ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় একদিনে গাজা সিটিতে অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছে। একই দিনে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও প্রায় ছয় হাজার মানুষ। ধ্বংস হয়েছে জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রসহ বহু ভবন। নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে চরম দুর্দশায় পড়েছেন স্থানীয়রা।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবারের হামলায় শুধু গাজা সিটিতেই নিহতের সংখ্যা ৪৯-এ পৌঁছালেও পুরো গাজা উপত্যকাজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৬২ জন ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানায়, তীব্র বোমাবর্ষণের ফলে শহরের হাজারো মানুষ গৃহহারা হয়ে পড়েছেন।
সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, “অবরোধ ও অবিরাম হামলার কারণে গাজা সিটির মানুষের জীবন এখন অমানবিক হয়ে উঠেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিকভাবে বোমা বর্ষণ করে শহর দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। দখলদার সেনারা লিফলেট ফেলে স্থানীয়দের প্রাণভয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদের ভাষ্যমতে, প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর আবাসিক ভবন ও জনসেবামূলক স্থাপনায় বোমা ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “হামলার ধরন ও গতি দেখে মনে হচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আশ্রিত বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করছে।”
গাজার পশ্চিমাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের জটলা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণের আল-মাওয়াসি ক্যাম্প ও দেইর আল-বালাহ এলাকায় ভিড় বেড়ে যাওয়ায় সেখানেও মানুষ নিরাপদ আশ্রয় পাচ্ছেন না।
আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়ার মতে, “মানুষ পূর্ব থেকে পশ্চিমে সরে আসছে, কিন্তু দক্ষিণে জায়গা না থাকায় অনেকে আবার গাজা সিটিতে ফিরে আসছে।”
বর্তমানে প্রায় নয় লাখ মানুষ গাজা সিটিতে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেছে, ইতোমধ্যে শহর থেকে আড়াই লাখের বেশি মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। সূত্র: আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/একেএ