১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক শহিদ সুখরঞ্জন সমদ্দার, গণিত বিভাগের শিক্ষক শহিদ হবিবুর রহমান ও মনোবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শহিদ মীর আব্দুল কাইয়ুমকে। তবে দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পার হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হতো না এই তিন শিক্ষকের প্রয়াণ দিবস। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই জানতো না মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মম ইতিহাস। যা নিয়ে ক্ষোভ ছিলো শহীদ শিক্ষকদের পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষকের প্রয়াণ দিবস প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ১৬ মার্চ রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১২ তম সিন্ডিকেট সভায় ৫৭ নং প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম মুক্তিযুদ্ধকালীন রক্তপিপাসু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে জীবন বিসর্জনকারী তিন শিক্ষকের দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।
সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক শহীদ সুখরঞ্জন সমদ্দার, গণিত বিভাগের শিক্ষক শহীদ হবিবুর রহমান ও মনোবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শহিদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের প্রয়াণ দিবস স্ব স্ব বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের নামের স্থাপনাগুলোতে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও স্থাপনাগুলোতে নিয়োজিতদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এ বিষয়ে শহিদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের কন্যা অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা প্রশংসার দাবিদার। আমরা অনেকদিন থেকে চাচ্ছিলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষকদের প্রয়াণ দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হোক। ৫১ বছর পর হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। আমি মনে শহীদদের প্রয়াণ দিবস পালনের মধ্য আমাদের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস জানতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা