ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষিকার সঙ্গে অসদাচরণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জে এম ইলিয়াস জোয়ার্দারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনা খতিয়ে দেখতে সেই সঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনা।
সোমবার (১৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার টইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত। অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে উম্মে সালমা লুনার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা হওয়ায় আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াসকে ফোন দেন তিনি। প্রথম দিনে তার ফোন রিসিভ না করলেও গত শনিবার লুনার বাসার রাউটারটি রিসেটাপ করে দেন ইলিয়াস। পরে লুনা তার রাউটারের পাসওয়ার্ড জানার জন্য ইলিয়াসকে কল দিলে তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন ইলিয়াস। তিনি বলেন, একজন শিক্ষকের কী কারণে ইন্টারনেট লাগে?’ এছাড়া তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে তাকে হুমকিও দেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষিকা লুনা।
এ বিষয়ে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনা বলেন, ‘তিনি আমার সাথে খুবই বাজে ব্যবহার করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। আমি আইন অনুযায়ী তার বিচার চাই।’ তার স্বামী কর্তৃক ইলিয়াসকে হুমকির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘আমার স্বামী বিষয়টি সমাধানের জন্য ইলিয়াসের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তাকে কোনো হুমকি দেননি তিনি।’
তবে অভিযুক্ত ইলিয়াস জোয়ার্দারের দাবি ওই শিক্ষিকার স্বামীর পরিচয়ে বরখাস্তকৃত কর্মচারী ইলিয়াসকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন এবং থানায় জিডি করেছেন। জিডিতে তিনি প্রাণনাশের হুমকি রেকর্ড সংরক্ষিত এবং নিরাপত্তার দাবির কথা উল্লেখ করেছেন।
অভিযুক্ত ইলিয়াস জোয়ার্দার বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ফোন দিয়ে ইলিয়াসকে কয়েক দফায় হুমকি প্রদান করেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ ইলিয়াসের। তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বলানী মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করেন ইলিয়াস। এ বিষয়ে সোমবার নিরাপত্তা চেয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে সেটা মেনে নেবেন বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন ও উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল