‘অমর ২১ ফেব্রুয়ারি, ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে একাধিকবার হাতিহাতিতে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সোমবার একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পস্তবক অর্পনের সময় মেজাজ হারিয়ে এক কর্মীকে থাপ্পড় মারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১টার দিকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসে ছাত্রলীগ। এসময় সেখানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ছিলেন। পুষ্পস্তবক নিয়ে বেদির সামনে আসলে প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পুষ্পস্তবকটি ভেঙে দু’টুকরো হয়ে যায়। ঠিক এসময় সাদা পাঞ্জাবি পরা একজনকে থাপ্পড় মারতে দেখা যায় সনজিতকে।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, থাপ্পড় মারার পর ওই ব্যক্তি পিছনের দিকে চলে যান। পুষ্পস্তবক অর্পন শেষে চলে যাওয়ার সময় আরও একজনের গলায় হাত দিয়ে সরিয়ে দেন সনজিত। এরপরই নেতৃবৃন্দ প্রস্থান করেন।
এদিকে, সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল শাখাগুলোর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পনের সময় রীতিমত বাঁশের লাঠি নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। বেদির সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় সেখানে জগন্নাথ হল ও শহীদুল্লাহ হলের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিল। এসময় ব্যানারে বহনে ব্যবহৃত বাঁশের লাঠি নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায় তাদের। এর আগে, শহীদ মিনারের বেদির প্রবেশ মুখের সামনে হাতিহাতিতে জড়ায় বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
তবে থাপ্পড় দেওয়ার বিষয়টি জানতে সনজিত চন্দ্র দাস ফোন দেয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে হাতিহাতির বিষয়টি নিয়ে বিজয় একাত্তর হলের সভাপতি সজীবুর রহমান সজীব বলেন, একাধিকবার একসঙ্গে ফুল দিতে যাওয়ায় বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। তবে তা মারামারির পর্যায়ে যায়নি, চিৎকার-চেঁচামেচি হয়েছে। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক হল ইউনিট, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ইউনিট, ছাত্রদল, যুবদলের বিভিন্ন ইউনিট ছিল, তাই নিজেদের মধ্যে চিৎকার-চেঁচামেচি হয়েছে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় গুরুত্ববহ একটি অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের এমন আচরণের সমালোচনা করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরাই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পদধারী এক নেতা বলেন, কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অনেক সময় কঠোর হতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি বা হাতাহাতি খুবই নিন্দনীয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত