রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) ৩ বছরের মাথায় গত সপ্তাহে বদলি হয়ে এসেছেন সমালোচিত ঠিকাদার মিঠুর ভাতিজি উম্মে সুলতানা নওশীন। নওশীন রমেকে নিজ বেতনে হিসাবরক্ষক পদে ফিরে আসায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে কলেজের কর্মচারীরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তার অপসারণের দাবিতে বুধবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে কর্মচারীরা।
মেডিকেল কলেজের কর্মচারীদের বিক্ষোভ মিছিলের সঙ্গে যোগ দেন এলাকাবাসীর ব্যানারে কয়েকটি মিছিল। পরে সবাই এক হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মেডিকেল কলেজের ভিতরে প্রবেশ করতে চেষ্টা করলে পুলিশ গেট বন্ধ করে দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা কলেজ গেটের সামনেই বিক্ষোভ করে। তারা নওশীনের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন বিক্ষোভকারীরা।
২০২০ সালে বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রচার হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিসাবরক্ষক উম্মে সুলতানা নওশীনকে লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালে বদলি করা হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের স্টেনো-কাম-পিএ হিসেবে চাকরি করলেও নওশীনকে হিসাবরক্ষক পদে পদায়ন করা হয় সেই সময়। জানা গেছে, সে সময় রংপুর মেডিকেলের যে কোনো নিয়োগ ও কেনাকাটা ঠিকাদার মিঠু ও তার ভাতিজি নওশীনের সিন্ডিকেটের ইচ্ছায় পরিচালিত হতো। মিঠু ও নওশীনের সিন্ডিকেট সরকারের শীর্ষ মহলে আলোচনায় এলে দেশ ছাড়েন মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। ভাতিজি উম্মে সুলতানা নওশীন সমালোচিত হলে তাকে লালমনিরহাটে বদলি করা হলেও তিনি বদলির ৪ মাস পরে লালমনিরহাটে যোগদান করেন।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুর রহমান জানান, স্বাস্থ্যখাতে দেশের আলোচিত দুর্নীতিবাজ হিসেবে তিনি পরিচিত। তাই তাকে রংপুর থেকে বদলি করা হয়েছে। তিনি আবারো রংপুর মেডিকেল কলেজে বদলি হয়ে এসেছেন। এ কারণে কর্মচারী ও এলাকাবাসী তার অপসারণের দাবি জানিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
এদিকে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকলেও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই গণমাধ্যমে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. বিমল কুমার রায় জানান, আন্দোলনকারীরা আমার কাছে এসেছিল। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে উম্মে সুলতানা নওশীনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত