রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ‘সমন্বিত হল সম্মেলন’ আগামীকাল (১৪ই মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন এই সম্মেলনকে ঘিরে স্লোগান আর নানা কর্মসূচিতে মুখর ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলো। হল কমিটিতে স্থান করে নিতে নিজেদের অবস্থান শক্তপোক্ত করছে বিভিন্ন হলের নেতা-কর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে ও হলগুলোতে প্রতিদিনই চলছে শোডাউন, ছোট-বড় সমাবেশ ও মিছিল। পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়, হলের ফটক। নেতা-কর্মীদের আলোচনা-সভায় মুখর থাকছে দলীয় টেন্ট, আমতলা, টুকিটাকি চত্বর। বিশেষ করে অ্যাকাডেমিক ঘন্টার পর বিকাল ৫টা থেকে রাত অব্দি এসব কর্মসূচিতে সরব থাকছে ক্যম্পাস। সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে শাখা দলটির নেতা-কর্মীরা।
আসন্ন সম্মেলন ঘিরে ইতোমধ্যে (৩মার্চ) বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি ৭ মার্চ থেকে প্রতিটি আবাসিক হলেই শুরু হয়েছে কর্মী সভা। এক এক করে প্রত্যেকটি হলের এই কর্মী সভা শেষ হবে ১০ মার্চ।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলে ৩৪টি পদের বিপরীতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন ৪১৬ জন ছাত্রলীগ কর্মী। এর মধ্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে ২২ জন, মন্নুজান হলে ১৭ জন, তাপসী রাবেয়া হলে ৭ জন, রহমতুন্নেসা হলে ৮ জন, খালেদা জিয়া হলে ৯ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৪২ জন, শের ই বাংলা একে ফজলুল হক হলে ৩০ জন, মতিহার হলে ২২ জন, শাহ মখদুম হলে ৩৪ জন, সৈয়দ আমীর আলী হলে ২৮ জন, লতিফ হলে ২৬ জন, জোহা হলে ২৫ জন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৪০ জন, মাদার বখশ হলে ৩১ জন, শহীদ হবিবুর রহমান হলে ৩৭ জন ও জিয়াউর রহমান হলে ২৮ জন।
সৈয়দ আমীর আলী হলের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন বলেন, সম্মেলন উপলক্ষ্যে সবধরনের প্রস্তুতি চলছে। আসন্ন সম্মলনে ছাত্রদের অধিকার ও দাবি-দাওয়া তুলে ধরবে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত এমন যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসবে বলে প্রত্যাশা করি।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. নাঈম ইসলাম বলেন, হল সম্মেলনে সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে আশা রাখছি। যারা সংগঠনের জন্য পরিশ্রম, ত্যাগ স্বীকার করেছে তাদেরকে বিশেষভাবে বিবেচনার অনুরোধ রইলো। সেই সঙ্গে যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য বিভিন্ন সময়ে হাল ধরেছে তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এদিকে হলে সিট বাণিজ্যের বিষয়ে কয়েকজন পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছে। তবে অভিযুক্তরা বলছেন এসব বিরোধী পক্ষের কূটচাল। এদিকে বিগত ৫ বছর ধরে রাবি শাখা ছাত্রলীগের একই কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেক নেতা-কর্মীরাও। অনেকের অভিযোগ, হল সম্মেলনের মাধ্যমে শাখা দলটিতে নতুন কমিটি দেওয়ার বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হল সম্মেলনের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, হল সম্মেলনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বর্ধিত সভা সম্পন্ন করা হয়েছে। ১৭টি আবাসিক হলের মধ্যে ৯ টিতে কর্মী সভা করা হয়েছে। বাকি হলগুলো আজ (বৃহস্পতিবার) কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হবে।
হল সম্মেলনে কাদেরকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যারা সব সময় সক্রিয় ছিল, পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়াও যাদের সবচেয়ে বেশি যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে তাদেরকেই আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেবো।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন