রংপুর সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে নিখোঁজ দুই কিশোরী ৯ দিনেও উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ। শনিবার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। রক্ষকের পরিবর্তে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই কিশোরীও সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছিল। পরে পুলিশ ও সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তারা আদালতের মাধ্যমে তাদের আবারও সেই কেন্দ্রে পাঠায়। এতে দুই কিশোরীর জীবনের ঝুঁকি বেড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবারের সদস্যরা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, রংপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অনিল চন্দ্র বর্ম্মন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার 'উচ্চ পৃষ্ঠপোষকতা' রয়েছে দাবি করে বক্তারা বলেন, অতীতে প্রমাণিত অনিয়মের ঘটনায় কর্মকর্তাদের বদলি করা হলেও শিশু নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধের দায়ীদের বদলিতে নয়, আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট মোকছেদ বাহলুল, অ্যাডভোকেট মাহে আলম, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ শমসে আরা বিলকিস, এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ানুল বারী রিজু প্রমুখ।
এদিকে, রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, নিখোঁজ হওয়া চার কিশোরীর মধ্যে দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের উদ্ধারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
রংপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অনিল চন্দ্র বর্ম্মনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, নগরীর দেওডোবা ডাংগীরপাড় এলাকার রংপুর সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে গত ১২ জুন রাত থেকে নিতু, স্মৃতি, কৃতি ও আশা নামে চার কিশোরী নিখোঁজ হয়। ১৫ জুন পরিবারের সদস্যরা স্মৃতি ও কৃতিকে নগরীর চিড়িয়াখানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাদের পুনরায় পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠায়। তবে পরিবারের সদস্যরা এতে আপত্তি জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, সেখানে তাদের মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। এখনও নিখোঁজ রয়েছে নিতু ও আশা।
বিডি প্রতিদিন/আশিক