যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জন্য একক বড় বাজার। মার্কিন পাল্টা শুল্কে এ বাজারে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে পাল্টা শুল্ক আরোপে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় রপ্তানিতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের শুল্ক প্রতিযোগী দেশের তুলনায় কম হওয়ায় তৈরি পোশাকের খোঁজখবর নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তারা। চীন ও ভারতের হারানো তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশের একটা অংশ আসছে বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সাত মাসে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৪৯৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে রপ্তানি হয়েছে ৭০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এ সাত মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি।
অটেক্সার তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৫ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ পোশাক রপ্তানি হয়েছে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭ হাজার ৩৪২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলারের। পোশাক রপ্তানিকারকরা জানান, চীন ও ভারতের হারানো ক্রয়াদেশের একটা অংশ বাংলাদেশে আসছে। পাল্টা শুল্কের কারণে সামনের মৌসুম থেকে আরও বাড়তি ক্রয়াদেশ আসতে পারে। ছয় থেকে আট মাস ধরে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের শুল্ক ২০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের প্রতিযোগিতার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া রপ্তানি করা তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যে ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল থাকলে ওই পাল্টা শুল্ক কমবে। পাল্টা শুল্ক কমার আলোচনা এখনো চলছে। ভবিষ্যতে মিয়ানমার, ভিয়েতনাম থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। ভারত-চীনের অর্ডার বাংলাদেশে আসছে। আশা করা যায় রপ্তানি বাড়বে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোপুরি অর্ডার বাড়ার সম্ভাবনা কম। তারা আপাতত কম কিনবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের বাড়ার কথা।