বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গেয়ে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছেন ভারতের আসাম রাজ্যের সিনিয়র কংগ্রেস নেতা বিধুভূষণ দাস। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত সোমবার রাজ্যের শ্রীভূমি জেলার ইন্দিরা ভবনে কংগ্রেস সেবা দলের বৈঠকের সময় ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গান তিনি।
১৯০৫ সালে প্রথম বঙ্গভঙ্গের সময় ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সোমবার সেই গানটি দিয়ে আসামের বরাক উপত্যকার অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি নেতা বিধুভূষণ দাস নিজের ভাষণ শুরু করেন বলে অভিযোগ। পরদিন মঙ্গলবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরপরই তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে জোর চর্চা চলছে। এদিকে বিধুভূষণ দাসের পার্শ্ববর্তী একটি দেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার ঘটনায় কংগ্রেসকে ‘বাংলাদেশ প্রেমী’ বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী অশোক সিংহল বলেছেন, ‘শ্রীভূমিতে কংগ্রেসের বৈঠকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়েছে। অথচ সেই রাষ্ট্রটিই উত্তর-পূর্ব ভারতকে মূল ভারতের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা এখন স্পষ্ট যে, কংগ্রেস কেন কয়েক দশক ধরে আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল এবং উৎসাহিত করেছিল। ভোট-ব্যাংকের রাজনীতির জন্য রাজ্যের জনসংখ্যার পরিবর্তন করে ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ তৈরি করাই এর লক্ষ্য।’
অন্যদিকে কংগ্রেস এই বিতর্ককে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে। করিমগঞ্জ (শ্রীভূমি) জেলা কংগ্রেস কমিটির মিডিয়া বিভাগের সভাপতি শাহাদাত আহমাদ চৌধুরী বলেন, ‘বিধুভূষণ দাস বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাননি, রবীন্দ্রসংগীত গেয়েছেন। নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’। ভাষণ শুরু করার আগে দাস বলেছিলেন যে, তিনি রবীন্দ্রসংগীত দিয়ে শুরু করবেন। তিনি একজন শ্রদ্ধেয় নেতা, তিনি প্রতি স্বাধীনতা দিবসে ইন্দিরা ভবনে ভারতীয় ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে করা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ আর আসামের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, ‘আমি ভিডিওটা দেখব। যদি মনে হয় তিনি অন্যায় করেছেন তাহলে পুলিশকে মামলা করতে বলব।’