নেপালের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির স্বামী রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে গিয়ে রয়েল নেপাল বিমান ছিনতাই করেছিলেন। ওই বিমানের অন্যতম যাত্রী ছিলেন বলিউড স্টার মালা সিনহা। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীপক মালিক এমন লোমহর্ষক কাহিনির কথা জানিয়েছেন। অধ্যাপক মালিক গান্ধী ইনস্টিটিউট স্টাডিজের অধিকর্তাও ছিলেন।
তার বিবরণ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী সুশীলার স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তিনিই হলেন নেপালের প্রথম বিমান ছিনতাইকারী। তিনি ১৯৭৩ সালে আরী দুজন সঙ্গীকে নিয়ে রয়েল নেপাল এয়ারলাইনস ডি হাভিলান্ড ডি এইচ সি-৬ বিমান ছিনতাই করেন। উল্লেখযোগ্য যে, দুর্গা প্রসাদ বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নেপালের রাজা মহেন্দ্রর পঞ্চায়েত রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনে তার সঙ্গে দুই ছিনতাইকারী নগেন্দ্র ধুঙ্গেল এবং বসন্ত ভাত্তরাইও ছিলেন। বিমান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্য ছিল, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। কারণ যে বিমান ছিনতাই করা হয়েছিল, তাতে রাখা ছিল নেপালি ব্যাংকের টাকা। এই ছিনতাই পরিকল্পনার সঙ্গে আরও যুক্ত ছিলেন গিরিজা প্রসাদ কৈরালা ও সুশীল কৈরালা, যারা পরে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। বিমানটি ছিনতাই করে নেপালের বিরাট নগরের কাছে বিহারের ফরবেশগঞ্জে নামাতে বাধ্য করা হয়। এরপর টাকার ব্যাগ নিয়ে দুর্গা প্রসাদসহ তিনজন জঙ্গলে লুকিয়ে পড়েন। দুর্গা প্রসাদ অনেকদিন বেনারসেই লুকিয়ে থাকেন। তবে ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারির পর যখন ধরপাকড় চলছিল তখন তিনি গ্রেপ্তার হন। তাকে অন্য দুজনের সঙ্গে জেলে থাকতে হয়েছিল। ভারত সরকার তাকে নেপাল সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিল। ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পর তাকেসহ অন্য দুজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।