পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগ ও চরম কষ্টে পড়েছেন কর্মজীবীসহ সাধারণ মানুষ। নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে সীমাহীন বিপাকে পড়তে হয়েছেন কেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষসহ শত শত শ্রমজীবীরা। কিছু কিছু গাড়ি চলাচল করলেও পথে পথে পরিবহন শ্রমিকরা বাধার সৃষ্টি করে। তাছাড়া দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল একেবারেই বন্ধ রয়েছে। ফলে চাপ পড়েছে রেলপথে। গণপরিবহণের বিকল্প হিসেবে ট্রেনে ভ্রমনের জন্য টিকেট কাউন্টারেও ভিড়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টিকেট শেষ হয়ে যায়। টানা দ্বিতীয় দিনের মোত চট্টগ্রাম নগরীরসহ জেলার প্রতিটি এলাকা প্রায় অচল বললইে চলে। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে সাধারণ যাত্রীরা অপেক্ষা আর দুভোর্গেই দেখা গেছে।
অন্যদিকে রবিবার ভোর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে গণপরিবহন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ।
জানা গেছে, তেল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও গণপরিবহন না থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছেন কর্মজীবীদের।
শনিবার চট্টগ্রাম শহর থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। যারা ঘর থেকে বেরিয়েছেন, তাদের পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। সিএনজি অটোরিকশায় যারা উঠছেন, তাদেরকে পড়তে হয়েছে শ্রমিকদের তোপের মুখে। অনেক জায়গায় আটকে দেয়া হয় তাদের। নগরীর টাইগারপাস মোড়ে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এসময় বিভিন্ন ব্যক্তিগত পরিবহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ট্রাফিক পুলিশ গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
আরো জানা গেছে, নগরীর অলংকার ও এ কে খান মোড়, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, নতুন ব্রিজ এলাকায় বাসের সব কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। কাউন্টারের সামনে ও রাস্তায় যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। মুরাদপুর, জিইসি মোড় ও টাইগারপাস এলাকায় দুয়েকটি বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। এই বাসগুলোতে ছিল যাত্রীদের ভিড়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউমার্কেটগামী বাসও চলাচল করতে দেখা গেছে।
কামাল নামের একজন যাত্রী বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ট্রেন ষ্টেশনে গেলে যাত্রীদের ভীর অনেক। দীর্ঘ লাইনে থেকেও আজ শনিবারের টিকেট পাওয়া যায়নি। ফলে টিকেট না পাওয়ার আশংকায় পরের দিনের জন্য টিকেট দিতে হয়েছে। তবে আসার পথে চরম কষ্টে পেতে হয়েছে। রিক্সায় উঠতে চাইলেও চরম অপমান করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। পথে পথে সাধারণ মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। এতে রিক্সা ভাড়াও নিচ্ছে বেশী।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মুছা বলেন, ডিজেলের দাম কমানো হচ্ছে আমাদের দাবি। ভাড়ার জন্য শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে। যার দায় সরকার বা মালিকপক্ষ কেউ নিবে না। তাই ডিজেলের দামে ভর্তুকি দেওয়া হোক।
সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মনজুর আলম মঞ্জু বলেন, আমরাও চাই না পরিবহনের ভাড়া বাড়ুক। সরকার তেল, ডিজেলের দামে ভর্তুকি দিলে সকলেরই উপকার হবে। এই পণ্যটির দামের ওপর সব পণ্যের দাম নির্ভর করে। রবিবার সরকারের সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সভা হবে। ওই সভার সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম