পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ধরধরা এলাকায় সাম্প্রতিক গড়ে ওঠা রুপনগর নামের একটি পিকনিক স্পট থেকে চারটি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিলুপ্তপ্রায় শকুন রয়েছে একটি। ওই প্রাণীগুলোকে বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে এনে পিকনিক স্পটে রাখা হয়েছিল।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধায় বন্যপ্রাণী ইন্সপেক্টর অসিম মল্লিক পিকনিক স্পটটি থেকে দুইটি বানর, একটি গন্ধগকুল এবং বিলুপ্তপ্রায় একটি হিমালয়ান শকুন উদ্ধার করেন। পিকনিক স্পটটির সভাপতি হরিস চন্দ্র দেব জানান, দু'বছর আগে পাশের এলাকা থেকে কয়েকজন লোক ৫শ' টাকার বিনিময়ে শকুনটি দিয়ে যায়। এরপর বানরও কেনা হয়েছে। সর্বশেষ গত ছয়মাস আগে আটোয়ারী এলাকার এক লোক গন্ধগকুলটি এখানে বিক্রি করে যান। বন্য প্রাণী সংরক্ষণের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
প্রথমে পিকনিক স্পটটির কর্তৃপক্ষ প্রাণীগুলোকে বন্যপ্রাণী অধিদপ্তরের হাতে তুলে দিতে রাজি ছিলেন না। তারা এলাকার বিশিষ্টজন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হন। এলাকাবাসীও জড়ো হয়। পিকনিক স্পট কর্তৃপক্ষ জানান, এর আগে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা এই পিকনিক স্পটটি ঘুরে বন্যপ্রাণীদের দেখে গেছেন। বন্যপ্রাণী আটক রাখা একটি অপরাধ এমন কোন আইনের কথা তারা জানেন না। কেউ বলেননি।
এ সময় ইন্সপেক্টর অসিম মল্লিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ৩৭ (ক) ধারাটি তাদেরকে পড়ে শোনান। উপস্থিত এলাকাবাসী বুঝতে পেরে বন্যপ্রাণীগুলোকে অধিদপ্তরের হাতে তুলে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান। এরপর রুপনগর পিকনিক স্পট কর্তৃপক্ষ বন্য প্রাণীগুলোকে হস্তান্তরে সম্মত হন। ওইদিন রাতেই দুটি বানর ও গন্ধগকুলটিকে প্রকৃতিতে উম্মুক্ত করা হয়।
অসিম মল্লিক জানান, শকুনটিকে চিকিৎসা দিয়ে প্রকৃতিতে উম্মুক্ত করা হবে।
এলাকার কিসমত বাহাদুর নারায়নি সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হবিবর রহমান বলেন, সচেতনতার অভাবে নানাভাবে বণ্যপ্রাণী ধ্বংস করা হচ্ছে। এলাকার মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করা জরুরী।
ধরধরা এলাকার আটত্রিশজন মিলে সমিতির মাধ্যমে গত দু'বছর আগে রুপনগর পিকনিক স্পটটি গড়ে তোলেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ লোক পিকনিক স্পটটিতে ঘুরতে আসেন।
বিডি-প্রতিদিন/৪ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ