পাবনা জেলার তিনটি সরকারি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে একটি কোচিং সেন্টারের প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় অভিভাবকরা শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও পরে শহরের আব্দুল হামিদ রোডে মানববন্ধন করে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে।
বিক্ষোভকারী অভিভাবকরাকে জানান, পাবনা শহরের জুবলী ট্যাংক এলাকায় অবস্থিত ফেয়ার কোচিং সেন্টারে ১৫ দিন আগে শিক্ষার্থীদের একটি মডেল টেষ্ট পরীক্ষা নেওয়া হয়। পাবনা জেলা স্কুল, সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কৃষ্ণপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত বুধবার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় সরবরাহকৃত প্রশ্নপত্রের সাথে ওই কোচিং সেন্টারের প্রশ্নের হুবহু মিল রয়েছে। এ ঘটনায় অভিভাবক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ও তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পুন:পরীক্ষার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ভর্তি কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো বলেন, পরীক্ষার আগের দিন রাতে প্রশ্ন তৈরি করে আমার দায়িত্বে রাখা ছিল। প্রশ্ন ফাঁসের সম্ভাবনা তিনি নাকোচ করে দিয়ে বলেন, দুই একটি প্রশ্নের মিল হতে পারে। এরপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
এ ব্যাপারে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কেন্দ্র সচিব ও পাবনা জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত কুমার দেব বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে তার বা অন্যান্য বিদ্যালয়ের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তারা পরীক্ষা গ্রহণ ও খাতা মূল্যায়ন করেন মাত্র।
এ ব্যাপারে অভিভাবক বাবন সাহা জানান, এটা রীতিমতো শিশুদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
এ প্রসঙ্গে অপর অভিভাবক মুরাদ পারভেজ জানান, আমার সন্তানকে গত এক বছর ধরে ভাল শিক্ষকের নিকট অনেক টাকা খরচ করে বাড়িতে পড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন মডেল টেষ্ট পরীক্ষায় মেধা তালিকায় অবস্থান করলেও ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পায়নি। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। শিশুদের মেধা যাচাইয়ে এ ধরনের দুর্নীতির বিচার হওয়া উচিত।
অপর অভিভাবক শহরের রাধানগর মহল্লার নাজমা নাহার বলেন, আমার সন্তানকে সরকারী স্কুলে পড়ানোর জন্যে গত এক বছর ধরে অনেক কষ্ট করেছি। কিন্তু এই অনিয়মের কারণে আমার ছেলে ভর্তি হতে পারেনি। এখন বুঝতে পারলাম কেন ছেলেকে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেল না।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ