শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ থাকা বেশির ভাগ কারখানা খুলে দেওয়ায় স্বতি ফিরেছে আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে। গতকাল সকালে যথাসময়ে কারখানায় প্রবেশ করে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দেন। এতে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে বেশির ভাগ কারখানা খুললেও গতকাল পর্যন্ত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ১৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। এর মধ্যে পাঁচটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাকি ১৪টি শ্রম আইন-২০০৬-এর ১৩(১) ধারায় বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল সরেজমিনে শিল্পাঞ্চলের বাইপাইল, জামগড়া, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, জিরাবো, কাঠগড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বন্ধ থাকা অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে দেখা যায়।
শিল্পপুলিশ জানায়, আশুলিয়ায় কয়েকটি কারখানায় আর্থিক সংকটের কারণে বেতনসংক্রান্ত জটিলতাসহ নানা সমস্যা থাকায় ১৯টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর বেশির ভাগ তৈরি পোশাক কারখানা। তবে কিছু খাদ্য, চামড়াজাতসহ অন্যান্য পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন কারখানার সামনে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘শ্রমিকদের মাসিক হাজিরা বোনাস, টিফিন ও রাত্রিকালীন ভাতা বৃদ্ধি; নিম্নতম মজুরিসহ ১৮টি দাবি বাস্তবায়নে মালিকপক্ষের সম্মতির পর শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে দাবিগুলো মানা বা বাস্তবায়নের বিষয়টি শ্রমিকরা মালিকপক্ষের কাছ থেকে শুনতে চাইছেন। এখনো যেসব কারখানা বন্ধ রয়েছে সেসবের মালিকপক্ষ, সরকারের প্রতিনিধি ও শ্রমিকপক্ষ মিলে আলোচনা করলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বন্ধ থাকা অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ায় শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। এর পরও বুধবার শ্রম আইন-২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে ১৪টি কারখানা। এ ছাড়া পাঁচটি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। এর মধ্যে চারটি নন আরএমজি কারখানাও রয়েছে। জেনারেশন নেক্সটসহ কয়েকটি কারখানা বকেয়া বেতনসংক্রান্ত জটিলতা এবং আর্থিক সংকটের কারণে বন্ধ রেখেছেন কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে আশুলিয়ার নরসিংহপুর অনন্ত গার্মেন্টস লিমিটেডের ১২১ এবং গোমাইল এলাকার শিনশিন অ্যাপারেলসের ৬৭ শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে।