চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানাধীন এক্সেস রোড বগার বিল এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মো. সাজ্জাদ (২৫) নামে ছাত্রদলের এক কর্মী খুন হয়েছেন। গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সাজ্জাদ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন হীরাকান্দা এলাকার মো. আলমের ছেলে। বসবাস করতেন নগরের বাকলিয়া থানার তক্তারপুল এলাকার বিসমিল্লাহ টাওয়ারে। তিনি বাকলিয়া থানা ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। নিহত সাজ্জাদ নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) এমদাদুল হক বাদশার অনুসারী ছিলেন।
গতকাল সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র (চসিক) ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনি বলেন, এই এলাকায় উচ্ছৃঙ্খল কিছু যুবকের বিষয়ে দশ দিন আগে আমি সিএমপি কমিশনার ও বাকলিয়া থানার ওসিকে অবহিত করেছি, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতেও বলেছি। কিন্তু তারা আইন প্রয়োগ করেন নাই। দশ দিন না যেতেই এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, বাকলিয়া এলাকার ‘যুবদল নেতা’ বোরহান সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি ব্যানার টাঙান সৈয়দ শাহ রোডে। রাতে অপর গ্রুপের নেতা-কর্মীরা গিয়ে সেটি নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এ সময় বোরহান ও তার লোকজন মিলে তাদের বাধা দেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে একটি পক্ষের কর্মীরা ব্যানারটি ছিঁড়ে ফেলেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি ও গোলাগুলি শুরু হয়। এতে সাজ্জাদসহ ৮ থেকে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহতদের চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক সাজ্জাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত আটজনকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন জুয়েল, সাব্বির, শরীফ, ইয়াসিন, একরাম, পারভেজ ও মারুফ। তাদের বাসা বাকলিয়ার বউবাজার এলাকায়।
নিহত সাজ্জাদের বাবা মো. আলম বলেন, কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে জানি না। আমার ছেলেকে বন্ধুরা ফোন করে ডেকে নিয়ে গেছে। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
নিহত সাজ্জাদের ভাই ইমরান বলেন, আমার ভাই বাসায় ছিল। একজন তাকে কল করে ডেকে নিয়ে যায়। সাজ্জাদ বাসা থেকে বের হওয়ার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সৈয়দ শাহ রোডের মুখ থেকে একেবারে শান্তিনগরের মুখ পর্যন্ত ব্লক করে তারপর গোলাগুলি করা হয়। রাত ২টার দিকে শুনতে পাই, আমার ভাই মেডিকেলে মারা গেছে।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত বলে জেনিছি। গুলিতে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত আছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে এখনো কেউ মামলা করেনি।