হলেন তিনি। দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন, ‘ওকে ধরিয়ে দেন, প্রয়োজনে আমরা সাক্ষী দিবো।’

  আমার সঙ্গীরা মাংস খেলেও আমি আর সেই মাংস মুখে দেই নি। তারপর খাওয়াদাওয়া শেষ করে এমরান হোসাইনকে বছর খানেক আগের কালাবনের রাতের ঘটনাটা শুনালাম। কীভাবে দুষ্কৃতিকারিরা রাতের আঁধারে হরিণ শিকার করছে সেই ঘটনা বিস্তারিত জানালাম। সব শুনে তিনি বললেন, ‘আমি ঢাকা গিয়ে এ বিষয়ে খবরের কাগজে আর্টিকেল লিখব। তাতে আশা করি, কর্তৃপক্ষের নজরে পড়বে।’ 

  বললাম, ‘নিঝুম দ্বীপের হরিণগুলো অভূক্ত থাকে, আবার জোয়ারের জলে ভেসে গেলে দুষ্কৃতকারিদের হাতে ধরা পড়ে, সেসবও তুলে ধরবেন আপনার লেখায়।’

  তিনি সম্মতি জানালেন বিশদতথ্য তুলে ধরার। এরইমধ্যে আমাদের চলে আসার সময় হয়ে এসেছে। আমরা গবেষকদেরকে প্ল্যান্টে নিমন্ত্রণ জানিয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিয়ে চলে এলাম মেঘলার বাংলোতে। 

চলবে...

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

সর্বশেষ খবর