শিক্ষামন্ত্রী ডা দীপু মনির সাথে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে হওয়া সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে রাত নয়টায় শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার জন্য শনিবার বিকাল চারটা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন।
শিক্ষার্থী ইয়াসির সরকার এসময় বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমাদের কিছু দাবি ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। সেগুলো হল দ্রুততম সময়ে ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করে একজন গবেষণামনা, শিক্ষাবিদ, অবিতর্কিত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া, শাবিপ্রবিতে সকল প্রশাসনিক পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া, অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের উপর দায়েরকৃত হয়রানীমূলক মামলাগুলো তুলে নিতে হবে, শিক্ষার্থীদের সকল অনলাইন লেনদেনের একাউন্ট অবিলম্বে খুলে দিতে হবে, পুলিশি হামলার শিকার শিক্ষার্থী সজল কুন্ডুকে এককালীন ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী অন্তত ৯ম গ্রেডের স্থায়ী সরকারী চাকুরি দিতে হবে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীন বার্ষিক বাজেটের কমপক্ষে ৩০% গবেষণা খাতে বরাদ্দ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নূন্যতম যোগ্যতা পিএইচডি ডিগ্রীতে উন্নীত করতে হবে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে সে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে নির্দিষ্ট সংখ্যক ডেমো ক্লাস নিতে হবে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নূন্যতম এভালুয়েশন মার্ক অর্জন করলেই তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, নিয়োগকৃত শিক্ষকদের কাজে যোগ দেওয়ার আগে একটা আবশ্যিক ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, সমগ্র বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে গোপনীয় কোড ব্যবস্থা চালু করতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের কারো পরিচয় জেনে বৈষম্যমূলক মূল্যায়ন করতে না পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশের জন্য সকল স্থায়ী স্থাপনা অপসারণ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হলগুলোকে বছরের ৩৬৫ দিনই সকল সুযোগ সুবিধা সহ খোলা রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে, এবং এসকল কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে উন্মুক্ত স্থাপত্য প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আমাদের অধিকাংশ দাবি সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে প্রধান দাবি ‘উপাচার্য পদত্যাগ’র ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী আচার্য মহোদয়কে অবগত করবেন। আমরা আশা করছি এ ব্যাপারে পজিটিভ ফলাফল পাবো। এছাড়া আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব নাকি স্থগিত করবো এ ব্যাপারে কাল আমরা জানাবো।
নবনিযুক্ত প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি:
গত ১০ ফেব্রুয়ারি নতুন প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পান ইশরাত ইবনে ইসমাইল। নবনিযুক্ত এ প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ইয়াসির সরকার বলেন, নবনিযুক্ত প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল সম্প্রতি এক শিক্ষার্থীর যৌন নিপীড়নের ঘটনায় উপস্থিত থেকেও এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে সেই যৌন নিপীড়নের ঘটনা অস্বীকার করার অভিযোগ রয়েছে। আমরা বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করেছি। শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়টি দ্রুত দেখবেন বলেছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল